তামিলনাড়ুর তিরুনেলভেলিতে জন্ম প্রীতিশার। উবের ইটসে চাকুরিরত। খাবার পৌঁছে দেওয়ার কাজ তাঁর। জীবনে যাতে একটা নিশ্চয়তা মেলে – সে-কারণেই এই কাজ বেছে নেওয়া। তাতে ছাড়তে বাধ্য হল নাচ-গান-নাটককে। কারণ সেখানে রোজগারের কোনো নিশ্চয়তা নেই। কিন্তু কেন 'নিশ্চয়তা'কে এভাবে আঁকড়ে ধরেছিলেন প্রীতিশা?
নবম শ্রেণিতে পড়তেই প্রীতিশা বুঝেছিলেন শরীরে 'পুরুষ' হলেও মননে তিনি নারী। তারপর থেকেই প্রীতিশার জীবনসংগ্রাম শুরু। সমাজে আজও প্রান্তিক যৌনতার মানুষ প্রান্তিকতর। শোষণ অত্যাচারের সঙ্গে যুঝে পথ চলতে হয়। প্রীতিশাও ব্যতিক্রম নন। অস্ত্রোপচার করে দেহে 'নারী' হয়ে ওঠেন প্রীতিশা। জীবনধারণের জন্যে নানান কাজ করতে থাকেন। কখনো চাবির রিং ফেরি করা আবার কখনও পথনাটিকায় অংশগ্রহণ করে প্রীতিশা অর্থোপার্জন করতে থাকেন। কোনো কাজই ছোট নয়। তবে, আপোষ করতে হয়, এমন কাজ করতে কোনোদিন চাননি তিনি। নাটক করেছেন, মঞ্চে নাচগানের সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। এইসবে তো কোনো নিয়মিত বেতন নেই; প্রীতিশা তাই যোগ দিতে চাইলেন উবের ইটসে। উবের ইটসও সানন্দে গ্রহণ করল তাঁকে।
বর্তমানে বিয়েও করেছেন প্রীতিশা। প্রেমকুমারণ পাত্রের নাম। তামিলনাড়ুতে এটাই প্রথম রূপান্তরকামী মানুষের বিবাহ। ইতিহাস তো বটেই। অনেকটা রূপকথার গল্পের মতোই প্রীতিশা প্রেমকুমারণের জীবন – যা প্রান্তিক যৌনতার মানুষের কাছে সমস্ত অত্যাচার ভুলে নতুনভাবে বেঁচে ওঠার বার্তাও।