তেষ্টায় ছাতি ফেটে যাচ্ছে। ঢকঢক করে খানিকটা জল খেয়ে নিলেন। কিন্তু সাবধান! আপনি প্লাস্টিক খাচ্ছেন না তো? হ্যাঁ, শুনতে অবাক লাগলেও সত্যি; পানীয় জলের সঙ্গেই আপনার শরীরে ঢুকতে পারে প্লাস্টিক। আর এমনটা ঘটছেও। অন্তত তেমনটাই দাবি গবেষকদের। প্রতিদিন আমাদের শরীরে একটু একটু করে ঢুকছে প্লাস্টিক। তার পরিমাণ যত অল্পই হোক, কয়েক বছরের মধ্যেই শরীরের অনেক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে এই প্লাস্টিকের জন্য। ২০১৯ সালেই এই সতর্কতা জানিয়েছিল বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আবারও একবার সেই আশঙ্কার কথা মনে পড়িয়ে দিলেন বিজ্ঞানীরা।
পানীয় জলে কীভাবে প্লাস্টিক মিশে যাচ্ছে, তাই নিয়েই চলেছে গবেষণা। আর এই গবেষণার শুরুতেই বিজ্ঞানীরা দেখিয়েছেন, শরীরে প্লাস্টিকের প্রভাব কতটা মারাত্মক হতে পারে। দেখা গিয়েছে, প্রতি বছর প্রায় ৮ ট্রিলিয়ন প্লাস্টিকের প্যাকেট ও অন্যান্য সরঞ্জাম জলের মধ্যে মিশে যায়। আর সেই জলই প্রক্রিয়াকরণের পর আমাদের কাছে আসে। প্যাকেটজাত হওয়ার আগে এরকম প্রায় কোনো ব্যবস্থাই নেওয়া হয় না, যাতে জল থেকে প্লাস্টিক অপসারণ করা যায়। আর এরকম প্রযুক্তিও খুব ব্যয়বহুল বলেই জানাচ্ছেন ওয়াসিংটন স্টেট ইউনিভার্সিটির গবেষক ইন্দ্রনীল চৌধুরী।
পরিত্যক্ত জলের মধ্যে মিশে থাকে নানা ধরনের অ্যাসিড ও লবণ। আর তার ফলেই প্লাস্টিক পলিমার ভেঙে গিয়ে ন্যানোপার্টিকল মেশে জলে। পরিশোধনের পর সেই অ্যাসিড এবং লবণ অপসারণ করা গেলেও প্লাস্টিকের কণাগুলো থেকেই যায়। আর এভাবেই আমাদের শরীরে প্রতিদিন ঢুকছে প্লাস্টিক। একমাসে পরিমাণটা কয়েক গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ২০ বছরের মধ্যেই অনেক দুরারোগ্য রোগের শিকার হতে পারি আমরা। তাই যেখানে সেখানে প্লাস্টিক না ফেলে সেগুলো পুনর্ব্যবহার করার কথাই বলছেন অধ্যাপক চৌধুরী। নাহলে আমাদের ফেলে দেওয়া প্লাস্টিকই আমাদের শরীরে বিষ হয়ে ঢুকবে।