আর কিছুদিনের মধ্যেই শুরু হতে চলেছে দুর্গাপুজো। বাঙালির সবচেয়ে বড়ো উৎসব। আর সেইসঙ্গে উত্তর ও মধ্যভারতে দশেরার দিনও এগিয়ে আসছে। শুরু হয়ে গিয়েছে প্রস্তুতি। রামলীলায় মেতে উঠতে চলেছেন অসংখ্য মানুষ। কিন্তু এই উৎসবের কারণেই বিপন্ন হয় প্রকৃতিও। আর প্রকৃতিকে বাঁচাতেই এবার এগিয়ে এলেন ছত্তিশগড়ের বাস্তার অঞ্চলের আদিবাসীরা।
বাস্তার অঞ্চলের নিকটেই কালাকাল্গুড় গ্রাম। পুরো গ্রামটাই আদিবাসী অধ্যুষিত। জঙ্গলের মধ্যেই তাঁদের বেঁচে থাকা। জঙ্গলকে ঘিরেই তাঁদের সমস্তকিছু। আর এই জঙ্গল থেকে প্রতি বছর গাছ কেটে নিয়ে যায় শহরের সভ্য মানুষ। উদ্দেশ্য, দশেরা অনুষ্ঠানের জন্য রামের রথ তৈরি করতে হবে। সেই কাঠের জোগান দিতেই কাটা হয় জঙ্গলের গাছ। কিন্তু গ্রামের আদিবাসীরা এভাবে গাছ কাটা মেনে নিতে পারেননি। ২০১৭ সালে প্রশাসনের কাছে আপত্তি জানান তাঁরা। তখন কোনো কাজ না হলেও এবারে ঐক্যবদ্ধ গ্রামবাসীদের মিলিত বাধার মুখে পিছু হটে দশেরা অর্গানাইজিং কমিটি।
দশেরা অর্গানাইজিং কমিটির সঙ্গে এবারে এসেছিল পুলিশও। বলা হয় ২০ বছরের বেশি সময় ধরে চলে আসা এই ঐতিহ্যশালী অনুষ্ঠানে বাধা দেওয়া যাবে না। কিন্তু গ্রামবাসীরাও জানিয়ে দেন, বনাধিকার আইন অনুযায়ী তাঁদের অমতে জঙ্গলের কোনো গাছ কাটা যাবে না। গ্রামবাসীরা আরও অভিযোগ জানান, বারবার বলার পরেও শহরের মানুষ শুধুই গাছ কেটে নিয়ে গিয়েছেন। একটি নতুন গাছও লাগাননি তাঁরা। এবারে কালাকাল্গুড় জঙ্গলের গাছগুলো বেঁচে গেল ঠিকই, কিন্তু রথের জন্য কাঠ ঠিকই জোগাড় হয়েছে। অন্য কোনো জঙ্গলে কাটা পড়েছে গাছ। তবে বনভূমি রক্ষার জন্য আদিবাসীদের এই মিলিত প্রতিরোধ নিঃসন্দেহে এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এর থেকে কি আদৌ কোনো শিক্ষা পাবে তথাকথিত সভ্য মানুষরা?
Powered by Froala Editor