প্রাণীজগতে খোলস বদলের উদাহরণ কম নেই। সাপ, মাকড়সার উদাহরণ তো আমাদের সকলেরই জানা। অনেকে আবার স্বচক্ষে দেখেওছেন। রাগের বশে অনেককে খোলস বদলের সঙ্গে তুলনাও হয়তো করেছেন। কিন্তু আক্ষরিক অর্থেই যদি কোনো মানুষ খোলস বদল করে! ছয় মাস অন্তর বদলে যায় শরীরের চামড়া! অবাক লাগছে শুনে? ওড়িশার জগন্নাথ প্রধানের অবস্থা তার থেকেও বেশি কষ্টকর, বেশি যন্ত্রণাদায়ক।
ওড়িশার গাঞ্জাম জেলার ১০ বছরের বালক জগন্নাথের এই উপসর্গ বছর কয়েক আগে থেকে শুরু হয়। আমাদের ত্বকের সাতটা স্তর থাকে। জলের মধ্যে অতিরিক্ত থাকলে, আঘাত পাওয়ার পর নতুন চামড়া গজালে বা অন্য কোনো কারণে অনেক সময় পুরনো চামড়া উঠে যায়। সেটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু জগন্নাথের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সম্পূর্ণ অন্য, এবং বেশ জটিল। ছোটো থেকে সব ঠিকঠাকই ছিল। হঠাৎ একদিন মা-বাবা দেখেন, জগন্নাথের শরীরের চামড়া ধীরে ধীরে শুকিয়ে যাচ্ছে। সঙ্গে তীব্র যন্ত্রণা। পুরো শুকিয়ে যাওয়ার পর চামড়া উঠে গিয়ে নতুন চামড়া সামনে উঠে আসে। মোটামুটি ছয় মাস পর আবার একই ঘটনা শুরু হয়। যতই চামড়া শুকিয়ে আসে, ততই কষ্ট বাড়ে জগন্নাথের। এমনকি চোখের পলকও ফেলতে পারে না…
ডাক্তার দেখালেও কিছু করা যায়নি। কারণ এই রোগটি অত্যন্ত বিরল; ডাক্তারি পরিভাষায় এর নাম ‘ল্যামেলার ইচথিয়োসিস’। এর চিকিৎসা করতে গেলে যথেষ্ট খরচ দরকার। আর সব হাসপাতালে সম্ভবও নয়। এদিকে সামান্য আয়ের সংসারে কীভাবে এতসব করবেন জগন্নাথ প্রধানের বাবা? জানেন না। তাই অসহায় চোখে চেয়ে থাকেন ছেলের দিকে। বড়ো বড়ো চোখে কাতরতা লেগে থাকে। সারাজীবন কি এমনভাবেই কাটবে জগন্নাথের? সে নিজেও জানে না এর উত্তর…
Powered by Froala Editor