বাড়ি বানাতে আর ইটের প্রয়োজন নেই। বরং প্লাস্টিক (Plastic) দিয়েই তৈরি হবে আস্ত বাড়ি। এমনই একটি স্টার্ট-আপ উদ্যোগ শুরু হয়েছে আমেরিকার (USA) লস অ্যাঞ্জেলসে (Los Angeles)। শুনতে আশ্চর্য লাগলেও ইতিমধ্যে সাফল্যও মিলেছে তাতে। তবে প্রশ্ন উঠতে পারে, পরিবেশ বাঁচাতে যখন বারবার প্লাস্টিকের ব্যবহার কমানোর কথা বলা হচ্ছে, সেখানে এরকম উদ্যোগ পরিবেশের জন্য কতটা নিরাপদ? এই উদ্যোগ কিন্তু আসলে প্লাস্টিক দূষণের হাত থেকে পৃথিবীকে বাঁচানোরই একটা চেষ্টা। অন্তত তেমনটাই বলছেন নতুন এই সংস্থা ‘বাই-ফিউশন’-এর কর্তারা। আসলে ফেলে দেওয়া প্লাস্টিক দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে নানা আকারের ব্লক। আর সেইসব ব্লক জুড়ে জুড়ে প্রায় সবকিছুই তৈরি করা যায়।
প্লাস্টিক দূষণ কমানোর জন্য নানা ধরনের উদ্যোগই নেওয়া হচ্ছে সারা পৃথিবীজুড়ে। কোথাও আইন করে প্লাস্টিক ব্যবহার নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। কোথাও আবার বিভিন্ন জৈব ও রাসায়নিক প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারের চেষ্টা চলছে। কিন্তু তাতেও সমস্যার সম্পূর্ণ সমাধান তো হচ্ছেই না, বরং ক্রমশ পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠছে। এবার এই সমস্যাকে মাথায় রেখেই নতুন উদ্যোগ নিল ‘বাই-ফিউশন’। তাঁদের তৈরি এই ব্লকগুলির নাম রাখা হয়েছে ‘বাই-ব্লক’। মোটামুটি যে কোনো ধরনের প্লাস্টিক দিয়েই এই ব্লক তৈরি করা যায়। তার মধ্যে অবশ্য পুনর্ব্যবহারযোগ্য নয় এমন প্লাস্টিকগুলি ব্যবহারের উপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে। প্রবল চাপে সেইসব প্লাস্টিকের টুকরোগুলি জমিয়ে তৈরি হচ্ছে ব্লক। আর তা দিয়ে ছোটো কোনো কাঠামো থেকে আস্ত বাড়ি পর্যন্ত সবই বানানো যায়। ইতিমধ্যে বাড়ি বানিয়ে দেখিয়েও দিয়েছেন তাঁরা।
তবে এই ব্লকগুলি ব্যবহারের একটি প্রধান অসুবিধা হল, এগুলো খুব বেশিক্ষণ সূর্যের তাপ সহ্য করতে পারে না। তবে তা নিয়ে খুব একটা চিন্তার কিছু নেই। এর উপরে একটু রং করলে বা কোনো সূর্যতাপ প্রতিরোধক আস্তরণ দিলেই সমস্যার সমাধান হয়। কিন্তু কিছু সমস্যা থেকেই যায়। কংক্রিটের ব্যাপক ব্যবহার নিয়েই ইতিমধ্যে সরব হয়েছেন বহু পরিবেশকর্মী। কারণ এর ফলে বৃষ্টির জল ভূগর্ভে পৌঁছানোর রাস্তা পাচ্ছে না। ফলে ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে আসছে। আর গাছেরা প্রায় সম্পূর্ণভাবেই ভূগর্ভের জলের উপর নির্ভরশীল। কংক্রিটের বদলে প্লাস্টিকের ব্যবহার শুরু হলে সেই সমস্যা যে আরও বাড়বে। ফলে এই উদ্যোগের সুদূরপ্রসারী প্রভাব নিয়ে এখনও চিন্তা থেকে যায়।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
প্লাস্টিক পুনর্ব্যবহারই দূষণের সমাধান, পথ দেখাচ্ছে জয়পুরের কিশোরী