সাদা আকাশের মধ্যে উড়ছে আকাশী নীল রঙের ছোট্ট পাখি। আমরা সকলেই কম-বেশি পরিচিত এই ছবির সঙ্গে। হ্যাঁ, কথা হচ্ছে টুইটারের (Twitter) লোগো নিয়েই। তবে মাইক্রোব্লগিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া জায়েন্ট টুইটারের এই ‘ব্লু বার্ড’ নিছকই কোনো পাখি নয়। পৃথক নামও আছে তার। অবাক হচ্ছেন নিশ্চয়ই? আসলে টুইটারের তরফে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনোদিন ঘোষণা করা না হলেও, টুইটার পরিচালক ডগলাস বোম্যানের মুখ ফসকেই বেরিয়ে গিয়েছিল সেই কথা।
২০১২ সালের কথা। সে বছরেই নবরূপে আবির্ভূত হয়েছিল ‘ব্লু বার্ড’। লোগোর বিবর্তনের ইতিহাস বিশ্লেষণ করতে গিয়েই মুখ ফসকে তিনি বলে ফেলেছিলেন ‘ল্যারি দ্য বার্ড’ (Larry The Bird)। তবে হ্যাঁ, টুইটারের লোগোতে থাকা নীল পাখিটির নাম ‘ল্যারি’। তবে শুধু বোম্যানই নন, ওই একই দিনে পৃথক আরেকটি সাক্ষাৎকারে তৎকালীন প্রোডাক্ট ম্যানেজার রায়ান সার্ভারের মুখেও শোনা গিয়েছিল একই কথা। সাংবাদিক সম্মেলনে টুইটারের এই পাখিটি কী প্রজাতির জানতে চাওয়া হয়েছিল তাঁর কাছে। প্রত্যুত্তরে মজার ছলে রায়ান বলেছিলেন, ‘ল্যারি প্রজাতি’-র।
প্রশ্ন থাকে আদৌ কি এই নামের কোনো পাখি প্রজাতি আছে পৃথিবীতে? সেই নিয়ে রীতিমতো গবেষণা চালিয়েছেন একদল অনুসন্ধানকারী। না, নেই। তবে হঠাৎ ল্যারি নাম রাখা হল কেন টুইট-পক্ষীর? রহস্যের জাল কাটে তাঁদের দৌলতেই। আদতে কোনো পাখি নয়, বরং এক ব্যক্তিকে উৎসর্গ করেই টুইটারের এই ব্লু-বার্ডের নাম রাখা হয়েছিল ল্যারি। আর তিনি হলেন বোস্টন সেলটিক্স বাসকেটবল দলের কিংবদন্তি খেলোয়াড় ল্যারি বার্ড। শূন্য দশকের শুরু থেকেই এই দলটির স্পনসরের ভূমিকায় ছিল টুইটার। পাশাপাশি টুইটারের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ব্রিজ স্টোনও এই দলের অন্ধভক্ত। ফলত, সেখান থেকেই ‘ল্যারি’ নামের আগমন। অন্তত এমনটাই দাবি কন্সপিরেসি থিওরিস্টদের।
তবে ২০০৫ সালে টুইটারের জন্মলগ্নে অবশ্য ‘ল্যারি’-র অস্তিত্ব ছিল না। তখন টুইটার কথাটিও আসেনি বাজারে। ‘twtta’ হিসাবেই পরিচিত ছিল মাইক্রোব্লগিং সাইটটি। ঠিক পরের বছরই নাম পরিবর্তন করে আসে টুইটার কথাটি। আরও বছর চারেক পর ২০১০ সালে টুইটারের লোগোতে প্রথমবারের জন্য দেখা যায় পাখিটিকে। তবে সে-সময় তাকে উড়তে দেখা যেত মাটির সঙ্গে সমান্তরালভাবে। পাশে লেখা থাকত ‘twitter’ শব্দবন্ধটি। সেই বছরই টুইটারের জগতে ‘ল্যারি’ কথাটির প্রথম গেস্ট অ্যাপিয়ারেন্স দেখা যায়। অবশ্য তখনও পর্যন্ত তা চোখে পড়েনি কারোরই। টুইটারের প্রোগ্রামিং ম্যানেজার জেনা ডন সেসময় টুইট করে জানিয়েছিলেন, “কম্পিউটার কিইবোর্ডের ‘L’ বটনটি চাপলেই বন্ধ করা সম্ভব খুলে রাখা কোনো টুইটকে”। পরের লাইনে জেনা উল্লেখ করেছিলেন, “এল ফর ল্যারি”।
আরও পড়ুন
নিউজিল্যান্ডের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাব, দেশজুড়ে বিতর্কের পরিস্থিতি
২০১২ সালে আরও একবার বদলে যায় টুইটারের লোগো। কেবলমাত্র ব্লু-বার্ড ল্যারিই হয়ে ওঠে তার প্রাণকেন্দ্র। যে লোগো আজও আমরা দেখতে পাই ফোন কিংবা কম্পিউটারের স্ক্রিনে। তবে খেয়াল করলে দেখা যাবে, এই লোগোতে পাখিটির গতিপথ ঊর্ধ্বমুখী। কন্সপিরেসি থিওরিস্টদের অভিমত, ল্যারি বার্ডের লাফানোর ভঙ্গির আদলেই বদলানো হয়েছিল এই লোগোটি। যদিও এত বছর পেরিয়ে আসার পর আজও ল্যারিকে নিয়ে মুখ খোলেনি টুইটার কর্তৃপক্ষ…
আরও পড়ুন
বাঙালি গবেষকের নামে নামকরণ নব্যাবিষ্কৃত ছত্রাকের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
টুইটার ব্যবহার করে একের পর এক হত্যা, জাপানের কুখ্যাত সিরিয়াল কিলারকে মৃত্যুদণ্ড