অস্ট্রেলিয়ার উত্তরে গ্রেট বেরিয়ার রিফ। ভারত মহাসাগর আর প্রশান্ত মহাসাগরের মধ্যে প্রাচীরের মতো দাঁড়িয়ে থাকা এই উপকূল অঞ্চলে ভ্রমণের জন্য ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ মানুষ। কিন্তু সমুদ্রগর্ভের বাস্তুতন্ত্র নিয়ে হয়তো কেউই চিন্তিত নন। আর তাই পরিস্থিতি ক্রমশ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। সম্প্রতি সম্মিলিত জাতিপুঞ্জের পক্ষ থেকে এই উপকূলকে ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ইন ডেঞ্জার’ তালিকাভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইউনেস্কোর আগামী সম্মেলনেই এই তালিকা পুণর্নবীকরণ করা হবে। তবে জাতিপুঞ্জের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ তুলতেও কসুর করেনি অস্ট্রেলিয়া সরকার।
২০১৫ সাল থেকেই পরিবেশ বিষয়ে ক্রমশ জাতিপুঞ্জের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে চলেছে অস্ট্রেলিয়ার। গ্রেট বেরিয়ার রিফ নিয়ে এই বিতর্কে সেই জায়গাটাই আবারও সামনে উঠে এল। ১৯৮১ সালে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের স্বীকৃতি পায় গ্রেট বেরিয়ার রিফ। সেইসঙ্গে জলজ বাস্তুতন্ত্র রক্ষার বিষয়ে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়ার কথাও স্থির হয়। কিন্তু ২০১৮ সাল পর্যন্ত কোনো কাজই শেষ হয়নি বলে অভিযোগ তুলেছে ইউনেস্কো। শুধু তাই নয়, উপকূল পরিষ্কারের জন্য ব্লিচিং করতে গিয়ে বাস্তুতন্ত্রের আরও বেশি ক্ষতি হয়েছে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৫ সালেই গ্রেট বেরিয়ার রিফকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ ইন ডেঞ্জার তালিকাভুক্ত করার কথা জানিয়েছিল জাতিপুঞ্জ। তবে সে-বছর শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্তের পরিবর্তন করা হয়। এবং বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের বিষয়ে আরও সচেতন হওয়ার কথা ঘোষণা করে অস্ট্রেলিয়া সরকার। তবে এর পরেই আবারও উপকূলজুড়ে ব্লিচিং শুরু হয়। আর এই ৬ বছরে অন্তত ২৩০০ কিলোমিটার উপকূলজুড়ে অস্তিত্ব হারিয়েছে প্রবাল। তবে অস্ট্রেলিয়ার পরিবেশমন্ত্রী সুস্যান লি-র মতে, সারা পৃথিবীতেই রিফ বাস্তুতন্ত্র সংকটে। অন্তত ৮৪টি সমুদ্র উপকূলে বহু প্রাণী নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। সেখানে অস্ট্রেলিয়া সরকারকেই একমাত্র চিহ্নিত করার পিছনে আন্তর্জাতিক রাজনীতির প্রভাব আছে বলেই মনে করছেন তিনি। যদিও সরকারের পক্ষ থেকে জাতিপুঞ্জের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হলেও এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। সত্যিই তালিকায় গ্রেট বেরিয়ার রিফের নাম উঠলে অস্ট্রেলিয়া সরকারের উপরেও অনেকটা চাপ পড়বে বলে মনে করছেন তাঁরা।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
বদলে গেল পৃথিবীর মানচিত্র, সমুদ্র-তালিকায় নতুন সদস্য দক্ষিণ মহাসাগর