খারিজ হয়ে গেল সংরক্ষণের প্রস্তাব, আশঙ্কায় বেঙ্গালুরুর একমাত্র তৃণভূমির ভবিষ্যৎ

দীর্ঘ এক দশক ধরেই চলছিল লড়াই। তবুও হল না শেষরক্ষা। বেঙ্গালুরুর হেসারাঘাটা তৃণভূমি সংরক্ষণের আবেদন খারিজ করে দিল কর্ণাটকের রাজ্য বনদপ্তর। রাজ্য বন বিভাগ ও পশুপালন বিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের বেঞ্চে উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বি এস ইয়েদিয়ুরাপ্পাও।

বিগত কয়েক দশকে কমতে কমতে বর্তমানে এই তৃণভূমির আয়তন এসে ঠেকে ৫০১০ একরে। তবে সবুজের অবশিষ্টাংশের সংরক্ষণের জন্যই দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন পরিবেশকর্মীরা। দীর্ঘদিনের প্রচেষ্টায় স্থানীয় বাসিন্দাদেরও রাজি করিয়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের থেকে সম্মতি আদায় করেই সংরক্ষণের জন্য রাজ্যস্তরে জমা দেওয়া হয়েছিল ডেপুটেশন। 

গত মঙ্গলবার আয়োজিত সভায় কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী জানান, সংরক্ষণ করলে উচ্ছেদ করতে হবে গ্রামবাসীদের। আর সেই কারণেই সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে আসছে সরকার। তবে এই অঞ্চলের বিধায়কের মতে পশুপালন এবং বাজরা চাষের জন্য বহুল ব্যবহৃত হয় এই অঞ্চলটি। কাজেই সংরক্ষণ করা হলে বন্ধ হয়ে যাবে অনেক মানুষের উপার্জনের পথ। পাশাপাশি মাদুরাই যাওয়ার একমাত্র ফিডার সড়কপথও যোগাযোগবিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে।

যদিও এসবের মধ্যেই জমাট বাঁধছে অন্য বিতর্ক। হেসারাঘাটা তৃণভূমির গা ঘেঁষেই রয়েছে সেরাম ইনস্টিটিউট সহ একাধিক বাণিজ্যিক সংস্থার শাখা ও কারখানা। ফলে অঞ্চলটি রয়েছে বিশেষ বাণিজ্যিক গুরুত্ব। আর সেই কারণেই সংরক্ষিত করছে চাইছে না প্রশাসন। একেবারে ফেলে দেওয়ার মতো নয় এই অভিযোগ। কারণ এই তৃণভূমিতে ফিল্ম সিটি নির্মাণের কথাও বেশ জোরালো হয়েছিল বেশ কিছুদিন আগেই।

আরও পড়ুন
দেশের প্রথম পলিনেটর পার্ক, ৪০টির বেশি প্রজাতি সংরক্ষণের উদ্যোগ

সেই জায়গাটাতেই আশঙ্কা প্রকাশ করছেন পরিবেশকর্মীরা। দিনে দিনে ছোটো হতে থাকা তৃণভূমির ভাগ্য যেন আরও অনিশ্চিত হয়ে গেল প্রশাসনের সিদ্ধান্তে। আজ বাদে কাল নির্মাণ প্রকল্পের জন্য এই অঞ্চলকেই পুঁজিবাদীরা বেছে নিলে ভয়ঙ্করভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে জীববৈচিত্র্য। একদিকে যেমন কাটা পড়বে বিরল প্রজাতির বেশ কিছু গাছ, বাসস্থান হারাবে প্রাণীরা তেমনই শীতকালে পুরোপুরিভাবেই বন্ধ হয়ে যাবে পরিযায়ী পাখিদের আনাগোনা। যা প্রভাবিত করবে পরিবেশের ভারসাম্যকে...

আরও পড়ুন
ভারতের প্রথম মস সংরক্ষণ ও প্রদর্শনীর বাগান তৈরি নৈনিতালে

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
পিকনিক স্পটে বটগাছের ঝুরি সংরক্ষণ, অভিনব উদ্যোগ বাংলার পরিবেশ কর্মীদের

More From Author See More