গতকালই চলে গিয়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ অসুস্থতার পর জীবনের খেলায় হার মানলেন চুণী গোস্বামী। বাংলা তথা ভারতের ক্রীড়া মানচিত্রে এক প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। বাস্তবকে তো মেনে নিতে হয়; তাই স্মৃতিচারণের মধ্যেই সবাই ধরে রাখছিলেন মুহূর্তগুলো। এর মধ্যেই সাগর পেরিয়ে সামনে আসে আরও একটি শোকবার্তা। পাঠিয়েছে টটেনহ্যাম হটস্পার ফুটবল ক্লাব। চুণী গোস্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁরা একটি পোস্ট করেছেন। কিন্তু স্বনামধন্য এই ইংলিশ ক্লাবটির সঙ্গে চুণীর সম্পর্ক কোথায়? জানতে হলে খানিক পেছনে তাকাতে হবে।
১৯৬০-৬১ সাল। চুণী গোস্বামী তখন ভারতীয় ফুটবলের গুরুত্বপূর্ণ নাম। শুধু দেশের মাটি নয়, বিশ্বের নানা জায়গাতেও ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে তাঁর কথা। চলে যায় সুদূর ইংল্যান্ডেও। সেখান থেকেই ওই সময় একটি চিঠি আসে চুণী’র কাছে। চিঠিটি পাঠিয়েছেন বিল নিকোলসন, টটেনহ্যাম হটস্পারের পক্ষ থেকে। ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ক্লাবটি সেই বছরই প্রথম চ্যাম্পিয়ন হয়। সেখান থেকেই অফার এসেছে সুবিমল ‘চুণী’ গোস্বামীর কাছে। ওই ক্লাবে খেলার জন্য তাঁকে ডাকা হয়েছে। ট্রেনে করে ইংল্যান্ডে আসার আমন্ত্রণও জানানো হয়েছে!
এখনকার দিনে এমন সুযোগ পেলে সবাই হাত বাড়িয়ে নেবে। এমন অফার কি ফেলা যায়! কিন্তু চুণী গোস্বামী সেদিন ভারত ছাড়েননি। ফিরিয়ে দিয়েছিলেন টটেনহ্যাম হটস্পারের অফার। মোহনবাগানকে ছেড়ে কি যাওয়া যায় এত সহজে? অবশ্য পরে বেশ কিছু সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, ইংল্যান্ডের ফুটবল সম্পর্কে অতটা ধারণা ছিল না। তাই এমন সোনার অফারের গুরুত্ব বুঝতে পারেননি। তাতে কী হয়েছে! তিনি আমাদের সেই চুণীই রয়ে গেছেন। ফুটবলকে শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন যিনি। তাঁর মৃত্যুতে সম্মান জানাতে ভোলেনি টটেনহ্যাম হটস্পারও। সব মিলিয়ে দুটো দেশকে শেষ মুহূর্তেও ফুটবল দিয়ে মিলিয়ে গেলেন চুণী গোস্বামী।