পাঁচ একর। ৪০ হাজার গাছ। কী ভাবছেন, আবার নতুন করে কোথায় বনাঞ্চল ধ্বংস হল? না। বরং এই পরিসংখ্যান ঠিক এর উল্টোটা। পাঁচ একর জায়গা জুড়ে তৈরি হল একটা আস্ত জঙ্গল। আর এই উলটপুরাণ সম্পূর্ণ একার হাতে করেছেন ভাইয়ারাম।
অনাড়ম্বর জীবন। বুন্দেলখণ্ডে নিজের জঙ্গলের মধ্যেই একটা কুঁড়েঘর তৈরি করে সেখানে একাই থাকেন তিনি। স্ত্রী, সন্তানেরা মারা গেছেন ২০০৭-এ। কোনো রোজগারের চিন্তা নেই। নিজের খাবারের জোগানটুকু নিজেই করে নেন। অথচ এই মানুষটিই একার চেষ্টায় প্রায় অসাধ্যসাধন করেছেন। বাবা বলেছিলেন, মৃত্যুর আগে অন্তত পাঁচটি মহুয়া গাছ ভাইয়ারামকে লাগাতেই হবে। সেই পাঁচটি মহুয়া আজ বেড়ে ৪০ হয়েছে। শুধু মহুয়া নয়, সেগুন, নিম, বেল, তেঁতুল-সহ আরও বহু গাছ লাগিয়েছেন তিনি। গত ১১ বছর ধরে। এই দীর্ঘ বছরগুলিতে, প্রশাসনের তরফ থেকে বিশেষ কোনও সাহায্যই পাননি তিনি। এমনকি যে অঞ্চলটায় এই জঙ্গল তৈরি করেছেন, সেখানে ধারেকাছে জলের সেরকম বড় উৎস নেই। এখনও তিনি প্রতিদিন কাছের গ্রাম থেকে ২০ কিলো করে দুটি বড় ড্রামভর্তি জল নিয়ে আসেন। মোট চারবার যাতায়াত চলে তাঁর। এই বয়সে এসেও কেন এত খাটেন? উত্তর আসে, ‘গাছ তো সবাই লাগায়, কিন্তু কেউ বাঁচায় না।’ সেই বাঁচানোর পণ নিয়ে এখনও চলছেন ভাইয়ারাম। ৪০ হাজারকে ৪০ লাখ করার স্বপ্ন নিয়ে বেঁচে আছেন তিনি। শুধু চিন্তা একটাই, তিনি চলে গেলে, তাঁর এই সন্তানদের যেন কিছু না হয়।