স্থানীয় নাগরিকরা পুলিশের কাছে রিপোর্ট করেছেন, লোকালয়ের কাছে হঠাৎ বাঘ দেখা গিয়েছে। এই রিপোর্ট শুনেই অবশ্য পুলিশের একটু সন্দেহ হয়েছিল। তবে লকডাউনের সময় অনেক বন্যপ্রাণীই তো লোকালয়ে ঢুকে পড়ছে। তাই শেষ পর্যন্ত অবিশ্বাস টেকেনি। তবে নরখাদক বাঘের মোকাবিলা করা তো সহজ কাজ নয়। অতএব একদল সশস্ত্র পুলিশ রওনা দিলেন অকুস্থলের দিকে। সেইসঙ্গে উপর থেকে নজর রাখার জন্য একটি হেলিকপ্টারের ব্যবস্থাও করা হল। কিন্তু শেষপর্যন্ত তাঁরা যা দেখলেন, তাতে রীতিমতো অবাক। এ যেন ঠিক মশা মারতে কামান দাগার উপক্রম।
সশস্ত্র পুলিশবাহিনী যখন বন্দুক উঁচিয়ে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছেন বাঘের দিকে, তখন হঠাৎ সামনের একটি বাড়ি থেকে বেরিয়ে এলেন একজন মহিলা। পুলিশ অফিসারকে উদ্দেশ্য করে জিজ্ঞেস করলেন, তাঁরা তাঁর বাঘটিকে দেখতে এসেছেন কিনা। তারপর তাঁদের নিয়ে গেলেন সেই বাঘের কাছে। এবং প্রত্যেকে অবাক হয়ে দেখলেন, সেখানে আসলে একটি বাঘের মূর্তি বসানো। যদিও সেই মূর্তি দেখতে অবিকল জ্যান্ত বাঘের মতো, কিন্তু তার মধ্যে কোথাও প্রাণের স্পন্দন নেই। তার আর অ্যাম্বার দিয়ে তৈরি একটি মূর্তি মাত্র।
ইংল্যান্ডের ইঘথাম গ্রামে বাস করেন জুলিয়েট সিম্পসন নামের এই মহিলা। তিনি আসলে একজন শিল্পী। মূর্তি তৈরি করেন। প্রায় ২০ বছর আগে এই বাঘের প্রতিকৃতিটি তৈরি করেছিলেন কুকুরের উপদ্রব থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য। এরপর তাঁর বাড়ির আশেপাশে কুকুরের উপদ্রব কমে যায়। অবশ্য প্রতিবেশীদের মনে এতদিন কোনো ভয় দেখা যায়নি। হয়তো তাঁরা খেয়ালই করেননি এই মূর্তিটি। কিন্তু অবশেষে এই মূর্তি দেখেই পুলিশে রিপোর্ট করেন কেউ। আর তার পরেই ঘটল এই ঘটনা।
জুলিয়েট অবশ্য নিজে এই ঘটনায় বেশ মজা পেয়েছেন। এমনকি তাঁর নাতনি মার্থা সিম্পসন ট্যুইটারে এই ঘটনার কথা লিখে জুলিয়েটের শিল্পকর্মের প্রশংসাও করেন। আর হতবাক পুলিশরা? তাঁরাই বা আর কী করবেন? শেষ পর্যন্ত তাঁরাও জুলিয়েটের মূর্তির প্রশংসা করে ফিরে এলেন। বাঘ ধরতে আর তাঁরা পারলেন না।