টাইটানিকের টেলিগ্রাফ যন্ত্র উদ্ধারের পরিকল্পনা গবেষকদের, কী ছিল শেষ বার্তা?

বিংশ শতকের গোড়ায় জলে নেমেছিল এই দৈত্য। কয়েক হাজার মানুষকে নিয়ে স্বপ্নের সাগরে পাড়ি দিয়েছিল সে। কত আশা, কত উত্তেজনা— কিন্তু সে সব আর পূর্ণতা পেল না। একটা সামান্য হিমবাহ সবকিছু শেষ করে দিল। সেই থেকে সমুদ্রের তলদেশে পড়ে রইল এক রূপকথা। তাকে নিয়ে নানা গল্প, নানা মিথ; একটা প্রেমের গল্পও তৈরি হল সেখানে। এইভাবেই লেজেন্ড হয়ে উঠল বিংশ শতকের স্বপ্ন ‘টাইটানিক’। এবার তারই শেষ মুহূর্তের টেলিগ্রাফ উদ্ধারের চেষ্টায় গবেষকরা। 

১৯১২ সালের এপ্রিল মাস। আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর রয়েছে টাইটানিক। রাতের বেলা; হঠাৎই ডেক থেকে দেখা গেল সামনে বিশাল বরফের চাঁই। আরেকটু স্পষ্ট হতে বোঝা গেল, একটা হিমবাহ। যেটুকু দেখা যাচ্ছে, জলের নিচে তার থেকেও অনেকটা বড়ো অংশ রয়েছে। কাজেই সাবধানে যেতে হবে। এরপর কী হয়েছিল, নতুন করে বর্ণনা করার প্রয়োজন নেই। এখনও সমুদ্রের তলদেশে সেই স্মৃতি নিয়ে পড়ে আছে টাইটানিকের ভাঙা অংশ। 

আর এই শেষের মুহূর্তের সঙ্গে জড়িয়ে ছিল কিছু টেলিগ্রাফিক বার্তাও। ১৪-১৫ এপ্রিলের ওই রাতে হিমবাহে ধাক্কা লাগার আগে ও পরে মোট তিনটি বার্তা পাঠায় জাহাজের অপারেটর। ‘হ্যালো বয়, ডাইনিং উইথ ইউ টুনাইট’; ‘উই হ্যাভ স্ট্রাক আ বার্গ’; এবং শেষে ‘কাম কুইক, ইঞ্জিন রুম নিয়ারলি ফুল’। টাইটানিকের শেষ তিনটে কথা এগুলোই। টেলিগ্রাফের এই বার্তা পৌঁছে গিয়েছিল কারপাথিয়া জাহাজে; কিন্তু আসতে অনেক দেরি হয়ে যায়। 

টাইটানিকের সেই টেলিগ্রাফগুলিই পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় গবেষকরা। তাঁদের মতে, হয়তো এখনও সমুদ্রের নিচে টাইটানিকের ভাঙা রেকে সেটা আছে। এর জন্য রোবটের সাহায্যও নেওয়া হতে পারে বলে জানাচ্ছেন তাঁরা। আদৌ হবে ইনা সেটা নিয়েও সংশয়। কারণ অনেক প্রত্নতাত্ত্বিকই চান না টাইটানিকের মূল কাঠামোটার ক্ষতি হোক। এমনিতেই কালের গ্রাসে হয়ত হারিয়ে যাবে। ভেতরের জিনিসপত্র বার করতে গেলে রেকের গায়ে গর্ত করে ঢুকতে হবে। সেক্ষেত্রে বড়ো ক্ষতির সম্ভাবনা। তবে রোবটের সাহায্যে এই কাজটি করা যাবে কিনা সেটাই দেখা হচ্ছে। সেটা হলে টাইটানিকের ভেতরের মূল টেলিগ্রাফ রুম ও সেই সংবাদগুলোও পাওয়া যাবে। সেই দিকেই নজর সবার… 

Powered by Froala Editor