বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাসের নামের সূত্রে ‘বিষবৃক্ষের’ সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। কিন্তু যদি আপনার সামনে গোটা বিষবৃক্ষের বাগানটাই এসে হাজির হয়? না, কোনও হেঁয়ালি বা ধাঁধা নয়। সুদূর বিলেতে রয়েছে এরকম আস্ত একটি বাগান, যেখানে প্রতিটা গাছই বিষাক্ত। যা আমাদের জন্য অত্যন্ত ভয়ানক। ইংল্যান্ডের অ্যালউইক গার্ডেন সেজন্যই বিখ্যাত।
বাগানের কালো গেট পেরিয়ে ঢুকলেই দেখবেন চারিদিকে সবুজ গাছগাছালি। পাখি ডাকছে, ফুরফুরে হাওয়া দিচ্ছে। কিন্তু সেসবে বাগানের আসল রূপ ভুলে গেলে চলবে না। গেট পেরনোর আগেই সাবধানবাণী দেওয়া হবে। কোনোভাবে যেন অ্যালউইক গার্ডেনের কোনো গাছকে স্পর্শ করা, গন্ধ নেওয়া, খাওয়া চলবে না। আর সতর্কতা থাকবে নাই বা কেন? এখনও অবধি মোট ১০০ প্রজাতির বিষাক্ত গাছ রয়েছে যে সেখানে!
তবে এই বাগান আজকের নয়। ১৭৫০ সালে নর্থাম্বারল্যান্ডের প্রথম ডিউক হিউ পার্সি এই অ্যালউইক গার্ডেন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তবে শুরু থেকেই এটি ‘বিষাক্ত’ ছিল না। অন্যান্য বাগানের মতই মনোরম ছিল এটি। এখনও আছে অবশ্য। বিশাল বড় লাউঞ্জ, চেরি অর্কেড, রেস্তোরাঁ, ট্রি-হাউজ— কি নেই এখানে।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর এটি বন্ধ হয়ে যায়। তারপর দীর্ঘ বহু বছর পর, ২০০১ সালে এটিকে আবার সাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হয়। আর তারপরেই, ২০০৫ সালে এখানে তৈরি করা হয় ‘বিষাক্ত’ গাছের ভাণ্ডার। বাগানের একটা অংশে এটি তৈরি করা হয়েছে। গাইড ছাড়া এই অংশে কেউ প্রবেশ করতে পারে না। বেশ কয়েকবার দুর্ঘটনা ঘটে গেছে এখানে। সেজন্যই এই সতর্কতা। স্রেফ অ্যাডভেঞ্চারের নেশায় অনেকে এখানে আসেন। ঢোকেন এই সুন্দর বিষাক্ত আবহাওয়ায়। আপনিও যেতেই পারেন, তবে অবশ্যই, নিজের দায়িত্বে!