বিগত কয়েক বছরে সারা ভারতজুড়েই অন্যতম আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে উঠেছে হাতিমৃত্যুর ঘটনা। কখনও চোরাশিকারীদের আক্রমণে তো কখনও সাধারণ মানুষের নিষ্ঠুর রসিকতায় প্রাণ হারাতে হয়েছে এই অতিকায় প্রাণীদের। আর তার সঙ্গে প্রকৃতির তাণ্ডব তো রয়েছেই। হাতিদের সুরক্ষার জন্য এবার বিশেষ ব্যবস্থা নিতে চলেছে আসাম বনবিভাগ। সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টে একটি খসড়া আবেদনে বনবিভাগ জানিয়েছে কাজিরাঙা ন্যাশানাল পার্ক এবং টাইগার রিজার্ভের মধ্যে মোট ৯টি বিশেষ করিডর তৈরি করা হবে। আর প্রতিটি করিডর ব্যবহৃত হবে হাতিমৃত্যু রুখতে। এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের তরফ থেকেও ইতিবাচক নির্দেশ পেয়েছেন বনকর্তারা।
মোটামুটি দেড়মাস আগে, ১২ মে, আসামের নগাঁও জেলায় একসঙ্গে ১৮টি হাতির মৃত্যুর ঘটনা রীতিমতো চাঞ্চল্য ফেলে দিয়েছিল। বনবিভাগ সূত্রে বলা হয় বজ্রপাতের কারণেই মৃত্যু হয়েছে হাতিগুলির। তবে এখনও পর্যন্ত ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ্যে আসেনি। ফলে পরিবেশকর্মীদের অনেকেই পুরো বিষয়টিতে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন। বজ্রপাতের ফলে এতগুলি হাতিমৃত্যুর ঘটনা স্বাভাবিক নয়। তবে বনবিভাগ থেকে দাবি করা হয়েছে জঙ্গলের মধ্যে বাড়তে থাকা কংক্রিটের বাড়িগুলির জন্যই বজ্রপাতের ঘটনা অনেক বেড়ে গিয়েছে। আর এর ফলে সবচেয়ে বিপদে রয়েছে হাতিরাই। এই ৯টি করিডরে তাই কোনোভাবেই কংক্রিটের নির্মাণ তৈরির অনুমতি দেওয়া হবে না বলেও জানিয়েছে আসাম বনবিভাগ।
রহস্যজনক হাতিমৃত্যুর ঘটনার সমাধান না হলেও অরণ্য বাঁচাতে আসাম বনবিভাগের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছেন অনেকেই। জঙ্গলের মধ্যে মানুষের অবাধ যাতায়াতের ফলে বন্যপ্রাণ বিপন্ন। নির্দিষ্ট কিছু অঞ্চলে বাস্তুতন্ত্র সংরক্ষণের ব্যবস্থা থাকলেও হাতিদের বিভিন্ন ঋতুতে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়া স্বভাব। ফলে তাদের সঙ্গেই মানুষের প্রত্যক্ষ সংঘাত হয় সবচেয়ে বেশি। এক্ষেত্রে জঙ্গলের মাঝখানের করিডর দিয়েই তারা যাতায়াত করতে পারবে। সামগ্রিকভাবে হাতিমৃত্যুর ঘটনা হয়তো অনেকটাই কমানো সম্ভব হবে এভাবে।
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ভ্যাকসিন নিলেই মিলবে জয়েন্ট! করোনা রুখতে গাঁজাই হাতিয়ার ওয়াশিংটন স্টেটে