কাম, ক্রোধ না লীলা-মাহাত্ম্য— দুর্গা-মহিষ সংঘাতের প্রকৃত কারণ কী?

মহানবমী তিথি। রণাঙ্গনে মেতে উঠেছেন দুর্গা ও মহিষাসুর। দেবলোক, মর্ত্যলোক ত্রস্ত। সবাই প্রবল বিস্ময়ে, ভয়ে ও আশঙ্কায় দেখছেন যুদ্ধ৷ অস্ত্রের নিনাদে চমকে উঠছে ত্রিভুবন৷ 

অবশেষে বধ হল মহিষাসুর। 

এই কাহিনীর নেপথ্য-ইতিহাস খুঁজতে গেলে উঠে আসে অনেক বিস্ময়কর তথ্য৷ বাঙালি শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে যে যুদ্ধজয় উদযাপন করছে, কী কারণ ছিল সেই যুদ্ধের? এ ব্যাপারে নানা মুনির নানা মত, নানা শাস্ত্রে নানা কথা। আসুন, এবারের দুর্গোৎসবের (Durga Pujo) চূড়ান্ত লগ্নে এই বিষয়ে একটু বইপত্র ঘেঁটে দেখা যাক।

আমরা, দুর্গা-মহিষ (Devi Durga-Mahishasura) সংঘাত সম্পর্কে সম্পর্কে তিন ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি, কিংবা উপস্থাপন-ভঙ্গির কথা সংক্ষেপে বলব। এগুলিকে কালানুক্রমিক স্তর হিসাবে ভাবা যায় না কি না, সেটি পণ্ডিতেরা বিচার করবেন। 

এর মধ্যে এক নম্বর স্তর হচ্ছে সেটি, যেখানে যুদ্ধের কারণ হল 'ক্রোধ'।

এই শ্রেণির মূল টেক্সট মার্কণ্ডেয় পুরাণের অন্তর্গত দেবীমাহাত্ম্য— নামান্তরে দুর্গাসপ্তশতী, শ্রীশ্রীচণ্ডী। অন্যান্য টেক্সট শিব পুরাণ, ললিতোপাখ্যান প্রভৃতিতে বর্ণিত মহিষাসুরমর্দিনীর উপাখ্যান। অর্থাৎ এই স্তরটি মহাপুরাণ-ভিত্তিক। 

শ্রীশ্রীচণ্ডীর গুপ্তবতী টীকায় ভাস্কর রায় 'চণ্ডী' শব্দের ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন, 'পরব্রহ্মমহিষী'। এই স্তরে সেটিই দেবীর তাত্ত্বিক পরিচয়, তিনি আদ্যাশক্তি, পরমব্রহ্মের পট্টমহিষী। আবির্ভাবের পর তাঁর প্রকটলীলায়  অসুরবিনাশ ও দেবতা-রক্ষণের প্রাধান্য। বিবাহ কিংবা দাম্পত্য প্রকটভাবে তাঁর লীলায় দেখা যাচ্ছে না। এবং, ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও রুদ্রের পত্নীরূপা ত্রিশক্তি এই মহাদেবীতে অঙ্গীভূত। চণ্ডীর চতুর্থ অধ্যায়ের শক্রাদিকৃত স্তুতি মনে করুন। দেবতারা বলছেন, হে দুর্গে, তুমিই মেধা, তুমিই শ্রী, এবং তুমিই গৌরী। 

সিংহ এই আখ্যানমালায় দেবীর বাহন। মহিষাসুর একজন অধর্মাচারী নৃপতি। পিতৃব্যহত্যার প্রতিশোধ, সুরদ্বেষ ও অসুর জাতির উত্থানের জন্য তার ব্রহ্মার তপস্যা, সিদ্ধিলাভ, স্বর্গবিজয়। অবশেষে দেবীর বিরুদ্ধে তার সংগ্রাম ও মৃত্যু। যুদ্ধে দেবীর শস্ত্রপূত এই মৃত্যুতে তার ও অন্যান্য অসুরগণের দিব্যগতিলাভ। 

