রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন এক সম্ভ্রান্ত বৃদ্ধা। না, ভিখারি বলে ভুল হবে না কখনোই। বরং আভিজাত্যের চেহারাই প্রকাশ পাচ্ছে চেহারা থেকে। কিন্তু শুনলে অবাক হতে হয়, তাঁর কাছে নাকি একটিও কানাকড়ি নেই। আজ নয়, বিগত ২৫ বছর ধরে এভাবেই অর্থশূন্য জীবন যাপন করে চলেছেন জার্মানির হাইডেরমারি শোয়ারমার। শুধু তাই নয়, পৃথিবীর সমস্ত মানুষকে অর্থশূন্য জীবনযাপনের জন্য উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন তিনি।
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে জন্ম শোয়ারমারের। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে দেখেছেন কীভাবে কপর্দকশূন্য হয়ে এক দেশ থেকে আরেক দেশে আশ্রয় খুঁজে বেড়াচ্ছেন মানুষ। চিলির মানুষের চরম দারিদ্র্যের চেহারাও তিনি দেখেছেন। আর তখন থেকেই তাঁর মনে হতে থাকে, দারিদ্র্যের মূলে আসলে সম্পদ নেই, আছে অর্থ। সম্পদকে অর্থের মাপকাঠিতে বিচার করাই বৈষম্য সৃষ্টি করে।
এরপর একাধিক ঝড়ে টালমাটাল হয় শোয়ারমারের জীবন। বিবাহ-বিচ্ছেদ হল। বিচ্ছেদ হল সন্তানদের সঙ্গেও। আর এমন সঙ্গীহীন অবস্থাতেই নতুন করে জীবন শুরু করার কথা ভাবতে থাকেন শোয়ারমার। আর সেই জীবন থেকে বাদ দিয়ে দেন একটা জিনিস, অর্থ। বিনিময় প্রথার মাধ্যমেই নিজের সমস্ত প্রয়োজনীয় জিনিস সংগ্রহ করতে শুরু করেন। প্রথমে অবশ্য ভেবেছিলেন, বেশিদিন পারবেন না এভাবে। কিন্তু সেই আত্মবিশ্বাসের অভাব ভেঙে দিল বাস্তব পরিস্থিতি। ১৯৯৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত একইভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। এমনকি একাধিক বইয়ে, টিভি প্রোগ্রামে বারবার মানুষকে এই আপাত পুরনো অথচ নতুন জীবনে অভ্যস্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়ে চলেছেন।
Powered by Froala Editor