মহাজগতে ঘটে যাওয়া অবিরাম রহস্যগুলির মধ্যে অন্যতম একটি ঘটনা রেডিও বিস্ফোরণ। মাঝে মাঝেই পৃথিবীর র্যা ডারে ধরা দেয় এই রেডিও সিগন্যাল। কিন্তু কী তার কারণ, তার সৃষ্টিই বা কীভাবে— এসকলই অধরা বিজ্ঞানীদের কাছে। তবে ডব্লু. এম. কেক অবজারভেটরির দুই বিজ্ঞানী অনেকটাই প্রশস্ত করে দিয়েছেন এই রহস্য সমাধানের পথ। নির্ভুলভাবে গণনা করেছেন পুনরাবৃত্তি না হওয়া রেডিও বিস্ফোরণের উৎপত্তির স্থানাঙ্ক। আর তার জন্যই ২০২০ সালের সম্মানজনক নিউকম্ব ক্লেভল্যান্ড পুরস্কারের পালক চড়ল তাঁদের মুকুটে।
মঙ্গলবার আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন ফর অ্যাডভান্সমেন্ট অফ সায়েন্স (এএএএস)-এর ১৮৭তম বার্ষিক সম্মেলনে ঘোষণা করা হয় বিজয়ীদের তালিকা। মহাকাশবিদ্যায় এই জটিল ‘ধাঁধাঁ’-র সমাধান করেই এই পুরস্কার তুলে নেন এম. কেক অবজারভেটরির মুখ্য বিজ্ঞানী জন ও’মিয়েরা এবং ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জেভিয়ার প্রোচাস্কা।
ফাস্ট রেডিও বার্স্ট বা অ-পুনরাবৃত্ত রেডিও বিস্ফোরণ ধরা দেয় কেবলমাত্র কয়েক মুহূর্তের জন্য। আর সেই কারণের তাদের কারণ অনুসন্ধান কিংবা স্থানাঙ্ক নির্ণয়ের প্রক্রিয়া অত্যন্ত জটিল। আর সেটাকেই সম্ভব করে দেখিয়েছেন এই দুই গবেষক। দুই বিজ্ঞানীর গবেষণায় উঠে আসে এফবিআর ১৮০৯২৪ নামক একটি রেডিও বিস্ফোরণের উৎস কয়েক লক্ষ আলোকবর্ষ দূরের একটি মাঝারি আকারের ছায়াপথ।
তবে শুধু অপটিক্যাল টেলিস্কোপের মাধ্যমে সম্ভব হয়নি এই রহস্যভেদ। সেইসঙ্গে রেডিও ইন্টারফেরোমিটারে প্রাপ্ত তথ্যের বিশ্লেষণের মাধ্যমে সফলভাবে তাঁরা চিহ্নিত করেন এই ছায়াপথকে। হাওয়াইয়ে অবস্থিত এম কেক অবজারভেটরিতে অবস্থিত বিশ্বের বৃহত্তম অপটিক্যাল ও ইনফ্রারেড টেলিস্কোপের মাধ্যমেই সম্ভব হয়েছে এই রহস্যোন্মোচন। সম্প্রতি সায়েন্স জার্নালে প্রকাশিত হয়েছিল এই গবেষণাপত্র। তবে এই গবেষণার প্রভাব যে সুদূরপ্রসারী হতে চলেছে, তা না বললেও চলে। কারণ, এই আবিষ্কারের ওপর ভর করেই আগামীদিনে সামনে আসবে রেডিও বিস্ফোরণের কারণ এবং অন্যান্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যও। এ-ব্যাপারে যথেষ্ট আশাবাদী বিশ্বের তাবড় জ্যোতির্বিদরা…
Powered by Froala Editor