১৯৫০ সালে ফিফা বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেয়েছিল ভারত। তবে বুট পরে খেলতে রাজি না হওয়ায়, হাত ছাড়া হয়ে যায় সে-সুযোগ। বিদেশে দল পাঠানোর মতো যথেষ্ট আর্থিক স্বচ্ছলতাও ছিল না এআইএফএফ-এর। তারপর ৭ দশক পেরিয়ে গেলেও, আর সেই সুযোগ ফিরে আসেনি ভারতের কাছে। বিশ্বকাপে মাঠ দাপানো এখন এ-দেশের মানুষের কাছে স্বপ্নের মতোই। তবে ভারত না খেললেও, বিশ্বকাপের (World Cup) মাঠে দেখা যাবে এক ভারতীয়ের সক্রিয় অংশগ্রহণ।
বিনয় মেনন (Vinay Menon)। কাতার বিশ্বকাপে বেলজিয়ামের জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের মানসিক এবং শারীরিকভাবে তরতাজা রাখার দায়িত্ব সামলাবেন কেরলের এর্নাকুলামের এই বাসিন্দা। কেরলের ছোট্ট গ্রাম চেরাই থেকেই উড়ান শুরু হয়েছিল বিনয়ের। ছোটো থেকেই ঝোঁক ছিল খেলাধুলোয়। স্বপ্ন ছিল ফুটবল। পণ্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিজিক্যাল এডুকেশনে স্নাতকোত্তর ও এমফিল ডিগ্রি লাভের পর শরীরচর্চার প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন তিনি। প্রথমে দক্ষিণ ভারতের কয়েকটি রিসর্টে প্রাইভেট ট্রেনার হিসাবে কাজ করেন বিনয়। তারপরই হাতের মুঠোয় চাঁদ পাওয়া যেন।
হ্যাঁ, চাঁদই বটে। খ্যাতনামা ইপিএল ক্লাব ‘চেলসি’-র খেলোয়াড়দের দায়িত্ব পেলে কে না খুশি হবে? তবে শুধু ইপিএলই নয়, উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং সুপার কাপেও চেলসিকে সঙ্গ দিয়েছেন তিনি। ২০১২ ও ২০২১-এর চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জয়ের নেপথ্যেও রয়েছেন তিনি। বলতে গেলে ইউরোপের এই ক্লাবের সঙ্গে অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক তাঁর।
এবার কাতার বিশ্বকাপে তাঁকে এই একই ভূমিকায় দেখা যাবে বেলজিয়াম স্কোয়াডে। রোমেলা লুকাকু, থিবো কোর্তোয়া, কেভিন ডিব্রুইন কিংবা ইডেন হ্যাজার্ডের মতো তারকাদের সঙ্গে রীতিমতো ভালো সম্পর্ক বিনয়ের। চেলসিতে খেলার সময়, তাঁর ছত্রছায়ায় ট্রেনিং নিয়েছেন এইসব তারকা ফুটবলার। ফলে, নতুন করে সেতুবন্ধনের কাজ করতে হয়নি তাঁকে। বরং, তুষের আঁচেই আগুন জ্বালানোর প্রস্তুতি করছেন তিনি।
সাম্প্রতিক সময়ে ফিজিক্যাল ফিটনেসের পাশাপাশি যথেষ্ট প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে ফুটবলারদের মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টিও। খেলার মাঠে যাতে তাঁরা সেরাটা উজাড় করে দিতে পারেন, সয়ে যেতে পারেন প্রবল মানসিক চাপ— সেটাই দেখাশোনা করছেন বিনয়। লড়াই কঠিন। তবে ফুটবল-যুদ্ধের ময়দানে উপস্থিত সকল ভারতীয়রা তাঁর সঙ্গে গলা ফাটাবেন বলেই আশাবাদী কেরলের ওয়েলনেস ট্রেনার…
Powered by Froala Editor