মহামারী পরিস্থিতিতে সমস্ত ব্যবসায়িক পরিসরের মধ্যে সবথেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন শিল্প। এর মধ্যে লকডাউনের কারণে তিনমাস সমস্তকিছুই বন্ধ ছিল। কিন্তু তার মধ্যে পর্যটকদের আকর্ষণ করতে নতুন করে সেজে উঠছে উত্তরবঙ্গ। আর সেই পোশাকে যোগ হতে চলেছে নতুন একটি উপকরণ। সেই কু-ঝিক-ঝিক টয়ট্রেন হারিয়ে গেলেও বদলে যাওয়া সময়ের সঙ্গে ফিরে আসছে ঐতিহ্যও। কিছুদিনের মধ্যেই উত্তরবঙ্গের তিনটি পার্কে লাইন-বিহীন টয়ট্রেন চালু করা হবে বলে জানিয়েছে বনবিভাগ।
২০১৯ সালেই শিলিগুড়ির উপকণ্ঠে বেঙ্গল সাফারি পার্কে প্রথম চালু হয় লাইন-বিহীন টয়ট্রেন। তখনই যথেষ্ট জনপ্রিয়তা পেয়েছিল এই নতুন বাহন। সেই সাফল্যকে মাথায় রেখেই আরও তিনটি পার্কে এই ট্রেন চালু হবে, জানিয়েছেন বন দপ্তরের ডিভিশনাল অফিসার অঞ্জন গুহ। এর মধ্যে একটি মালবাজারে, অন্যটি বালুরঘাটে এবং আরেকটি কোচবিহারের এনএন পার্কে। অঞ্জন গুহ আরও জানিয়েছেন, আপাতত এই তিনটি পার্ক খোলার কোনো কথা হয়নি। কিন্তু সরকারের অনুমতি পাওয়া মাত্র যাতে সমস্ত পরিষেবা চালু করা যায়, তাই সমস্তকিছু পরিষ্কার করা এবং সাজানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এই কাজের মধ্যেই টয়ট্রেন বসানোর কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা যায়।
বন দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে এই তিনটি পার্কে টয়ট্রেন পরিষেবা চালু করতে মোট ১ কোটি টাকা খরচ হবে। তার মধ্যে কোচবিহারের এনএন পার্কের জন্য খরচ হবে ৩৯ লক্ষ, বালুরঘাটের জন্য ৩৫ লক্ষ এবং মালবাজারের জন্য ৩০ লক্ষ। প্রতিটি ট্রেনে থাকবে তিনটি করে কামরা এবং প্রতিটি কামরায় ২৫-৩০ জন যাত্রী বসতে পারবেন। সুরক্ষার জন্য থাকবে সিসিটিভি এবং অ্যালার্মের বন্দোবস্ত। তবে শারীরিক দূরত্বের কথা মাথায় রেখে প্রথমে প্রতি কামরায় ১০-১৫ জন যাত্রী নিয়েই পরিষেবা শুরু হবে বলে জানানো হয়েছে।
উত্তরবঙ্গের পর্যটনশিল্পের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ ছিল টয়ট্রেন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তার জৌলুস ম্লান হয়েছে। বর্তমান পরিবেশকে মাথায় রেখে তাই টয়ট্রেনের চেহারাতেও পরিবর্তন এসেছে। এই গাড়ি দেখতে ট্রেনের মতো হলেও কোনো লাইনের উপর দিয়ে যায় না। প্রথম প্রথম এই নতুনকে মেনে নিতে অনেকেই আপত্তি করলেও ক্রমশ তার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। সময়ের সঙ্গে হয়তো এভাবেই নিজেকে বদলে নিয়ে বেঁচে থাকে ঐতিহ্য।
আরও পড়ুন
লকডাউনে বন্ধ পর্যটন, খাদ্যের অভাবে শরীর ভাঙছে হাতিদের
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
তাজমহলের থেকেও বিখ্যাত এই বস্তি, ভারতে ক্রমশ জনপ্রিয় হচ্ছে দরিদ্র পর্যটন