স্বপ্নের উড়ান বোধ হয় একেই বলে। সালটা ২০১৬। বাংলাদেশ সরকারের 'স্কিলস ফর এমপ্লয়মেন্ট ইনভেস্টমেন্ট' প্রকল্পের আওতায় গ্রাফিক ডিজাইনের ওপর ছয় মাসের একটি কোর্স করার সুযোগ পান এক তরুণ। ২০১৭-র শুরুর দিকে আরো একটি কোর্স করেন। তারপর নিজেই শুরু করেন ফ্রিল্যান্সিং। ভালো আয়ও হচ্ছিল। ভাবলেন,তিনি যেমন সাফল্যের স্বাদ পেয়েছেন অন্যরাও তা পেয়ে দেখুক। যেমন ভাবা তেমন কাজ।
হ্যাঁ, কথা হচ্ছে মুহিউদ্দীন ফাহাদকে নিয়ে। ২০১৮ সালে 'ইনস্পায়ার্ড আইটি' নামে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন তিনি। এখন সেটি একটি ছোটোখাটো অফিসের রূপ নিয়েছে। ছয় জন কর্মচারীর এই অফিসে এখন শতাধিক শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে অনেকেই তাঁর কাছ থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে সফলতার মুখ দেখছেন। 'ফাহাদ ভাই' তাদের কাছে অনুপ্রেরণা, ভরসা।
সম্প্রতি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ব্যাচকে ইন্টার্নি করার সুযোগ দিয়েছিল তাঁর প্রতিষ্ঠান। প্রতিবছর তাঁরা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, অর্থনীতি, ইতিহাস ও সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র ছাত্রীদের ডিজিটাল মার্কেটিং ও গ্রাফিক ডিজাইনের ওপর প্রশিক্ষণ দেবেন। নারী শিক্ষার্থীরা অর্ধেক ফি দিয়ে সম্পূর্ণ কোর্স করতে পারবেন। প্রতিবন্ধীরা কোর্স করতে পারবেন বিনামূল্যে। আজকালকার অর্থসর্বস্ব দুনিয়ায় যা একপ্রকার বিরল উদ্যোগ।
এভাবেই একটু একটু করে স্বপ্ন ছোঁয়ার পথে ফাহাদ, যিনি এখন কারমাইকেল কলেজ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যথাক্রমে ফিন্যান্স ও মার্কেটিং বিভাগে স্নাতকোত্তর করছেন। তাঁর এই পরিশ্রমের স্বীকৃতি হিসেবে 'ইন্সপায়ার্ড আইটি' পেয়েছে রংপুর উদ্যোক্তা নেটওয়ার্কের সম্মাননা।
মানুষের ভালোবাসাকেই সঙ্গে নিয়ে এগোতে চান তিনি। বলেছেন, 'একদিন আমি হয়তো থাকব না। কিন্তু আমার ইন্সপায়ার্ড আইটি থাকবে। আমি যাদের গড়েছি তারা থাকবে। তারা আবার যাদের প্রতিষ্ঠা করবে তাদের ভিতরেও আমি থাকব।'