পাখির চোখ থেকে দুনিয়াকে দেখার ইচ্ছে মানুষের বহুদিনের। এরোপ্লেন আবিষ্কার সেই স্বাদ কিছুটা এনে দিয়েছে ঠিকই। কিন্তু গাছের ডালে বিশ্রাম নিতে নিতে চারিদিক দেখার অবকাশ সহজে মেলে না। আধুনিক জীবনে তাই বিলাসের অন্যতম আশ্রয় হয়ে উঠেছে ‘ট্রি-হাউস’ বা গাছবাড়ি (Tree House)। দেশে দেশে এমন আবাসনের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। এর মধ্যেই নতুন এক দৃষ্টান্ত তৈরি করল সুইডেন। সুইডেনের (Sweden) ল্যাপল্যান্ড অঞ্চলের ট্রি-হোটেলের একটি ঘর তৈরি হয়েছে একেবারে পাখির বাসার মাঝে। চারিদিকে নানা প্রজাতির পাখির সমাবেশ। আর তার মাঝেই মানুষের বিশ্রাম নেওয়ার এক চিলতে জায়গা।
সব মিলিয়ে মাত্র ৩৪ বর্গমিটারের একটি ছোট্ট ঘর। আর তার চারদিকে ৩৫০টি পাখির বাসা। শুধু পাখির বাসাই নয়, গাছের ডালেও সবসময় পাখিদের আনাগোনা লেগেই থাকে। পক্ষীপর্যটকদের কাছে তাই এই ঘর এক গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য হয়ে উঠবে বলেই আশা করছে হোটেল কর্তৃপক্ষ। ২০১০ সালে ল্যাপল্যান্ডের লিন্ডভেল দম্পতির উদ্যোগে তৈরি হয় এই ট্রি-হোটেল। এরপর ইউরোপের নানা বিখ্যাত আর্কিটেক্ট এবং পরিবেশ বিশেষজ্ঞদের হাত ধরে নানা ধরনের নতুন নতুন ঘর গড়ে উঠেছে। তবে নতুন এই ঘরটির চেহারা একেবারে অন্যরকম।
মাটি থেকে ৮০ মিটার উঁচুতে গাছের ডালে মানুষের এই বাসা। দড়ির তৈরি ওভারব্রিজ দিয়ে চলে যাওয়া যায় এই ঘরে। বিশ্রাম নেওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা আছে। কাচের জানলা দিয়ে তাকালেই চোখে পড়ে পাখিদের জীবনযাত্রা। শুধুই পাখি নয়, ৩৫০টি বাসার মধ্যে পাখির সঙ্গে রয়েছে বাদুর, মৌমাছিও। আর এই পুরো পরিকল্পনার সঙ্গে জড়িয়ে আছেন বারকে ইঙ্গেলস গ্রুপের বিশেষজ্ঞরা। রয়েছেন পরিবেশ বিশেষজ্ঞ উলফ ওমান এবং আর্কিটেক্ট জোয়াও আলবুকার্ক। প্রায় ১৩ মাস ধরে চলেছে পরিকল্পনা। তারপর ঘরটি তৈরি করতেও সময় লেগেছে প্রায় বছরখানেক। ঘরটি সম্পূর্ণ তৈরি হওয়ার আগেই শুরু হয়ে গিয়েছে বুকিং। শুধু সুইডেন নয়, ইউরোপের নানা দেশ থেকেই মানুষ ভিড় জমাতে শুরু করেছেন। পক্ষীপর্যটকদের জন্য আগামীদিনে সারা পৃথিবীতেই এমন ঘর গড়ে উঠবে বলে মনে করছেন নির্মাতারা।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
অরণ্যের থেকেও বেশি কার্বন শোষণ করে ‘শহুরে’ গাছ! জানাচ্ছে গবেষণা