জার্মান কোড সমাধান করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকে চার বছর কমিয়ে দেন এই গণিতবিদ

আজকের এই ডিজিটাল দুনিয়ায় ফোন বা কম্পিউটার চালাতে গিয়ে ক্যাপচা রিকগনিশনের সম্মুখীন আমরা সকলেই হয়েছি। যেখানে পরীক্ষা করা হয় আমরা রোবট নাকি মানুষ। আসলে যন্ত্র বা রোবটের ক্যাপচা-র স্মল ও ক্যাপিটাল লেটারের মিশ্রণ কিম্বা কোনো সংখ্যা যাচাই করার ক্ষমতা থাকে না। বিভিন্ন চতুর প্রশ্ন অর্থাৎ যেখানে বুদ্ধিমত্তার প্রয়োজন পড়ে তার উত্তর যন্ত্র দিতে পারে না। ধরা যাক, মায়ের গায়ের গন্ধ কেমন বা প্রথম চুম্বনের অনুভূতি? এসবের উত্তর দেওয়া যন্ত্রের কম্ম নয়। মানুষ আর যন্ত্রের মধ্যে মূল তফাৎ এখানেই যে মানুষের মতো চিন্তাশক্তি বা অনুভব ক্ষমতা যন্ত্রের নেই। কিন্তু সত্যিই কি এমন কোনো যন্ত্র বানানো সম্ভব নয় যা মানুষের মতোই ভাবতে পারে! এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়েই টুরিং টেস্টের উদ্ভব, ক্যাপচাও একধরনের টুরিং টেস্ট। আর এর সঙ্গেই জড়িয়ে আছে সেই মানুষটির নাম যাকে ছাড়া আধুনিক কম্পিউটিং, কোডিং ও ক্রিপ্টোগ্রাফি ছিল প্রায় অসম্ভব। তিনি হলেন ব্রিটিশ গণিতজ্ঞ, কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক গবেষণার পথিকৃৎ অ্যালান ম্যাথিসন টুরিং।

টুরিংয়ের জন্ম লন্ডনে, ১৯১২ সালের ২৩শে জুন। ছয় বছর বয়সে সেন্ট মাইকেলস এবং ১৪ বছর বয়সে শেরবোর্ন পাবলিক স্কুলে ভর্তি করা হয় তাঁকে। স্কুলের বাঁধাধরা লেখাপড়ায় একেবারেই মন বসত না ছোট্ট অ্যালানের। সিলেবাসের বাইরের বইপত্র, স্বাধীন পড়াশোনাতেই বেশিরভাগ সময় কাটাতেন তিনি। আর সবচেয়ে ভালোবাসতেন অঙ্কের জটিল সব সমস্যা সমাধান করতে। তবে অঙ্কে চৌকস হয়েও স্কুলের শিক্ষক বা ছাত্র কারোর থেকেই কোনো প্রশংসা তিনি পাননি। কারণ মূলত দু’টো, প্রথমত সেইসময় ইতিহাস, সাহিত্য এবং ভাষাচর্চাকেই ‘আসল’ শিক্ষা বলে মনে করা হতো, অন্যদিকে তিনি ছিলেন অত্যন্ত চাপা স্বভাবের, স্কুলে প্রায় কারোর সঙ্গেই কথা বলতেন না এবং নিজস্ব ভাবনার এক আস্তরণ বানিয়ে রেখেছিলেন তাঁর চারপাশে। টুরিং সবার থেকে আলাদা দেখে অন্য ছেলেরা শুধু তাঁর আচরণ নিয়ে হাসাহাসি, ব্যাঙ্গ-বিদ্রুপই নয় নানাভাবে শারীরিক অত্যাচারও চালাত। ঠিক এইসময়েই আবির্ভাব ঘটে ক্রিস্টোফারের। ক্রিস্টোফার মরকম তাঁর থেকে একক্লাস উঁচুতে পড়তেন। একাকী, অবহেলিত, অপমানিত টুরিংকে দেখে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেন ক্রিস্টোফার, এভাবেই সূচনা তাদের বন্ধুত্বের।