দুর্গা এবং মহিষের এই সংঘাত অবশ্যই সশস্ত্র সামরিক সংঘাত৷ শ্রীশ্রীচণ্ডীতে এর কারণ রাজনৈতিক। পরাজিত দেবগণের ভূমি (স্বর্গলোক) এবং বিভিন্ন পদ (ইন্দ্র আদির পদ), যা মহিষাসুরের নেতৃত্বাধীন অসুরবাহিনীর দ্বারা কবলিত হয়েছিল, তার পুনরুদ্ধারই দুর্গার ব্রত। 

দেব-অসুর গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে তিনি দেবপক্ষীয়, দেবগণের দেহনিঃসৃত তেজঃপুঞ্জ একত্রিত হয়ে তাঁর লীলাতনুর প্রকাশ, দেবগণের উপহার দেওয়া বসনভূষণ তাঁর অঙ্গে, তাঁর হাতে দিব্যাস্ত্রের সম্ভার। 

দেবীর আবির্ভাবের কারণ কী? ক্রোধ। ব্রহ্মার নেতৃত্বে পরাজিত দেবতারা যখন মহাদেব আর নারায়ণের কাছে মহিষাসুরের দুর্বিষহ অত্যাচারের বৃত্তান্ত শোনালেন, তখন হরিহরের দিব্যশরীরে প্রচণ্ড ক্রোধ জাগল। সেই ক্রোধ তেজঃপুঞ্জ রূপে প্রথমে বিষ্ণু, তারপর ব্রহ্মা, শিব ও দেবতাদের শরীর থেকে বেরিয়ে এল, এবং একত্রিত হয়ে দেবী দুর্গার শ্রীমূর্তিতে পরিণত হল। অর্থাৎ এই যে দেবীতনু, তা কিন্তু দেবমণ্ডলীর সম্মিলিত ক্রোধের একত্রিত মূর্তি! 

মহিষাসুর কেন সসৈন্যে দেবীকে আক্রমণ করল? শ্রীশ্রীচণ্ডীতে তার উত্তর, আবারও, ক্রোধ। নানাপ্রহরণ-ধারিণী দেবীর আকাশ-কাঁপানো অট্টহাসি শুনে ‘আঃ কীমিতি’ (আঃ! কী এসব?) বলে সম্ভাব্য প্রতিদ্বন্দ্বীর দিকে সেনাবাহিনী সাজিয়ে ধেয়ে গেল অসুররাজ। এবং, সদলে পরাস্ত ও নিহত হল।

দুই পক্ষের পরস্পরের প্রতি ক্রোধ, তা থেকেই সংগ্রাম, এবং পরিণতিতে দেবপক্ষের জয়, অসুরপক্ষের বিনাশ। ক্রোধে-ক্রোধে টক্করের এই কাহিনি আছে চণ্ডীতে, আছে শিবপুরাণে, আছে ব্রহ্মাণ্ডপুরাণের অন্তর্ভুক্ত ললিতোপাখ্যানে৷ শেষটিতে, পরমেশ্বরী ললিতার ক্রুদ্ধ অট্টহাস্য থেকেই দেবী দুর্গার আবির্ভাব, এবং অসুর-বিনাশ। 

এবার আসি দুই নম্বর স্তরে। যুদ্ধের কারণ যখন 'কাম'। 

বরাহপুরাণ, বামনপুরাণ, দেবীভাগবত পুরাণ এই শ্রেণিতে পড়বে। এই টেক্সটগুলির কাহিনিতে দেখা যাচ্ছে, লোকমুখে দুর্গার রূপযৌবনের বিবরণ শুনে কামতপ্ত হয়েছে মহিষাসুর, অনুচরদের মাধ্যমে সে দেবীর কাছে পাঠাচ্ছে মিলনপ্রস্তাব। তারপর দেবীর প্রত্যাখ্যান, মহিষাসুরের ক্রোধ, দুই পক্ষের যুদ্ধ এবং সসৈন্য অসুররাজের বিনাশ। 

