বাড়িতেই বসানো যাবে উইন্ড টারবাইন! অভিনব আবিষ্কার মার্কিন উদ্ভাবকের

বৌদ্ধ মঠে গেলে দেওয়ালজুড়ে ঝুলতে দেখা যায় অজস্র মণিচক্র। অনেকটা সেরকমই দেখতে একটি প্রাচীর। তবে তার গায়ে মণিচক্র নয়, বরং সার দিয়ে লাগানো রয়েছে বেশ কিছু ঘূর্ণায়মান ধাতবপাত। কিন্তু কী জন্য বসানো হয়েছে এই অদ্ভুত প্রাচীরটি? এর সঙ্গে কী ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক যোগ রয়েছে? না, ব্যাপারটা একেবারেই তেমন নয়। বরং, এই প্রাচীরই শক্তির উৎস। সম্প্রতি, বায়ুশক্তিকে (Wind Energy) কাজে লাগিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদনের এমনই অভিনব ‘ঘরোয়া’ পদ্ধতি আবিষ্কার করলেন মার্কিন উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তা জো ডুসেট (Joe Doucet)।

হ্যাঁ, এই প্রযুক্তিকে ঘরোয়া পদ্ধতি বললেও এতটুকু ভুল হয় না। বায়ুশক্তির প্রসঙ্গ উঠলেই আমাদের চোখের সামনে ভেসে ওঠে প্রকাণ্ড উইন্ড টারবাইনের ছবি। ব্যক্তিগতভাবে এমন টারবাইন ব্যবহার করার সাধ্য বা সুযোগ নেই কোনোটাই নেই মানুষের। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য অপ্রচলিত শক্তির একমাত্র উৎস হিসাবে ধরা যায় সোলার প্যানেলকেই। এবার জো ডুসেটের উদ্যোগে সেই তালিকায় জুড়ল বায়ুশক্তির নামও। প্রকাণ্ড টারবাইনেরই ক্ষুদ্রতম সংস্করণ বানিয়ে তাক লাগালেন নিউ ইয়র্কের উদ্ভাবক। 

‘উইন্ড ওয়াল’-খ্যাত এই শক্তি উৎপাদনকারী প্রাচীরটির উচ্চতা মাত্র ৪ ফুট, দৈর্ঘ্য ২৫ ফুট। এই ক্ষুদ্র পরিসরেই রয়েছে ৬ ইঞ্চি বাই আট ইঞ্চির অজস্র টারবাইন ও ব্লেড। যাদের যৌথ ঘূর্ণনে প্রতিবছর উৎপন্ন হতে পারে ১০ হাজার ইউনিট বিদ্যুৎ। যেখানে ভারতীয় শহরে গড়ে মাসিক বিদ্যুতের খরচ ১৫০-২০০ ইউনিট। ফলে, এই ধরনের একটি ‘উইন্ড ওয়াল’ অনায়াসেই বিদ্যুতের চাহিদা মেটাতে পারে চারটি বাড়ির। পাশাপাশি তা সম্পূর্ণ দূষণমুক্ত শক্তির উৎসও বটে। 

লন্ডন ডিজাইন মিউজিয়াম, সেন্ট-এটিনে বাইয়েনাল ইন্টারন্যাশনাল ডিজাইন-সহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক প্রদর্শনীতে জায়গা করে নিয়েছে জো ডুসেটের এই উদ্ভাবনী। গত ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস থেকেই বেশ কিছু ক্ষেত্রে পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার শুরু হয়েছিল এই বিশেষ যন্ত্রটির প্রোটোটাইপ। তবে সাধারণের জন্য ঠিক কবে থেকে বাজারে উপলব্ধ হবে এই অভিনব জেনারেটর— সে ব্যাপারে এখনও নিশ্চিত করে কিছু জানাননি মার্কিন উদ্ভাবক।

আরও পড়ুন
নিউক্লিয় সংযোজন বিক্রিয়ায় রেকর্ড পরিমাণ শক্তি নিষ্কাশন, খুলল পদার্থবিদ্যার নতুন দিগন্ত

এর আগে প্রযুক্তির দুনিয়ায় উল্লেখযোগ্য অবদান রাখার জন্য ওয়ার্ল্ড ড়েকনোলজি অ্যাওয়ার্ড এবং স্মিথসোনিয়ান কুপার-হেউইট পুরস্কার পেয়েছিলেন ডুসেট। এবার এই আবিষ্কারের জন্য সারফেস ম্যাগাজিনের ‘আভান্ত গার্ডিয়ান’ উপাধি জুড়েছে তাঁর মুকুটে। বলার অপেক্ষা থাকে না এই প্রযুক্তির বাণিজ্যীকরণ শুরু হলে, বদলে যেতে পারে শক্তি-চাহিদার বর্তমান ছবি…

আরও পড়ুন
কয়লার যোগান নেই, তবু অচিরাচরিত শক্তিতে অনাগ্রহী কেন্দ্র!

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
অফুরন্ত শক্তির ভাণ্ডার বায়ুমণ্ডলেই, নাগাল পেতে অভিযান নাসার