পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ কানাডা। তার বিরাট সীমানার মধ্যে মানুষের জায়গা হবে না, এমনটা কি কল্পনা করা যায়? তবে সাম্প্রতিক পরিসংখ্যানে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য। একটি পরিবারের নিজস্ব ছোট্ট একটা বাড়ির জন্য যতটুকু জমি প্রয়োজন, তাও অপ্রতুল। ফলে স্বাভাবিকভাবেই বাড়ছে অ্যাপার্টমেন্টের চাহিদা। টরোন্টো, মন্ট্রিয়াল, ভ্যাঙ্কুভার, ওটাওয়া সহ প্রতিটা শহরেই ছবিটা একই। অন্তত ২০২০ সালের জমি আদানপ্রদানের পরিসংখ্যান তাই বলছে।
পৃথিবীর বাকি উন্নত দেশগুলিতে অ্যাপার্টমেন্টের রমরমা শুরু হয়ে গিয়েছে প্রায় ৫ দশক আগে থেকেই। তবে কানাডার মানুষ এখনও বাসস্থান বলতে ছোট্ট এক টুকরো জমির উপর ছিমছাম নিজস্ব বাড়িই বোঝেন। বিশেষ করে মধ্যবিত্তদের মধ্যে এই বাড়ির প্রতি টান প্রবল। ২০১৯ সালের হিসাবেই দেখা গিয়েছে যে সমস্ত মধ্যবিত্ত মানুষ নতুন বাসস্থান কিনেছেন, তাঁদের ৬০ শতাংশই কিনেছেন বাড়ি। আর ২০২০ সালের হিসাবটা সম্পূর্ণ উলটে গেল। গত বছর ৬০ শতাংশ মধ্যবিত্তই কিনেছেন অ্যাপার্টমেন্ট প্লট। আর বাড়ির জন্য জমির দামও হয়ে উঠেছে আকাশছোঁয়া।
স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠবে, প্রায় ১ কোটি বর্গকিলোমিটার আয়তনের দেশে মানুষের বাসস্থান না পাওয়া কি সত্যিই সঙ্গত? অনেকে ইতিমধ্যে শরণার্থীদের দায়ী করতে শুরু করেছেন এই সমস্যার জন্য। তৈরি হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক প্রোপাগান্ডাও। তবে জমি-বাড়ির ব্যবসায়ীরা সমস্যাটাকে এভাবে দেখতে রাজি নন। তাঁদের মতে, দেশে এখনও প্রচুর ফাঁকা জায়গা পড়ে আছে। সব মিলিয়ে বর্তমান জনসংখ্যার দ্বিগুণ মানুষ বাস করলেও প্রত্যেক পরিবারের জন্য একটি করে বাড়ি তৈরি সম্ভব। কিন্তু জায়গার সংকট দেখা দিয়েছে প্রথম সারির শহরগুলির আশেপাশের অঞ্চলে। অথচ কর্মসংস্থানের সুযোগ বেশি সেখানেই। তাই এই সমস্ত জায়গায় জমির চাহিদা আকাশছোঁয়া। তবে সরকারি উদ্যোগে যদি গ্রামাঞ্চলেও কর্মসংস্থানের উপযুক্ত ব্যবস্থা করা যায়, তাহলে পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
Powered by Froala Editor