এখানে ক্রোধের কারণ কেবল রাজনৈতিক নয়, কেবল ভূমি দখলের দ্বন্দ্ব নয়, ক্রোধের কারণ অবরুদ্ধ কাম। অনিচ্ছুক নারীর প্রতি ক্ষমতাবান পুরুষের লালায়িত কাম ও নারীর প্রত্যাখ্যানের ফলে উভয়ের মধ্যে জমে উঠেছে ক্রোধ। খলনায়ক ক্রুদ্ধ, কারণ নায়িকা তার পদমর্যাদা উপেক্ষা করেছে, তার কামবাসনাকে প্রতিরুদ্ধ করেছে। নায়িকাও ক্রুদ্ধ, কারণ খলনায়ক তার ইচ্ছা-অনিচ্ছার তোয়াক্কা না করে বলপূর্বক তাকে অধিকার করতে চাইছে। উভয়পক্ষীয় এই erotic tensuion এর ফলই সামরিক সংঘাত। অর্থাৎ গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব থেকে ব্যক্তিগত দ্বন্দ্বে সরণ।

এরপর আসবে তিন নম্বর শ্রেণীটি। মহিষাসুর হয়ে উঠবে শিবের অংশ। তবে সেখানে যাবার আগে একটি আড়াই চালের খেলা আছে। সেটি বাণভট্টের 'চণ্ডীশতক'। মহিষ কি শিব, নাকি শিব নয়- এই নিয়ে খানিক আলঙ্কারিক confusion তৈরী করেছেন এই রাজকবি। 

এই কাব্যের ১৪ নং শ্লোকে দেখি, অসুরদলনের পর নির্জনে চলছে হরগৌরীর প্রেমালাপ। শিব বলছেন, দেবী, আগে তোমাকে 'মহিষী' বলে ডাকতাম, আর তো সেই ডাক চলবে না! অর্থাৎ, আগে তোমাকে আমার কৈলাসরূপ সাম্রাজ্যের অধীশ্বরীজ্ঞানে 'মহিষী' বলতাম, কিন্তু 'মহিষী' মানে যে মহিষের স্ত্রীও হয়, এখন আর তোমাকে ওই নামে কী করে ডাকি, হে মহিষমর্দিনী? শিবের এই পরিহাসোক্তি শুনে, কাত্যায়নী ঈষৎ লজ্জা পেলেন। মহিষাসুরের সঙ্গে তাঁর দাম্পত্য-সম্ভাবনার এমন একটা কৌতুকপূর্ণ ইঙ্গিত স্বামীর মুখে শুনে, দেবীর লজ্জা তো স্বাভাবিক! 

৭৬ নং শ্লোকের দিকে তাকানো যাক। এখানে দুর্গার প্রতি মহিষাসুরের উক্তি, দেবী, আমার দিকে তাকিয়ে ভ্রূকুটি করছ কেন, আমি তো তোমার পিনাকী নই! যে তোমার প্রতিদ্বন্দ্বিনী নারীদের সঙ্গে গোপনে গোপনে কেলি করতে অভ্যস্ত, সেই শিব তো আমি নই, তাহলে আমার দিকে অমন রাগতভাবে ভ্রূ কুঁচকে তাকাচ্ছ কেন, ভদ্রে? লক্ষ করুন, দুর্গার সমর-ক্রোধকে মহিষাসুর সকৌতুকে প্রণয়-ক্রোধের সাথে এক করে দিচ্ছেন, আর বলছেন, আমি তোমার এই ভালোবাসা-ভরা রাগের পাত্র হব কী করে, আমি তো তোমার শিব নই! 

