চিনের বক্তব্য ছিল আমেরিকার অপপ্রচার। অন্যদিকে পাশ্চাত্য সংবাদপত্রে বারবার উঠে এসেছে সিনজিয়াং গণহত্যার কথা। হাজার হাজার উইঘুর মুসলমান তখন রাষ্ট্রীয় নিপীড়নের শিকার। কেউ কেউ সীমান্ত পেরিয়ে চলে এসেছিলেন ভারতে। এসব ১৯৪৮ সালের ঘটনা। তখন সদ্য চিনের বিপ্লব সংঘটিত হয়েছে। আজ ৭২ বছর পর আন্তর্জাতিক তদন্ত সংস্থা থিংক-ট্যাঙ্ক জানাচ্ছে, সেদিন সত্যিই গণহত্যা ঘটিয়েছিল চিনের কমিউনিস্ট পার্টি।
থিংক-ট্যাঙ্কের রিপোর্ট যখন প্রকাশিত হচ্ছে, ঠিক তখনই চিনের কমিউনিস্ট পার্টির অভ্যন্তরে চলছে কেন্দ্রীয় সম্মেলন। সমস্ত সাংবাদিকদের কাছ থেকে সিনজিয়াং গণহত্যা নিয়ে প্রশ্ন শুনতে শুনতে রীতিমতো বেকায়দায় কমিউনিস্ট নেতৃত্ব। যদিও চেয়ারম্যান সি জিম্পিং এখনও বলছেন পুরোটাই আমেরিকার চক্রান্ত। তবে থিংক-ট্যাঙ্ক তথ্য দিয়ে দেখিয়েছে, গণহত্যা বিষয়ক যে পাঁচটি নীতি জাতিসংঘের প্রতিটি সদস্য দেশের মেনে চলার কথা, তার প্রতিটিই লঙ্ঘন করেছিল চিন।
থিংক-ট্যাঙ্কের রিপোর্ট বলছে, উইঘুর মুসলমানদের উপর যে নির্যাতন হয়েছিল তা কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা নয়। পুরো ঘটনার নেপথ্যেই ছিলেন সরকারি কর্মচারী এবং কমিউনিস্ট পার্টির সদস্যরাই। প্রথমত, বিনা বিচারে একের পর এক মানুষকে বন্দি করে অকথ্য অত্যাচার তো ছিলই। এমনকি বলপূর্বক স্বামী-স্ত্রীর বিচ্ছেদ ঘটানো বা যৌনাঙ্গ নষ্ট করে দেওয়ার মতো কাজও করেছেন তাঁরা। উইঘুর শিশুদের পরিজনদের থেকে কেড়ে নিয়ে গিয়ে অনাথ আশ্রমে জায়গা করে দেওয়া হয়। সিনজিয়াং শহরের বুক থেকে উইঘুর সম্প্রদায়ের সমস্ত অস্তিত্বই মুছে ফেলতে চেয়েছিল কমিউনিস্ট সরকার।
থিংক-ট্যাঙ্কের রিপোর্ট নিয়ে অবশ্য এখনও স্পষ্ট কোনো উত্তর দেয়নি চিন। পার্টির মুখপাত্র লি কেকিয়াং কিছুদিনের মধ্যেই সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দেবেন বলেই জানানো হয়েছে। তবে কেন্দ্রীয় সম্মেলনের মুখে এমন একটা রিপোর্টকে ঘিরে পার্টি যে যথেষ্ট বেকায়দায়, সে-কথা বলাই বাহুল্য।
আরও পড়ুন
একদিনে মৃত ৮০০০ মানুষ, বিশ্বযুদ্ধের পর ইউরোপের সবচেয়ে বড়ো গণহত্যার ২৫ বছর
Powered by Froala Editor