হিমালয়ের পাদদেশে প্রতি বছর অপর্যাপ্ত বৃষ্টি, আর সেই বৃষ্টির জল এসে জায়গা করে নেয় বাংলার ভূগর্ভে। এমনটাই জানি আমরা। কিন্তু বর্ষাকালে যতই বন্যার পরিস্থিতি তৈরি হোক, বাংলার ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণ কমছে ক্রমশ। এমনটাই জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থার রিপোর্ট। গত ১২ বছর ধরে বাংলার ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণের উপর তথ্য সংগ্রহ করে এবার সেই রিপোর্ট পেশ করল আন্তর্জাতিক অলাভজনক সংস্থা সুইচ-অন ফাউন্ডেশন। আর কোনো কোনো জায়গায় জলস্তর ৭ থেকে ২০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত নেমে গিয়েছে বলেই জানাচ্ছে রিপোর্ট।
বিশেষ করে বর্ধমানের পরিস্থিতি রীতিমতো আশঙ্কাজনক বলেই জানাচ্ছে সুইচ-অন ফাউন্ডেশন। ভারতের ধানের ভাণ্ডার নামে পরিচিত বর্ধমান জেলা। জলসেচের জন্য এখানে ভূগর্ভস্থ জলের উপরেই নির্ভর করেন কৃষকরা। তবে আর কতদিন সেই জল পাওয়া যাবে, তাই নিয়েই প্রশ্ন উঠছে। এই ১২ বছরে বর্ধমান জেলার গড় জলস্তর নেমেছে ২০ সেন্টিমিটার। একইভাবে জল কমেছে কলকাতা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকাতেও। আর ভূগর্ভস্থ জলস্তর নেমে যাওয়া মানেই তার মধ্যে আর্সেনিক, অ্যান্টিমনির মতো ভারী ধাতুর প্রাধান্য দেখা যাবে। মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষেও এইসব ধাতু বিশেষভাবে ক্ষতিকর।
মূলত বৃক্ষচ্ছেদনকেই দায়ী করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ হিমালয়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমেনি। আসলে সেই জল মাটির নিচে পৌঁছে যাওয়ার কোনো ব্যবস্থা নেই। তবে কৃত্রিম পদ্ধতিতে ভূগর্ভে জল পাঠানো যায় কিনা, তাই নিয়েও গবেষণা চলছে দীর্ঘদিন ধরে। সেক্ষেত্রেও এখনও কোনো ইতিবাচক উত্তর মেলেনি। বৃক্ষরোপণের থেকে ভালো উদ্যোগ তাই এই সময় আর কিছুই হতে পারে না। শুধুই বাংলা নয়, গাঙ্গেয় উপত্যকা জুড়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চলে গাছ লাগাতে হবে। নাহলে বাংলার কৃষিকাজ তো বটেই, সামগ্রিক মানুষের জীবনযাত্রাই পড়বে চরম অনিশ্চয়তার মুখে...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
মঙ্গলে সংরক্ষিত রয়েছে ৩০-৯৯ শতাংশ জল, জানাল নাসার সাম্প্রতিক গবেষণা