জলের গভীরে সার দিয়ে রয়েছে কেল্প। যেন একটা বন তৈরি হয়েছে সেখানে। এরকম দৃশ্য সমুদ্রের অনেক জায়গাতেই দেখা যায়। কিন্তু ক্রমশ বেড়ে চলা দূষণের কারণে এই কেল্পের বন ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন সময় ব্যাতিক্রম হয়ে উঠে এল দক্ষিণ আমেরিকার ঘটনা। যেখানে সমুদ্রের তলায় সামুদ্রিক আগাছার ঘন জঙ্গলে দূষণের সেরকম কোনো প্রভাবই পড়েনি। কয়েক দশক আগে যা ছিল, এখনও ঠিক তা-ই আছে!
আরও পড়ুন
একাই লাগিয়েছেন ৫০০০ গাছ, বাঁকুড়ার গ্রামজুড়ে আজ ‘গাছদাদু’র ছায়া
দক্ষিণ আমেরিকার টিয়েরা ডেল ফুয়েগোর কাছেই অবস্থিত এই কেল্প ফরেস্ট। মাটির ওপরে এর সন্ধান পাবেন না আপনি। ‘জঙ্গল’ দেখতে গেলে জলের নিচে যেতে হবে। নিচ থেকে উঠে আছে কেল্পের সারি। সঙ্গে রয়েছে অন্যান্য সামুদ্রিক আগাছাও। আর রয়েছে বিভিন্ন প্রাণী। স্টারফিস, বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, সরীসৃপ, মাইক্রোবে ভরপুর এই জায়গা। ১৯৭৩ সালে এই জায়গাটির সন্ধান পেয়েছিলেন বিজ্ঞানীরা। সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের অন্যতম সমৃদ্ধ স্থান এটি।
আরও পড়ুন
একটি করে গাছ অথবা অসহায় প্রাণীর দায়িত্ব নিতে হবে, ৪০তম জন্মদিনে প্রজাদের কাছে উপহার চাইলেন রাজা
কিন্তু গত কয়েক বছরে চিন্তায় ছিলেন পরিবেশবিদরা। যত দিন যাচ্ছে, দূষণের মাত্রা সীমা ছাড়িয়েই যাচ্ছে। স্থলভাগে তো বটেই; জলেও সেই ছোঁয়া পড়েছে। পৃথিবীর নানা জায়গায় সমুদ্রের নীচের এরকম কেল্প ফরেস্টগুলি বিপদে পড়েছে। সেই সঙ্গে মানুষের কার্যকলাপ তো আছেই! সেখানে দক্ষিণ আমেরিকার এই জায়গাটিও যদি বিপদে পড়ে! কিন্তু বিজ্ঞানীরা গিয়ে দেখলেন, কোনো পরিবর্তন হয়নি সেখানে। সত্তরের দশকে ঠিক যেরকমটি দেখেছিলেন, সেরকমটিই আছে। এই কেল্প ফরেস্টের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রও নষ্ট হয়নি। দূষণের প্রায় কোনো প্রভাবই পড়েনি।
আরও পড়ুন
লাগিয়েছেন ১ লক্ষেরও বেশি গাছ, পদ্মশ্রী আদিবাসী বৃদ্ধার
কিন্তু কী করে হল এমনটা? সেটাই বর্তমানে খুঁজছেন তাঁরা। তবে প্রাথমিক একটি ধারণা হল, এই জায়গায় মানুষের চলাফেরা কম। সেইজন্য সেই আঘাত এখনও এসে পড়েনি এখানে। এই পরিবেশী যাতে আরও ৫০ বছর টিকে থাকে, সেটারী চেষ্টায় বিজ্ঞানীরা। সবাই মিলে চেষ্টা করলে, পৃথিবীর অন্যত্রও এমন ব্যাপার করা যাবে। তার জন্য আমাদের সবাইকেই এগিয়ে আসতে হবে।