নিজের বাড়ির জন্য প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎটুকু সংগ্রহ করে নিতে পারেন বাড়ির ছাদ থেকেই। ছাদের মধ্যে একটা সোলার প্যানেল বসালেই অনেকটা বিদ্যুতের জোগান পাবেন সেখান থেকে। আর বাকি বিদ্যুতের জোগান দিতে বায়ুবিদ্যুৎ বা অন্যান্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তিউৎস তো আছেই। জীবাশ্ম জ্বালানিকে না বলার মতো প্রযুক্তি কিন্তু আমাদের কাছে ইতিমধ্যেই আছে। শুধু প্রয়োজন একটু সচেতনতা আর উদ্যোগ। ব্যক্তিগত উদ্যোগ যেমন দরকার, তেমনই এগিয়ে আসতে হবে সরকারকেও। অবশ্য আজ পরিবেশের সংকট রীতিমতো বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছে গেলেও তেমন উদ্যোগ সেভাবে নজরে আসছে কই?
আরও পড়ুন
আবর্জনা থেকেই তৈরি হবে বিদ্যুৎ, আফ্রিকায় প্রথম
এর মধ্যেই আশার আলো দেখাচ্ছে ভার্জিনিয়া। সম্প্রতি সেদেশে পাশ হয়েছে একটি আইন। আইনের নাম 'ভার্জিনিয়া ক্লিন ইকোনমি অ্যাক্ট'। আর এই আইনে স্পষ্ট উল্লেখ করা হয়েছে, আগামী ৩০ বছরের মধ্যে জীবাশ্ম জ্বালানি থেকে শক্তি উৎপাদন সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা হবে। এই সিদ্ধান্তে সমস্যায় পড়েছে ডমিনিয়ন এনার্জি এবং আমেরিকান ইলেকট্রিক পাওয়ারের মতো বড় কোম্পানিগুলি। ভার্জিনিয়ার অর্থনীতিতেও টান পড়ার সমূহ সম্ভবনা উপস্থিত। কিন্তু পরিবেশে পরিত্যক্ত কার্বনের পরিমাণ যে হারে বাড়ছে, তাতে এই সিদ্ধান্ত এবার নিতেই হত।
আরও পড়ুন
মাছের আঁশ থেকেই তৈরি হবে বিদ্যুৎ, চলবে জেনারেটর – তাক লাগানো আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের
শুধু কার্বন নিঃসরণে রাশ টানাই নয়, এই উদ্যোগ দেশের অর্থনীতিতেও একটা দীর্ঘস্থায়ী ছাপ ফেলতে চলেছে। পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির ব্যবহারের ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচও অনেকটাই কমবে। বিশেষ করে সৌরশক্তি যখন একটা বড় পরিমাণের শক্তির উৎস হয়ে দাঁড়াতে চলেছে। ফলে গেরস্থালির বিদ্যুৎ খাতে খরচ ৬ শতাংশ পর্যন্ত কমবে বলেই মনে করছেন ভার্জিনিয়ার সরকার। যদিও আমেরিকান ইউনিয়নের অন্যতম ধনী রাষ্ট্র ভার্জিনিয়া, কিন্তু সেখানেও মধ্যবিত্ত মানুষের সংখ্যা নেহাৎ কম নয়। তাই এক্ষেত্রে সরকারের অর্থনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিও যথেষ্ট প্রশংসা পাচ্ছে।
আরও পড়ুন
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধের ফলে কমেছে মৃত্যু, বেড়েছে ফসলের উৎপাদনও
তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই পরিবেশের প্রশ্ন। বাতাসে পরিত্যক্ত কার্বনের পরিমাণ এতটাই বেড়ে গিয়েছে, যে তার সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারছে না বনভূমিও। কিছুদিন আগেই শোনা যাচ্ছিল, দেশের ক্রান্তীয় ও নিরক্ষীয় বনাঞ্চলগুলি অক্সিজেনের বদলে কার্বনের উৎসে পরিণত হতে পারে। এমন সময় কার্বন নিঃসরনের পরিমাণ কমাতে উদ্যোগ নিচ্ছেন অনেকেই। ছোটো ছোটো প্রয়াসগুলোর পাশে এসে দাঁড়িয়েছে অনেক বড়ো কম্পানিও। তবে একটা গোটা দেশজুড়ে এমন পরিকল্পনা নিশ্চই আলোচনার দাবি রাখে। সেইসঙ্গে এই প্রশ্নও থেকে যায়, পৃথিবীর বাকি দেশগুলোই বা এমন উদ্যোগ নিচ্ছে না কেন?