দেখতে দেখতে অনেকগুলো মাস কেটে গেল, কোভিড-১৯ এর প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে সমস্ত পৃথিবীজুড়ে। করোনা ভাইরাস সরাসরি আক্রমণ করে মানুষের শ্বাসযন্ত্রে। ফুসফুসের স্বাভাবিক কর্মক্ষমতা নষ্ট হয়ে যায়। ফলে প্রয়োজন হয় কৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র। যার পোশাকি নাম, ভেন্টিলেটর। এই যন্ত্রটির চাহিদা এই কিছুদিনে যতটা বেড়েছে, জোগান বাড়েনি সেভাবে। বহু হাসপাতালেই রোগীরা এই পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। এমন সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিলেন প্রয়াত পদার্থবিদ স্টিফেন হকিং-এর পরিবার।
দুরারোগ্য মোটর নিউরন রোগে আক্রান্ত এই বিজ্ঞানীর মৃত্যুর বহু আগেই শরীরে সমস্ত অঙ্গ বিকল হয়ে গিয়েছিল। কাজ করত কেবল মস্তিষ্ক। আর নানারকম কৃত্রিম যন্ত্রপাতির সাহায্যে দেহটুকু বাঁচিয়ে রাখা হয়েছিল। এইসব যন্ত্রপাতির মধ্যে ছিল একটি ভেন্টিলেটরও। বিশেষ প্রযুক্তিতে তৈরি এই ভেন্টিলেটর আয়তনে বেশ ছোটো, এবং সহজেই এটিকে ব্যবহার করা যায়। তবে বিজ্ঞানীর মৃত্যুর পর দু-বছর আর কোনো কাজ লাগেনি এই যন্ত্রটি। তবে মহামারীর সময় বহু মানুষের প্রাণ বাঁচাতে পারে এই যন্ত্র। তাই সেটিকে কেমব্রিজের রয়্যাল পাপওয়ার্থ হসপিটালের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজ্ঞানীর কন্যা লুসি হকিং।
জীবনকালে এই হাসপাতালের পক্ষ থেকে নানারকম সহযোগিতা পেয়েছেন স্টিফেন হকিং। তাঁর মৃত্যুর পর হাসপাতালের প্রয়োজনে কিছুটা সাহায্য করতে পেরে খুশি লুসি হকিং। পাশাপাশি আরও একটি সয়ংক্রিয় ভেন্টিলেটর যন্ত্র অনুদান হিসেবে হাসপাতালের হাতে তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। কিছুদিনের মধ্যেই সেই যন্ত্রটিও পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করা হবে। স্টিফেন হকিং-এর কন্যার এই সাহায্য পেয়ে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
শরীরের সমস্ত যন্ত্রণা উপেক্ষা করে বিজ্ঞানের জন্য নিবেদিত প্রাণ ছিলেন বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিং। মানুষের কল্যাণের জন্যই কাজ করে গিয়েছেন সারা জীবন। মৃত্যুর পরেও তাঁর সাহায্যের হাত বাড়িয়ে রেখেছেন মানুষের দিকে। এভাবেই বেঁচে থাকুন তিনি। তাঁর ব্যবহৃত ভেন্টিলেটরের চিকিৎসায় ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠুক মানুষ।