যেকোনো গবেষণার উদ্দেশ্যই হল, বৈজ্ঞানিক এবং তাত্ত্বিক পদ্ধতিতে অজানার অনুসন্ধান করা। অনেকটা যেন পাজলের সমাধান খোঁজার মতোই। তবে কাজটা ঠিক কতটা কঠিন তা আলাদা করে বলার অপেক্ষা থাকে না। পাশাপাশি কোনো বিষয়ে অনুসন্ধান করার সময়, ওই একই বিষয়ে পূর্ববর্তী ও সাম্প্রতিক গবেষণার সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল থাকতে হয় গবেষকদের। তাতে অধ্যায়নে যেমন সুবিধাও হয়, তেমনই হ্রাস পায় দীর্ঘ কাজ পণ্ডশ্রম হওয়ার আশঙ্কাও। কিন্তু বিশ্বের কোন প্রান্তে, কবে সংশ্লিষ্ট বিষয়টি নিয়ে কাজ হয়েছে— তা খুঁজে বার করাও বেশ শ্রমসাধ্য প্রক্রিয়া। এবার প্রতিবন্ধকতারই অভিনব সমাধান দিলেন মার্কিন প্রযুক্তিবিদ কার্ল মালামুদ (Carl Malamud)।
একক উদ্যোগেই কার্ল গড়ে তুলেছেন গবেষণাপত্রের একটি প্রকাণ্ড ডিজিটাল ডিরেক্টরি। যেখানে জায়গা পেয়েছে বিশ্বের প্রায় ১০.৭ কোটিরও বেশি গবেষণাপত্র। গবেষণাপত্রের নাম, প্রকাশের তারিখ এবং কোন বিষয়ের ওপর গবেষণাটি করা হয়েছে— তা সহজেই খুঁজে পাওয়া যাবে এই ডিজিটাল ক্যাটলগের মাধ্যমে। উল্লেখ্য, এই ডিজিটাল ডিরেক্টরি ব্যবহার করা যাবে বিনামূল্যেই। গত ৭ অক্টোবর এই ক্যাটালগ প্রকাশিত হলেও, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে গেছে বিতর্ক। এমনকি কার্লের বিরুদ্ধে আইনি মামলাও করেছে বেশ কয়েকটি রিসার্চ জার্নাল।
সাধারণত, বিশ্বের প্রথম সারির জার্নালগুলিতে কোনো গবেষণাপত্র পড়তে গেলে তা কিনতে হয় মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে। আর সেখানেই সংশ্লিষ্ট জার্নালগুলির সঙ্গে বিরোধ কার্লের। যদিও কার্লের তৈরি করা ডিজিটাল ডিরেক্টরিতে কোনো গবেষণারই বিস্তারিত বিবরণ নেই। সর্বোচ্চ পাঁচটি শব্দ ব্যবহারে কেবলমাত্র উল্লেখিত হয়েছে সংশ্লিষ্ট গবেষণার বিষয়। সঙ্গে রাখা হয়েছে প্রকাশকের নাম। পাঠকরা কোনো গবেষণাপত্রে আগ্রহী হলে, উল্লেখিত প্রকাশক সংস্থার সাইটে গিয়ে অর্থের বিনিময়েই পড়ে দেখতে পারেন নিবন্ধটি। ফলে, এতে কপিরাইটের আইন লঙ্ঘন করা হচ্ছে না বলেই দাবি কার্লের।
আরও পড়ুন
রেলের শতবর্ষ-প্রাচীন টাইমটেবিল এবার ডিজিটাল আর্কাইভে
এর আগে অলাভজনক ইন্টারনেট ব্রাউজার সংস্থা মোজিলা ফাউন্ডেশনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কার্ল। সেখানেও একইরকম আইনি বিতর্কে জড়িয়েছিলেন তিনি। তবে এক্ষেত্রে বিজ্ঞানের স্বার্থে, বিজ্ঞানীদের টেক্সট মাইনিং-এ সাহায্য করাই ছিল তাঁর মূল উদ্দেশ্য। ইদিমধ্যেই কার্লের এই ডিজিটাল ডিরেক্টরি প্রকাশ্যে এলেও, সম্পূর্ণ প্রকাশ আইনি বৈধতা পায়নি। যার কারণে ডিজিটাল এই সূচকের কোনো সার্চ ইঞ্জিনও তৈরি করা সম্ভব হয়নি। তবে আইনি অধিকার পেলেই শুরু হবে সেই কাজ। উল্লেখ্য, এই ওয়েবসাইটের সার্ভার তৈরি হবে ভারতেই। সবমিলিয়ে এই ডিরেক্টরির সংকুচিত আয়তন ৫ টেরাবাইট হওয়ায়, সেই প্রক্রিয়া বেশ লম্বা হবে বলেই জানাচ্ছেন কার্ল। ফলে, অনলাইন রিসার্চ ক্যাটালগের সম্পূর্ণ সুবিধা পেতে এখনও বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে গবেষকদের…
আরও পড়ুন
হ্যাক হতে পারে ডিজিটাল পেসমেকারও! আশঙ্কায় চিকিৎসক থেকে ইঞ্জিনিয়াররা
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
কোভিড-মোকাবিলায় ডিজিটাল তথ্যভাণ্ডার, যোগাযোগ বুনছে বাংলার তরুণ প্রজন্ম