২০২০ পৃথিবীর বুকের থেকে ছিনিয়ে নিয়ে গিয়েছে অনেক কিংবদন্তি ব্যক্তিত্বকে। ঠিক তেমনিভাবেই শুক্রবার শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করলেন আমেরিকার প্রখ্যাত রাজনৈতিক চরিত্র জন রবার্ট লুইস। তাঁর হাত ধরেই বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়েছিল হোয়াইট হাউস। আজ আবারও সেই বৈষম্যের বিরুদ্ধে সোচ্চার আমেরিকা। কিন্তু জন লুইস আর নেই। তবে করোনা ভাইরাস নয়, তাঁর শরীরে থাবা বসিয়েছিল ক্যান্সার।
গত ডিসেম্বর মাসে নিয়মমাফিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার মধ্যেই ক্যানসার ধরা পড়ে জনের শরীরে। তবে তখন অনেকটাই দেরি হয়ে গিয়েছে। প্যানক্রিয়াসের ক্যানসার ততদিনে চতুর্থ স্তরে পৌঁছে গিয়েছে। জন লুইস নিজেই সেদিন বলেছিলেন, সারাজীবন নানা বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন তিনি। কিন্তু এমন কঠিন লড়াইয়ের মুখোমুখি হতে হয়নি কোনোদিন।
১৯৪০ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি আলাবামা শহরের এক ভাগচাষী দম্পতির ঘরে জন্ম হয় লুইসের। ছোটো থেকেই দেখেছেন কীভাবে নিগ্রোদের অত্যাচারিত হতে হত। এমনকি সেই অত্যাচারের কবলে প্রাণ হারান লুইসের পিতা এডি মায়ে। সেই থেকেই শুরু এক রাজনৈতিক লড়াইয়ের। এই সময় লুইসকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী এবং মার্টিন লুথার কিং জুনিয়র। জীবনের শেষ পর্যন্ত এই দুজনের প্রভাব ছিল তাঁর উপরে।
১৯৬০এর দশকে যখন উত্তাল আমেরিকার রাজনীতি, তখন অন্তত ৪০ বার গ্রেপ্তার হয়েছেন তিনি। তবে তারপর ক্রমশ বদলেছে আমেরিকার চরিত্র। নিজের জীবদ্দশাতেই লুইস দেখেছেন আমেরিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নিলেন বারাক ওবামা। তবে লড়াই এখনও শেষ হয়ে যায়নি, মনে করতেন জন লুইস। আর তাই দীর্ঘদিন ধরে প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করে গিয়েছেন তিনি। প্রতিনিধি মহলের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি শুক্রবার তাঁর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। তাঁর মৃত্যুতে শোকস্তব্ধ আমেরিকা। সেইসঙ্গে সারা বিশ্বের বৈষম্যবিরোধী মানুষ হারালেন এক সহযোদ্ধাকে।
আরও পড়ুন
বর্ণবিদ্বেষের শিকার প্রবাসী বাঙালি কিশোর, ‘আত্মহত্যা’র পিছনে লুকিয়ে কোন রহস্য?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
‘আই হ্যাভ আ ড্রিম’ – বর্ণবৈষম্য মুছে আমেরিকাকে ‘মানুষ’ করতে চেয়েছিলেন মার্টিন লুথার কিং