৭৭ নং শ্লোকে মহিষাসুর দেবীকে বলছেন, হে ভদ্রে, আমি কামতপ্ত হয়ে ক্রীড়াচ্ছলে তোমার সাথে আলিঙ্গনসুখ পাব বলে এসেছি, আমাকে তোমার ‘ঈশ’ বলেই মনে করো! ‘ঈশ’ কথার এক অর্থ প্রভু, পতি, নাথ, অর্থাৎ মহিষ হতে চান দুর্গার দাম্পত্য-পতি, সুন্দরী এক নারীর প্রভু। আবার, ‘ঈশ’ শিবের নামান্তরও বটে, অর্থাৎ মহিষাসুর নিজেকে শিবের স্থানে প্রতিস্থাপিত করতে চান। এই দুই ইচ্ছা, এক শব্দের আড়ালে ব্যক্ত। 

এই যে, দুর্গা তো শিবানী, মহিষপত্নী মহিষী তো নন! মহিষ তো আর দুর্গার পতি শিব নয়! এই 'না' থেকে সরে এসে— মহিষকে শিব বলেই ভেবে নাও, এই 'হ্যাঁ'-তে প্রবেশ করার একটা কাব্যিক ইতিহাস আমরা চণ্ডীশতকে দেখতে পেলাম। 

এবার তিন নম্বর স্তরে আসি, যেখানে দুর্গা-মহিষ দ্বন্দ্ব শিব ও শক্তির গূঢ় লীলা৷ 

এই স্তরের ভিত্তি শাক্ত উপপুরাণ ও শাক্ত তন্ত্র। এই স্তরে দেবী স্পষ্টভাবে রুদ্রমহিষী। তিনি হিমাচলসুতা পার্বতীর সঙ্গে একীভূতা, তিনি কৈলাসবাসী রুদ্রের ধর্মপত্নী। স্বভাবতই রুদ্রাণী পরিচয়টি প্রধান হয়ে ওঠায় ব্রহ্মাণী ও নারায়ণী আর তাঁর অঙ্গীভূতা হয়ে নয়, লক্ষ্মী ও সরস্বতী স্বরূপে পার্শ্বদেবতা (লোকবিশ্বাস অনুসারে কন্যা) হয়ে অবস্থান করছেন, এবং উমা-মহেশ্বরের দুই পুত্র কার্তিক ও গণপতিও দুর্গার পুত্র ও পার্শ্বদেবতার স্থান পেয়েছেন। 

এই স্তরে, সিংহ বিষ্ণুতত্ত্ব এবং মহিষাসুর শিবতত্ত্বরূপে পূজিত। কালিকাপুরাণ ও মহাকাল সংহিতা, যোগিনীতন্ত্র, কালীবিলাস তন্ত্র প্রভৃতি গ্রন্থাদি পশ্য। বিষ্ণুর নৃসিংহ অবতারের সিংহমুখ ও হয়গ্রীব অবতারের অশ্বমুখ (বাংলার শিল্পে সিংহের আকৃতি প্রায়শ অশ্ব-অনুরূপ)— গবেষকরা এই দুটি অনুপ্রেরণার কথা ভাবতে পারেন। মহিষের শিবতত্ত্ব হয়ে ওঠার একটি সম্ভাব্য (শাস্ত্রীয় নয়, মনস্তাত্ত্বিক। বলে রাখলাম) ব্যাখ্যা হতে পারে— বীরাচারী সাধক, যিনি দেবীকে প্রিয়াভাবে লাভ করার সাধনায় শরীরপাত অবধি করতে কুণ্ঠিত নন, মহিষের এই চরিত্রায়ণের সঙ্গে তিনি আত্ম-সাদৃশ্য খুঁজে পেতে পারেন। 

আচ্ছা, কালিকা পুরাণের গল্পটা বরং অল্প করে শুনে নেওয়া যাক! এই কাহিনিটি বেশ অদ্ভুত! কালিকা পুরাণ মতে, রম্ভাসুর পুত্রলাভের জন্য দেবাদিদেব মহাদেবের আরাধনা করেছিল। মহেশ্বর যখন বর দিতে এলেন, রম্ভাসুর বলল, “হে দেবাদিদেব, আমি চাই আপনি স্বয়ং আমার পুত্ররূপে জন্মগ্রহণ করুন। আমাকে এমন পুত্রলাভের বর দিন, যে হবে সকল প্রাণীর অবধ্য, যে দেবতাদেরও পরাস্ত করার ক্ষমতা রাখবে। আমি এমন পুত্র চাই, যে হবে দীর্ঘজীবী, যশস্বী এবং লক্ষ্মীবন্ত।” 

