লকডাউনে আর্থিক মন্দার রোশ থেকে বাদ পড়েনি দেশের টেলিকম সংস্থাগুলিও। সম্প্রতি ট্রাইয়ের প্রকাশিত রিপোর্টে সামনে এল সেই চাঞ্চল্যকর তথ্যই। চলতি বছরের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন মাস অবধি ভারতে কমেছে অন্ততপক্ষে ১.৭ কোটি মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা। এমনকি কিছু কিছু সংস্থার ক্ষেত্রে মোবাইল সাবস্ক্রাইবার হ্রাস পাওয়ার এই ট্রেন্ড বজায় ছিল জুলাই-আগস্ট পর্যন্তও।
ট্রাইয়ের রিপোর্ট জানাচ্ছে চলতি বছরের শুরুতে ভারতে মোট মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ছিল ১১৫.৯ কোটি। যা জুন মাসের শেষে কমে দাঁড়ায় মাত্র ১১৪.১ কোটির আশেপাশে। মাত্র একটি ত্রৈমাসিকেই ১.৫ শতাংশের সাবস্ক্রাইবার হ্রাসের ঘটনা ভারতীয় টেলিকম পরিষেবার ইতিহাসে একেবারেই বিরল। তবে ত্রৈমাসিক বললেও মার্চের শেষ থেকেই শুরু হয়েছে টেলিকম জগতের এই ছন্দপতন। মোট সাবক্রাইবার যেমন কমেছে তেমনই কমেছে ভারতের মোবাইল নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের গড় ঘনত্বও। প্রতি ১০০ জনে মোবাইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ৮৫.৮৭ থেকে কমে দাঁড়িয়েছে ৮৪.৩৮-এ।
তবে পারতপক্ষে মোট ১.৭ কোটি সাবস্ক্রাইবার কমলেও, শুধুমাত্র ভোডাফোন, আইডিয়া, বিএসএনএল মিলিয়েই এই সংখ্যা ২.৬ কোটির থেকেও বেশি। কিন্তু রিলায়েন্স জিও’র ক্ষেত্রে দেখা গেছে একেবারেই উল্টোচিত্র। এই মন্দার বাজারেও জিও বাড়িয়েছে ১ কোটি ব্যবহারকারীর সংখ্যা।
লকডাউনে অধিকাংশ মানুষেরই উপার্জনে কোপ পড়েছিল। বিশেষ করে আর্থিক সমস্যা চরমে পৌঁছেছিল পরিযায়ী শ্রমিকদের। বাড়ি ফেরার অর্থটুকুও ছিল না অধিকাংশের। ফলে মোবাইল রিচার্জ করা এক প্রকার বোঝাই হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাঁদের কাছে। সেইসঙ্গে অন্যদের মধ্যেও প্রবণতা দেখা দিয়েছিল রিচার্জ না করানোর। একাধিক নম্বর-ব্যবহারকারীদের মধ্যেও অনীহা দেখা গেছে দুটি নম্বরেই রিচার্জ করানোর ব্যাপারে।
তবে আগস্ট, সেপ্টেম্বর মাসে অনেকটাই স্থিতিশীল হয়েছে সাবস্ক্রাইবারের সংখ্যা। জিও, রিলায়েন্স এবং বিএসএনএল— এই তিন সংস্থার দৌলতেই এই দুই মাসে নতুন ৩৭ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার এসেছে। কিন্তু গ্রাহক হারানোর ধাক্কা এখনও অব্যাহত ভোডাফোনের ক্ষেত্রে। শুধু আগস্ট মাসেই ১২ লক্ষ সাবস্ক্রাইবার কমেছে ভোডাফোনের। তবে অক্টোবরের পর থেকে ধীরে ধীরে বদল আসবে এই ধারায়, এমনটাতেই আশাবাদী বিশেষজ্ঞরা...
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
লকডাউনেও প্রতি ঘণ্টায় আয় ৯০ কোটি টাকা! কী কারণে এমন বাড়বাড়ন্ত আম্বানির?