শীতকালে গড় তাপমাত্রা নেমে যায় -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসেরও নিচে। সেইসঙ্গে বায়ুতে অক্সিজেনের পরিমাণও স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ। এমনই প্রতিকূল পরিবেশে মোটরযান চলাচলকারী রাস্তা তৈরি করে নজির গড়েছিল ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনীর বিআরও তথা বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন বিভাগ (BRO)। এবার তাঁদের মুকুটে জুড়ল নয়া পালক। বিশ্বের উচ্চতম রাস্তা হিসাবে এই পথকে স্বীকৃতি জানাল গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস (Guinness Book Of World Records)।
হ্যাঁ, কথা হচ্ছে উমলিংলা গিরিপথ (Umlingla Pass) নিয়েই। লাদাখের চিসুমলে থেকে ডেমচোক টারমাক পর্যন্ত বিস্তৃত রাস্তাটির উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৯ হাজার ২৪ ফুট। হিমালয়ের উত্তর বেসক্যাম্পের উচ্চতা ১৬ হাজার ৯০০ ফুট এবং দক্ষিণ বেসক্যাম্পের উচ্চতা সাড়ে ১৭ হাজার ফুট। সংখ্যাতত্ত্বের দিক থেকে দেখতে গেলে এভারেস্টের দুই বেসক্যাম্পের থেকেও উমলিংলা পাসের উচ্চতা হাজার ফুটের বেশি।
গত জুলাই মাসেই উমলিংলা পাসকে বিশ্বের উচ্চতম মোটরযান চলাচলকারী পথ বলে দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। আবেদন করা হয়েছিল গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের দপ্তরেও। বিগত চার মাস ধরে পাঁচ দফায় পর্যবেক্ষণ ও সমীক্ষার পর শেষ পর্যন্ত ভারতের এই পথকে চূড়ান্ত স্বীকৃতি দিল গিনেস বুক। বিআরও-র মুকুটেও জুড়ল নয়া পালক।
উল্লেখ্য, এতদিন পর্যন্ত বিশ্বের সর্বোচ্চ রাস্তার রেকর্ডের দাবিদার ছিল বলিভিয়া। উতুরুসনু আগ্নেয়গিরির সেই সংযোগ পথের উচ্চতা ছিল ১৮ হাজার ৯৫৩ ফুট। সেই উচ্চতাকেও ছাপিয়ে গেল ভারতের উমলিংলা। পাশাপাশি আবহাওয়া ও ভৌগলিক অবস্থানের দিক থেকে দেখতে গেলেও, বলিভিয়ার এই পথের থেকে উমলিংলা তৈরি কাজ অনেক বেশি চ্যালেঞ্জিং ছিল বলেই অভিমত বিশেষজ্ঞ-মহলের।
আরও পড়ুন
খর্বতম বডিবিল্ডার হিসেবে গিনেসবুকে নাম উঠল ভারতীয়ের
উমলিংলার মাধ্যমে পূর্বলাদাখের চুনার থেকে লেহ পৌঁছাতে সময়ও লাগবে আগের তুলনায় বেশ কয়েক ঘণ্টা কম। ফলে বাড়ছে পর্যটকদের আনাগোনাও। তাতে গোটা অঞ্চলের আর্থ-সামাজিক ছবিটাই বদলে যাবে আগামীদিনে। সেইসঙ্গে সামরিক দিক থেকেও উমলিংলার অবস্থান ভারতকে বাড়তি সুবিধা প্রদান করবে বলে দাবি বিআরও-র। আক্ষরিক অর্থেই দুর্গম হিমালয়ে এই গিরিপথ তৈরি করে এক ঢিলে দুই পাখি মেরে বাজিমাত করেছে ভারতীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী…
আরও পড়ুন
কাঠমিস্ত্রির পেশায় দিন কাটে ভারতের গিনেসজয়ী বাঁশুরিয়ার
Powered by Froala Editor