রাতের আকাশে উজ্জ্বল চাঁদের বুকে কালো কালো দাগ দেখে মনে মনে কল্পনা সাজান অনেকেই। সেই কতকাল আগে চাঁদের বুড়ির গল্প জন্ম নিয়েছিল এইভাবে। তবে এখন আমরা জানি, চন্দ্রপৃষ্ঠে নানা ছোটোবড়ো পাহাড়ের অস্তিত্বের জন্যই এইসব অংশ অন্ধকার থাকে। সূর্যের আলোর যে সামান্য অংশ সেখানে পৌঁছয়, সেটুকু আর পৃথিবী পর্যন্ত আসে না। চাঁদের মধ্যেও আছে পৃথিবীর মতোই পাহাড়। কেমন তাদের রূপ, কেমন চেহারা সেসব সম্বন্ধে অবশ্য সাধারণ মানুষ জানেন না কিছুই। জানার কৌতূহল অবশ্য আছে। সাধারণ মানুষের সেই কৌতূহলের নিবৃত্তি করল নাসা। প্রকাশ্যে এল চাঁদের বিস্তারিত মানচিত্র। ঠিক পৃথিবীর মানচিত্র যেমন দেখি আমরা।
দীর্ঘ পঞ্চাশ বছর পর আবার চাঁদের বুকে মানুষের অভিযানের প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশ্বব্যাপী করোনা আতঙ্কের মধ্যেই নাসার এই অভিযানকে ঘিরে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। মহাকাশ বিজ্ঞানীদেরও যেন নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় নেই। আগের থেকে অনেক বেশি তথ্য জানা যাবে এই অভিযান থেকে, এমনটাই আশা করছেন বিজ্ঞানীরা। তাই প্রস্তুতিও চলছে সেভাবেই। এর মধ্যেই শুক্রবার প্রকাশিত হল চাঁদের মানচিত্র। নাসাকে এই কাজে সহযোগিতা করেছে টেক্সাসের লুনার প্ল্যানেটরি ইনস্টিটিউশন এবং অ্যারিজনার অ্যাস্ট্রজিওলজি সায়েন্স সেন্টারের বিজ্ঞানীরা। টপোগ্রফির মাধ্যমে এই মানচিত্র চন্দ্রপৃষ্ঠের চেহারা দেখা যাচ্ছে। চাঁদে জল নেই, তাই সমুদ্রের কোনো অস্তিত্ব নেই। যা আছে তা হল অসংখ্য পাহাড় এবং খাদ। এই মানচিত্রের মধ্যেও তাই এক অদ্ভুত আলোছায়া খেলা করে যায়।
পঞ্চাশ বছর আগে অ্যাপোলো মিশনে প্রথমবার চাঁদের বুকে পা রেখেছিলেন নীল আর্মস্ট্রং এবং এডুইন অলড্রিন। চাঁদের চেহারা সম্পর্কে প্রত্যক্ষ তথ্য জানা গিয়েছিল সেই প্রথম। অ্যাপোলো মিশনের সেইসব ছবি আর পরবর্তীকালে নানা উপগ্রহ থেকে তোলা ছবির তুলনামূলক বিচার পদ্ধতির সাহায্যেই এই মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। তবে শুধুই সাধারণ মানুষের মনোরঞ্জনের জন্য এই কাজ করেননি তাঁরা। বরং আগামী দিনে সফল চন্দ্র অভিযানের উদ্দেশ্যেই এই কাজটি করেছেন তাঁরা। চাঁদের বুকে রকেট প্রেরণ থেকে মানুষের চলাফেরার যাবতীয় কর্মকাণ্ড পরিকল্পনা করতে এই মানচিত্র যে অনেকটাই সাহায্য করবে, সেকথা বলাই বাহুল্য।