বহু সুসময় দুঃসময়ের সাক্ষী থেকেছে বুড়ো গাছটা। হাজার বছর ধরে জাপানের উপর দিয়ে কত ঝড় যে বয়ে গিয়েছে, তার কোনো হিসাব নেই। পরমাণু বোমার আঘাতে যেমন কেঁপে উঠেছে দ্বীপপুঞ্জের শরীর, তেমনই অসংখ্য ভূমিকম্প, জলোচ্ছ্বাসে প্রাণ হারিয়েছেন অনেকে। সেইসব সময়ের নীরব সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থেকেছে এই চেরি গাছ। আবার মানুষের কত আনন্দের সাক্ষী থেকেছে সে। কিছুদিন হল, এর মধ্যেই বসন্ত এসেছে। রঙিন ফুলের পোশাকে সেজে উঠেছে হাজার বছরের পুরনো চেরি গাছ। আর এই করোনা বিধ্বস্ত পৃথিবীতে সেই বর্ণময় স্মৃতি ঘেরা গাছটাই যেন বেঁচে থাকার আশা জাগাচ্ছে।
ফুকুশিমা দ্বীপের মিহারু জলপ্রপাতের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা এই চেরি গাছটির নাম তাকিজাকুরা। পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে পর্যটক আসে এই গাছটি দেখতে। বসন্ত কালে মানুষের ভিড়ে মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। তবে এ-বছর পর্যটকদের ভিড় নেই। তার কারণ করোনা ভাইরাস। সংক্রমণ এড়াতে শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখছেন মানুষ। সেইসঙ্গে জড়ো হয়েছে হতাশাও। কিন্তু এই হতাশা কাটিয়ে বেঁচে থাকার আশ্বাসও দিচ্ছে তাকিজাকুরা। সময় যত এগিয়ে যাবে, ততই তো এগোবে স্মৃতি। সুসময় আর দুঃসময় তার দুদিকের পাড়। দুই পাড়ে বাঁধা থেকেই তো এগোবে স্মৃতির স্রোত।
তাকিজাকুরা এখন জাপানের মানুষের বিশ্বাসের প্রতীক। অনেক সময়েই মানুষকে আশ্বাস দিয়েছে এই গাছ, জানাচ্ছেন গাছটির প্রতিপালক সিদাফুমি হিরাটা। তাঁর স্মৃতিতে এখনও জ্বলজ্বল করছে ২০১১ সুনামির স্মৃতি। সে বছর এই ফুকুশিমার বুকেই আছড়ে পড়েছিল সমুদ্রের ঢেউ। আবারও এক সুনামি আঘাত হেনেছে জাপানের বুকে। সেইসঙ্গে আছে করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক। স্মৃতিতে এইসব দুঃসময় তো থাকবেই। আবার রঙিন ফুলে সেই স্মৃতি ভরেও উঠবে।