দিল্লিতে মেট্রো সম্প্রসারণ, কাটা পড়ছে সহস্রাধিক গাছ

বিগত কয়েক বছর ধরেই দূষণে জেরবার রাজধানী। কার্বন নির্গমনই হোক কিংবা বায়ু দূষণের মাত্রা— এই মুহূর্তে পৃথিবীর সর্বোচ্চ দূষিত শহরের তালিকাতে প্রথমেই জায়গা করে নিয়েছে দিল্লি। কিন্তু তা সত্ত্বেও বিন্দুমাত্র টনক নড়েনি প্রশাসনের। এবার দিল্লি মেট্রোর এরোসিটি-তুঘলকাবাদ করিডোরের সম্প্রসারণের জন্য কাটা পড়তে চলেছে হাজারেরও বেশি গাছ। সম্প্রতি এই প্রকল্পকে সবুজ সংকেত দিল দিল্লির রিজ ম্যানেজমেন্ট বোর্ড। যা প্রকৃতিতে ভয়ঙ্কর প্রভাব ফেলবে বলেই অভিমত পরিবেশকর্মীদের।

পিএল-চতুর্থ প্রকল্পের অংশ হিসাবেই তৈরি করা হবে এই মেট্রোপথ। যা দিল্লি মেট্রো রেল কর্পোরেশনের দশম করিডোর। ২৪ কিলোমিটার দীর্ঘ করিডোরটি এরোসিটি থেকে মহিপালপুর, কিশানগড়, ইগনু, আনন্দময়ী হয়ে পৌঁছাবে তুঘলকাবাদে। সব মিলিয়ে গোটা টানেলটি নির্মাণের জন্য প্রয়োজন প্রায় ৪৫ হাজার বর্গ কিলোমিটার অঞ্চল। স্টেশন তৈরির জন্য আরও কাটা হবে আরও ১৫ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চলের বনভূমি।

‘সিলভার লাইন’ খ্যাত এই বিশেষ করিডোরটি আরাবল্লীর বাইরের প্রান্তের প্রসারিত শৈলশিরা বা রিজের মধ্যে দিয়ে সম্প্রসারিত হয়েছে। ফলে, এই অঞ্চলের গাছগুলি সংরক্ষিত বনভূমির মধ্যে পড়ে না। তা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ধরেই রিজ ম্যানেজমেন্ট বোর্ডের বিচারাধীন ছিল প্রকল্পটি। সম্প্রতি নতুন করে বোর্ড পুনর্গঠন করা হয়। তারপর এবার খাতায় কলমে সবুজ সংকেত পেল ডিএমআরসি। 

তবে এই বৃক্ষচ্ছেদন নিয়ে পরিবেশকর্মীরা সরব হলেও, দিল্লিজুড়ে কোনোরকম হেলদোল নেই সাধারণ মানুষের। হচ্ছে না কোনো প্রতিবাদও। সেইসঙ্গে নতুন করে ক্ষতিপূরণ হিসাবে বৃক্ষরোপণের কোনো প্রতিশ্রুতিও দেয়নি ডিএমআরসি। জানানো হয়নি বৃক্ষ প্রতিস্থাপনের কথাও। পরিবেশকর্মীরা জানাচ্ছেন, পাথুরে রিজ অঞ্চলের উষ্ণতা এমনিতেই খানিকটা বেশি থাকে স্বাভাবিকের থেকে। ফলত শুষ্ক আবহাওয়ায় এই অঞ্চলে ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে ভূগর্ভস্থ জলের আধার। দূষণ তো বটেই, পাশাপাশি বৃক্ষচ্ছেদনের ফলে আরও বাড়বে জলাভাব। ইতিমধ্যেই প্রশাসনিক স্তরে বৃক্ষ প্রতিস্থাপনের আর্জি জানিয়েছেন পরিবেশকর্মীরা। এখন দেখার শেষ পর্যন্ত রিজ ম্যানেজমেন্ট বোর্ড সেই আবেদনে সাড়া দেয় কিনা…

Powered by Froala Editor

Latest News See More