গলিতে গলিতে ঘুরে বেড়াচ্ছে একটি টোটো। এরকম দৃশ্য আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমরা প্রায়শই দেখে থাকি। তবে এখানে ব্যাপারটা যেন খানিক আলাদা। যাত্রীর সন্ধানে নয়, এই টোটোর ঘুরে বেড়ানো প্লাস্টিকের জন্য। যত্রতত্র যাতে বর্জ্য না পড়ে থাকে, তাই প্রতিটা বাড়ি গিয়ে প্লাস্টিক সংগ্রহ করে নিয়ে আসে সে, আর তার চালক। হাজার হোক, পরিবেশকে তো বাঁচাতে হবে!
আরও পড়ুন
প্লাস্টিকে নিষেধাজ্ঞা, পরিবেশবান্ধব বাঁশের বোতলের ব্যবহার শুরু সিকিমে
শান্তিনিকেতনের রতনপল্লী। সেখানেই এই নতুন উদ্যোগ শুরু করেছেন লাভপুর গার্লস হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষিকা মনীষা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর অন্যান্য বন্ধুরা। একটা টোটো কিনে সেটাকে খানিক মেরামত করে নেওয়া হল। যাত্রীদের বসার জায়গাটা বদলে গেল খানিক। প্রতি সপ্তাহে এক একটা জায়গায় যায় টোটোটি; প্রতিটা বাড়ি থেকে প্লাস্টিকের বর্জ্য সংগ্রহ করে। সমস্তটা জড়ো করে তারপর শুরু হয় রিসাইকেলের কাজ। সপ্তাহের যাবতীয় জঞ্জাল একদিনে সংগ্রহ করা হয়। কেউ যাতে অন্যত্র না ফেলে, সেই কথাও বারবার বলা হয় পল্লীর বাসিন্দাদের। এভাবেই যাতে প্লাস্টিক দূষণ বন্ধ করা যায়; নদী-নালায় যাতে পড়ে না থাকে সেটারই চেষ্টা করা হচ্ছে মনীষাদেবীদের পক্ষ থেকে।
আরও পড়ুন
প্লাস্টিক খেয়ে হজম করে ফেলে শুঁয়োপোকা, পরিবেশ রক্ষায় নয়া আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের
শুরুতে অবশ্য এতটা ছড়িয়ে পড়েনি এই উদ্যোগ। তবে সময় লাগলেও, সবাই সাদরে গ্রহণ করেছে এই প্লাস্টিক টোটোকে। এছাড়াও, প্রতিটা বাড়ি থেকে মাসে ৫০ টাকা করে সংগ্রহ করা হয়। যে টোটো চালায়, তাঁকে এই টাকা থেকেই সামান্য একটু দেওয়া হয়। অনেকেই দেন; তবে প্লাস্টিক সংগ্রহটা সমস্ত বাড়ি থেকেই করা হয়। একবারও কামাই যায় না। আসল কাজ তো সেটাই! প্লাস্টিক যাতে যেখানে সেখানে ছড়িয়ে না থাকে, সেই উদ্যোগই তো প্রধান এখানে। শান্তিনিকেতনের ‘শান্তি’ ফিরিয়ে আনতে, এমন উদ্যোগ আরও দরকার বইকি!