ভক্তের প্রার্থনা স্বীকার করলেন মহাদেব, তাকে বর দিলেন, “তুমি যে ইচ্ছা প্রকাশ করেছ, তাই হবে। আমি নিজে আসব তোমার পুত্র হয়ে।”

অতঃপর, এক যুবতী মহিষীর সঙ্গে মিলিত হলো রম্ভাসুর, আর সেই মহিষীর গর্ভে মহাদেবের অংশজাত পুত্রের জন্ম হল। এই পুত্রই দেবতাদের ত্রাস, স্বর্গজয়ী বীর মহিষাসুর। 

কালিকাপুরাণ আরও বলেছেন, সিংহরূপী নারায়ণ দেবীর দক্ষিণচরণ বহনে ক্লান্ত, তাই বুঝি মহিষরূপী মহেশ্বর দেবীর বাম চরণখানি বুকে তুলে নিলেন! এই যে নিত্যকাল দেবীর সঙ্গে সংলগ্ন অবস্থায় দেবীর পূজার ভাগ পাওয়া, এ সৌভাগ্য আর কোনো অসুরের হয়নি, কেবল মহিষাসুরই এই প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন, কারণ, তিনি যে স্বয়ং শিব! 

শাক্ত সম্প্রদায় দেবীভাগবতকে মহাপুরাণ হিসাবে প্রস্তাব করেন। লক্ষ করবেন, দুর্গা-মহিষ-সিংহের তাত্ত্বিক পরিচয়ের ক্ষেত্রে দেবীভাগবতের বর্ণনা প্রথম স্তরের মহাপুরাণ-মণ্ডল অনুসারী, তৃতীয় স্তরের মতো নয়। অবশ্য পরে শ্রীশ্রীচণ্ডী ও দেবীভাগবত উভয় গ্রন্থের টীকাতেই টীকাকারেরা তৃতীয় স্তরের গ্রন্থাবলির প্রমাণ তুলে তদনুযায়ী লীলা-ব্যাখ্যা করেছেন। 

আচ্ছা, বাঙালির প্রাণের ঠাকুরাণী দক্ষিণাকালীর সঙ্গে এই দুর্গা-মহিষ দ্বন্দ্বের কোনো সম্পর্ক নেই? আছে, আছে। যোগিনীতন্ত্রের সেই গল্পটা বলে, আজকের মতো লেখা শেষ করি।

একদা শিব আর শক্তির মধ্যে একচোট বাগযুদ্ধ হয়ে যাবার পর, শিব নিজের দেহভস্ম থেকে সৃষ্টি করলেন এক ভয়াল অসুর, তার নাম ঘোর। ঘোরাসুর শক্তিকে কামপ্রস্তাব দিল, দেবী উত্তরে দিলেন যুদ্ধ-প্রস্তাব। কোটি কোটি বছর ধরে অতি ভয়ঙ্কর সংগ্রামের পর, শক্তি বিরাট বিপুল কালীমূর্তি ধারণ করে লোলজিহ্বা বার করে ঘোরাসুরকে গিলে ফেললেন। 

তখন, ভীত সন্ত্রস্ত শিব বললেন, দেবী, আমাকে তোমার চরণতলে আশ্রয় দাও। তোমার ওই পাদপদ্ম আমি হৃদয়ে ধারণ করতে চাই।

কালী বললেন, উত্তম, তোমার অংশজাত মহিষাসুরের সাথে সংগ্রামের পর, আমি আমার বামপদের অঙ্গুষ্ঠ তার বুকে স্থাপন করব। এখন এসো, আমার চরণতলে ঠাঁই নাও। 

এই বলে, কালী শিবের বুকে স্থাপন করলেন তাঁর দক্ষিণচরণ। শিবারূঢ়া এই দক্ষিণাকালীই বাঙালির হৃদয়ের ধন শ্যামা মা।

আচ্ছা, আজ তবে এই পর্যন্তই। দুর্গা দুর্গা!

Powered by Froala Editor