ছোটো ছোটো বর্গক্ষেত্র দিয়ে তৈরি ছয় বাই পাঁচের একটি আয়তকার বাক্স। ঠিক যেন দাবার বোর্ড। তার মধ্যে কোনো খোপের রং সবুজ, কোনোটা আবার হলুদ বা ধূসর। সাম্প্রতিক সময়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ছবি প্রত্যক্ষ করেননি, এমন মানুষ খুঁজে পাওয়াই দুষ্কর। কথা হচ্ছে ওয়ার্ডেল (Wordle) নিয়ে। টুইটার, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রামে ঝড় তোলা এই ভাইরাল গেম এবার চলে গেল খ্যাতনামা মার্কিন সংবাদপত্র নিউইয়র্ক টাইমসের (NY Times) মালিকানায়।
তবে ভাইরাল হওয়া সত্ত্বেও, বহু মানুষ এখনও পর্যন্ত নিশ্চিত নন ওয়ার্ডেলের পরিচয়ের সম্পর্কে। কী এই ওয়ার্ডেল? দৈনিক সংবাদপত্রে শব্দছক বা ক্রসওয়ার্ড পাজল দেখেছেন নিশ্চয়ই? ওয়ার্ডেল তারই ডিজিটাল সংস্করণ। তবে পরিচিত শব্দছকের থেকে তার আকার এবং ধরন খানিকটা আলাদা। ওয়ার্ডেল মূলত খেলোয়াড়দের এলোমেলোভাবে নির্বাচিত পাঁচ অক্ষরের ছ’টি শব্দ অনুমান করার সুযোগ দেয়। তবে শুরুর শব্দ নির্ধারণে কোনোরকম সূত্র দেওয়া হয় না এই গেমটিতে। সবটাই খেলোয়াড়ের অনুমান নির্ভর। অবশ্য ভুল শব্দ নির্বাচণ করলে, তার এক বা একাধিক বর্ণ হলুদ রঙে রূপান্তরিত হয়। সেটাই একমাত্র ক্লু খেলোয়াড়ের কাছে।
সম্প্রতি, দাবানলের মতো এই গেমের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়লেও, মহামারীর শুরুর দিকেই জন্ম নিয়েছিল ওয়ার্ডেল। মহামারীকালীন নিঃসঙ্গতার সমাধান হিসাবেই এই গেম তৈরি করেছিলেন নিউ ইয়র্ক নিবাসী প্রযুক্তিবিদ হোসে ওয়ার্ডেল। শুরুতে জনপ্রিয়তা না পেলেও, রাতারাতি যে সাড়া ফেলে দেবে গোটা বিশ্বজুড়ে, তা স্বপ্নেও ভাবেননি তিনি।
তবে ফেসবুক, টুইটারের মাধ্যমে ভাইরাল হলেও, ওয়ার্ডেল খেলা যেত না সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে। সেটাই ছিল তার মূল সমস্যা। এতদিন পর্যন্ত শুধুমাত্র অনলাইনেই খেলতে হত এই গেম। নির্দিষ্ট ওয়েবসাইটে তৈরি করতে হত অ্যাকাউন্ট। ফলে, হ্যাকিং-এর আশঙ্কা যে একেবারেই ছিল না— তা বলা যায় না।
আরও পড়ুন
ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে রহস্যময় ‘জলদৈত্য’, সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল ছবি
ব্যাপক জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর গেমটির মালিকানা কিনে নেয় মার্কিন সংবাদ সংস্থা নিউ ইয়র্ক টাইমস। সম্প্রতি, নিজের সোশ্যাল মিডিয়া থেকে স্বয়ং এ-কথা জানিয়েছেন গেমটির স্রষ্টা হোসে ওয়ার্ডেল। আগামীদিনে নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওয়েবসাইটেই খেলা যাবে ওয়ার্ডেল। তাতে বাড়তি নিরাপত্তাও পাবেন গ্রাহকরা।
আরও পড়ুন
ইতালির রাস্তায় শাড়ি পরে ফটোশ্যুট, সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল বাঙালি যুবক
তবে আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে অন্য জায়গায়। প্রাথমিকভাবে নিউ ইয়র্ক টাইমসের ওয়েবসাইটে এই গেম বিনামূল্যে খেলা গেলেও, পরবর্তীতে তার জন্য টাকা গুনতে হবে খেলোয়াড়দের। এমনটাই মনে করছেন জনসাধারণের একাংশ। এই অনুমান সত্যি হলে, আদৌ কি তার জনপ্রিয়তা ধরে রাখতে পারবে ওয়ার্ডেল? সেই উত্তর দেবে সময়ই…
আরও পড়ুন
ফেলুদা-কাহিনির চরিত্রগুলির স্কেচ এঁকে ভাইরাল কলকাতার শিল্পী
Powered by Froala Editor