বিগত কয়েকদিন ধরে রাজ্য, জাতীয় মাধ্যমে বেশ কিছু ঘটনা উঠে এসেছে। সেসব নিয়ে আলোচনায় অত্যন্ত ব্যস্ত আমরা সবাই। যুক্তি-পাল্টা যুক্তির ফাঁকেই করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাচ্ছে। আর তা বাড়ছে দ্রুতগতিতে। আজ থেকে ঠিক নয়দিন আগে ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিন লাখের অঙ্ক ছুঁয়েছিল। এর মধ্যেই সেই সংখ্যা পৌঁছে গেল চার লাখে! এই মুহূর্তে এটাই ভারতের করোনা চিত্র।
লকডাউন শিথিল হয়েছে বহুদিন হয়ে গেল। রাস্তাঘাটে সেই চিরাচরিত ভিড়। তারই সুযোগে বেড়ে চলেছে করোনা সংক্রমণ। জুনের প্রথম দিন থেকে পরিসংখ্যান হিসেব করলেই ব্যাপারটি দেখা যাবে। যেখানে এক এক দিনে ১০ হাজার, ১২ হাজার আক্রান্তের সংখ্যা হয়ে যাচ্ছে। পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মৃত্যুও। গতকালও ১১ হাজার জন নতুন করে আক্রান্ত হলেন। একদিনে প্রায় ৩০০ জনের মৃত্যুও হল। কয়েকদিন আগেই একদিনে দুই হাজার জন মারা গিয়েছিলেন ভারতে। কিন্তু তাও খুব একটা চিন্তিত মনে হচ্ছে কি আমাদের? এরই মধ্যে গত পরশু, অর্থাৎ ১৯ তারিখ ভারতে একদিনে করোনা আক্রান্ত হলেন ১৪,৭২১ জন! একের পর এক রেকর্ড ভেঙে চলেছি আমরা। এতে আরও যে বিপদ ঘনিয়ে আসছে, সেটাই বারবার বলছেন ডাক্তাররা।
রাজ্যগুলোর মধ্যে মহারাষ্ট্র এখনও সমস্ত দিক থেকে এক নম্বরে। সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ছাড়িয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজারের গণ্ডি। আর পশ্চিমবঙ্গ? এখানে আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে ১৩ হাজার অতিক্রম করেছে। এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৫৪০ জন। শুধু কলকাতাতেই আক্রান্তের সংখ্যা সাড়ে চার হাজার। তারই মধ্যে কনটেনমেন্ট জোনের সংখ্যাও বাড়ছে। বৃহস্পতিবার অবধি রাজ্যে কনটেনমেন্ট জোন ছিল ১৯০৭ টি। শুক্রবার সেই সংখ্যা এক লাফে ২৪২৮-এ চলে যায়। এই সংখ্যাটাই বেড়ে চলেছে প্রতিটা মুহূর্তে। গ্রিন জোনগুলোও আক্রান্ত হচ্ছে নতুন করে।
তবে আশার কথা, সুস্থতার হারও বাড়ছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরের বুলেটিন অনুযায়ী, ৫৮ শতাংশ মানুষ করোনা মুক্ত হয়েছেন রাজ্যে। ভারতেও সুস্থ হয়েছেন দুই লাখেরও বেশি মানুষ। কিন্তু উল্টোদিকে আক্রান্তের সংখ্যা যে হারে বাড়ছে, তাতেই সমস্যা দেখছেন ডাক্তাররা। মাত্র আট-নয়দিনে নতুন করে এক লাখ মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন, এটাকে মোটেই হালকা চোখে দেখা উচিত নয়। অবশ্য তেমন ভাবনার সময়ই বা কোথায় আমাদের?
Powered by Froala Editor