ভারতে বর্ষার মরসুম শুরু হয়ে গেছে। কলকাতা তো বটেই, দেশের অনেক জায়গায় কখনও হালকা কখনও আবার ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বাদ নেই রাজধানী দিল্লিও। আর সেখানেই ঘটল বিপত্তি। ভারী বৃষ্টির কারণে ভেঙে পড়ল ঐতিহাসিক মুবারক বেগম মসজিদের লাল গম্বুজ। পরিস্থিতি সামলে নিলেও, বাকি মসজিদের স্বাস্থ্য ঠিক আছে কিনা তা নিয়ে দুশ্চিন্তায় ঐতিহাসিকরা।
এই দুশ্চিন্তা স্বাভাবিক। কারণ ভারতের মুসলিম শাসনের ইতিহাসে খুব কম মসজিদই আছে যাঁদের মূলে কোনো নারী আছেন। আর মুবারক বেগমও কম আকর্ষণীয় চরিত্র নন। জন্মেছিলেন এক ব্রাহ্মণ ঘরে; সেখান থেকে চলে আসা দিল্লিতে। তারপর তাঁর জীবনে ঠিক কী হয় সেই সম্পর্কে খুব বেশি জানা না গেলেও এটা জানা যায় যে তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন এবং নাম হয় ‘মুবারক বেগম’। নাচে বিশেষ পারদর্শী হওয়ার জন্য সুন্দরী মুবারককে দিল্লির মুঘল প্রাসাদের বাইজি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়। সময়টা উনবিংশ শতকের একদম গোড়ার দিক। তখন মুঘলরা ইংরেজদের হাতের পুতুল। সেই সময়ই ডেভিড অক্টারলোনির সঙ্গে আলাপ হয় মুবারক বেগমের। ধীরে ধীরে দুজনের প্রণয় সম্পর্ক গভীর হয়; অতঃপর বিয়ে। এক ধাক্কায় মুবারকের ক্ষমতা বেড়ে যায় অনেকগুণ।
মনে করা হয় সেই সময়ই এই মসজিদটি তৈরি করে দিয়েছিলেন ডেভিড অক্টারলোনি। আবার কিছু ঐতিহাসিক মনে করেন, মুঘল রাজপুরুষই মুবারককে দুটি জিনিস তৈরি করে দেন— একটি হল এই মসজিদ, অন্যটি হল ‘মুবারক বাগ’ নামে একটি বাগান। সেটির এখন আর কোনো অস্তিত্ব নেই। কিন্তু লাল বেলেপাথরের তৈরি এই মসজিদটি এখনও তার দৃপ্ত ভঙ্গি নিয়ে দিল্লিতে মাথা উঠিয়ে আছে।
সেই মসজিদটিরই মূল গম্বুজ এদিন বৃষ্টির তোড়ে সম্পূর্ণ ভেঙে পড়ে। ঐতিহাসিক উইলিয়াম ডালরিম্পলের টুইট থেকে এই কথা জানতে পারেন সবাই। ইতিমধ্যেই দিল্লি ওয়াকফ বোর্ডের তরফ থেকে মেরামতের কাজ শুরু হয়ে গেছে। মসজিদের পরবর্তী স্বাস্থ্যপরীক্ষাও যাতে করা হয় তার জন্যও আবেদন করেছেন অনেকে।
আরও পড়ুন
দিল্লিতে করোনায় আক্রান্ত ৪৭ লক্ষ মানুষ! নতুন সমীক্ষায় চাঞ্চল্য
Powered by Froala Editor