হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের নাম বাংলা হরফে, ইংল্যান্ডে এই প্রথম

দীর্ঘ ৫ বছর পর আবার নতুন করে চালু হতে চলেছে ইংল্যান্ডের (England) হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশন (Whitechapel Station)। মাটির নিচের এই রেল স্টেশনটি এতদিন পরিচর্যার জন্য বন্ধ ছিল। আর এবার নতুন করে উদ্বোধনের সময় স্টেশনের গেটে নাম লেখা হল পরিষ্কার বাংলা হরফে। ইংল্যান্ডের বুকে একটি স্টেশনের নাম বাংলায়, তার সঙ্গে ছোট হরফে অবশ্য ইংরেজিতেও নাম লেখা হয়েছে। তবে মূল নাম বাংলায় (Bengali)। টাওয়ার অঞ্চলের বাঙালিদের দীর্ঘদিনের দাবি মেনেই এই পরিকল্পনা করা হয়েছে, এমনটাই জানিয়েছে পূর্ব ইংল্যান্ড রেল বিভাগ।

ইংল্যান্ডের স্থায়ী বাসিন্দাদের একটা বড়ো অংশই বাঙালি। আর বাঙালিদের বাসস্থানগুলির মধ্যে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চল এই টাওয়ার হ্যামলেট। মূলত বাংলাদেশ থেকেই মানুষ গিয়ে বসবাস করেন সেখানে। টাওয়ার হ্যামলেটে বসবাসকারী ২৫ হাজার মানুষ এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। হ্যামলেটের ২৭টি গ্যাং-এর ২৬টিই বাংলাদেশের মানুষদের নিয়ে তৈরি। জনসংখ্যার সংখ্যাগরিষ্ঠই বাঙালি হওয়ায় সেখানে বাংলা হরফও চোখে পড়ে সর্বত্র। সেটা কোনো দোকানের নামই হোক, বা মসজিদের ফলক। এলাকায় একটি গির্জার পাশাপাশি রয়েছে দুটি মসজিদ। তবে রেল স্টেশনের নামে বাংলা হরফ এই প্রথম। টাওয়ার অঞ্চলে তো বটেই, ইংল্যান্ডের বুকেও এই প্রথম কোনো স্টেশনের নাম লেখা হল বাংলা হরফে।

গত ১৭ ডিসেম্বর শ্যাডওয়েলের বাসিন্দা আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী একটি চিঠি লেখেন টাওয়ার হ্যামলেটের মেয়রকে উদ্দেশ্য করে। সেই চিঠির প্রতিলিপি পাঠান লন্ডনের মেয়র এবং ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনের অফিসেও। চিঠিতে তিনি দাবি জানান, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির কথা মাথায় রেখে স্টেশনের নাম বাংলা হরফে লিখতে হবে। আর এই চিঠির উত্তরেই ১৭ ফেব্রুয়ারি ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডনের মুখপাত্র জেরি হোয়াইট জানান, তাঁরা বিষয়টি নিয়ে সদর্থক ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন। ভাষা আন্দোলনের মাস ফেব্রুয়ারিতেই মিলেছিল প্রতিশ্রুতি। আর এর মধ্যেই সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবেও পরিণত হল। ইংল্যান্ডের বাঙালিদের সূত্রে এখন হোয়াইটচ্যাপেল স্টেশনের ছবি ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক মাধ্যমে। বাংলা ভাষার ইংল্যান্ড জয়ের ঘটনায় খুশি ইংল্যান্ডের প্রবাসী বাঙালি থেকে শুরু করে ভারত এবং বাংলাদেশের বাঙালিরাও।

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
মুক-বধিরদের জন্য আয়োজিত ডিফলিম্পিক্সে বাংলার অভিষা