ক্রিস্টোফার আসার পর থেকেই টুরিংয়ের জীবন নতুন খাতে বইতে থাকে। তিনি টুরিংকে উচ্চতর গণিতের নানা দিক, সংখ্যাতত্ত্ব, জ্যোতির্বিদ্যা, ক্রিপ্টোগ্রাফির মতো যুগান্তকারী সব বিষয়ের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে থাকেন। আর এসবের মধ্যে দিয়েই ক্রিস্টোফারের প্রভাব ব্যাপকভাবে পড়তে শুরু করে তাঁর ওপর, টুরিং অজান্তেই ভালোবেসে ফেলেন তাঁর একমাত্র বন্ধুটিকে। তবে তাদের এই বন্ধুত্বের মাঝে ছেদ ফেলে ক্রিস্টোফারের অকাল মৃত্যু। টিউবারকিউলোসিসে আক্রান্ত হয়ে তাঁর এই হঠাৎ চলে যাওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি টুরিং। অল্প কিছুদিনেই গড়ে ওঠা জগৎ চুরমার হয়ে যাওয়ার দুঃখ ভুলে থাকতে আরো বেশি করে পড়াশোনা আর কাজের মাঝে নিজেকে ব্যস্ত করে তোলেন তরুণ টুরিং। ১৯৩১ সালের অক্টোবর মাসে কেমব্রিজের কিংস কলেজে ভর্তি হন গণিত নিয়ে উচ্চতর শিক্ষালাভের উদ্দেশ্যে। ‘গাউশিয়ান এরর ফাংশন’ বিষয়ক গবেষণা ও অঙ্কে অসাধারণ দক্ষতার পুরস্কারস্বরূপ মাত্র বাইশ বছর বয়সেই জুটে যায় কিংস কলেজের ফেলোশিপ। ১৯৩৬ সালে লন্ডন ম্যাথামেটিকাল সোসাইটির জার্নালে তাঁর একটি গবেষণামূলক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়। যেখানে তিনি বলেন, কোনো যন্ত্রকে যদি একটি নির্দিষ্ট অ্যালগরিদমে চালানো যায়, তাহলে সেটির পক্ষে সমস্ত গাণিতিক সমস্যার সমাধান করাই সম্ভব। এপ্রসঙ্গেই তিনি ‘ইউনিভার্সাল টুরিং মেশিনে’র কথা বলেন, যার আধুনিক রূপই আজকের কম্পিউটার।

পরের বছর টুরিং চলে আসেন প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং গাণিতিক যুক্তিবিদ্যা নিয়ে শুরু করেন পিএইচ ডি, সঙ্গে পাল্লা দিয়ে চলতে থাকে ক্রিপ্টোলজির চর্চাও। পিএইচ ডি শেষ করে ১৯৩৯ সালে যোগ দেন বাকিংহ্যামশায়ারের ব্লেচলি পার্কে অবস্থিত ব্রিটিশ কোডব্রেকিং সংস্থায়। ইতিমধ্যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে পুরোদমে, হিটলারের নেতৃত্বে জার্মান সেনাবাহিনী একের পর এক আক্রমণ করে চলেছে মহাপ্রতাপে। মিত্রশক্তির দেশগুলির পক্ষে বুঝে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না কখন, কোথায় এবং কীভাবে আক্রমণ করবে জার্মানি। কারণ, জার্মানির হাতে রয়েছে ‘এনিগমা’ নামের একটি যন্ত্র। এই যন্ত্রের মাধ্যমেই যুদ্ধের সমস্ত গোপন কৌশল, তথ্যাবলি আর নির্দেশনা আদানপ্রদান করত জার্মানরা। এনিগমা এমন একটি গোপন বার্তা পাঠানোর যন্ত্র যার সাহায্যে দুর্বোধ্য কোডে লেখা বিভিন্ন নির্দেশ জার্মানরা বেতার তরঙ্গ দিয়ে পাঠাত এবং আরো একটি এনিগমা দিয়েই তা ডিকোড করে সেইমতো আক্রমণ চালাত জার্মান সেনারা। সেরকম কিছু দুর্বোধ্য কোডে লেখা বার্তা মিত্রশক্তি হাতে পেলেও তার অর্থ বুঝে ওঠা ছিল অসম্ভব। এনিগমা মেশিনের প্রায় ১৫৯ কুইন্টিলিয়ন কনফিগারেশন ছিল, এবং জার্মানরা প্রতিদিন রাত বারোটার পর এনিগমার কি-ওয়ার্ড ও কনফিগারেশন পাল্টেও দিত।

আরও পড়ুন
৩০০ পুরুষের হত্যার পিছনে এক নারী, হাঙ্গেরির সুজানার সঙ্গে জড়িয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধও

ফলে তাদের পক্ষে কোনোভাবেই সেই মেসেজগুলি পড়ে ওঠা সম্ভব হচ্ছিল না, অন্যদিকে জার্মানির পরবর্তী পরিকল্পনা জানতে না পারলে শক্ত প্রতিরোধও গড়ে তোলা যাচ্ছিল না। এই অবস্থায় ব্রিটেন এনিগমা কোড ব্রেকিং-এর উদ্দেশ্যে বিশেষ একটি দল গঠন করে ব্লেচলি পার্কে। ক্রিপ্টোগ্রাফি বিশেষজ্ঞ হিসাবে ডাক পড়ে অ্যালান টুরিংয়েরও, দলের অন্যতম দুই সদস্য ছিলেন তিনি এবং হিউ আলেকজান্ডার। প্রথমে দলের নেতৃত্বে আলেকজান্ডার থাকলেও পরে সেই দায়িত্ব পান টুরিং। গোপন বার্তাগুলি বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তিনি উপলব্ধি করলেন এনিগমার মতো শক্তিশালী মেশিনকে কোনো মানুষের পক্ষে হারানো সম্ভব নয়, দরকার একটি উন্নতমানের ইলেকট্রো-মেকানিক্যাল যন্ত্র, যা দ্রুততার সঙ্গে কোডগুলি ভাঙতে পারবে। নিজের টেবিলে বসে সারাদিন একমনে কাজ করে যেতেন টুরিং, এমনকি মাঝে মাঝে খেতে যেতেও ভুলে যেতেন এতটাই নিবিষ্ট থাকতেন কোডব্রেকিং-র কাজে। অবশেষে ১৯৪১-এর জুলাই মাসে তখনো পর্যন্ত প্রযুক্তিগত পৃথিবীর সবচেয়ে শক্তিশালী যন্ত্র ‘এনিগমা’ টুরিংয়ের মেধা এবং পরিশ্রমের কাছে পরাজিত হয়। প্রথমে ফলাফল নিয়ে কিছু সমস্যা থাকলেও অল্প কিছু পরিবর্তনের পরেই একদম সঠিকভাবে এনিগমা’র এনক্রিপটেড বার্তাগুলি ডিকোড করতে শুরু করে টুরিং আর তাঁর দলের বানানো মেশিনটি। নিজের প্রথম ভালবাসাকে মনে রেখে টুরিং মেশিনটির নাম দেন ‘ক্রিস্টোফার’ (মতান্তরে ‘বোম্বা’)।

আরও পড়ুন
দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ম্যাজিক করেই জার্মানদের হারিয়েছিলেন জ্যাস্পার, আজও গোপন সেই কৌশল

সেটি প্রতি মিনিটে দু’টি করে মেসেজ ডিকোড করতে পারত। ওদিকে জার্মানরা ধারণাও করতে পারেনি তাদের এনিগমার জটিল কোড ব্রিটেন ভেঙে ফেলেছে, এবং তা সম্ভব হয়েছে একজন মানুষের দ্বারাই। জার্মানির সমস্ত গোপন পরিকল্পনা এভাবেই মুহূর্তের মধ্যে জেনে যেতে থাকে ব্রিটিশ বাহিনী। টুরিং ব্যক্তিগতভাবে উত্তর অ্যাটলান্টিকের ইউ-বোটগুলি থেকে আসা বার্তা ডিকোড করতে থাকেন, আর একের পর এক যুদ্ধে হারতে শুরু করে জার্মানি। ইতিহাসবিদদের মতে, টুরিংয়ের এই যুগান্তকারী কোডব্রেকিং-এর ফলেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের স্থায়িত্ব প্রায় দুই থেকে চার বছর কমে আসে এবং ১৪ থেকে ২১ মিলিয়ন মানুষ প্রাণে বেঁচে যান। এই অভাবনীয় কৃতিত্বের জন্য ব্রিটিশ সরকার ১৯৪৬ সালে তাঁকে ‘Order of the British Empire’ উপাধি প্রদান করে, রয়্যাল সোসাইটির ফেলো হিসাবেও নির্বাচিত হন তিনি, যদিও যুদ্ধে টুরিং এর অবদানকে সম্পূর্ণরূপে গোপনই রাখা হয়।

ব্লেচলি পার্কে কাজ করার সময় তাঁর জীবনে আরো একটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে। দলের একমাত্র মহিলা সহকর্মী জোয়ান ক্লার্কের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন টুরিং। দুজনেই দেখেন একসঙ্গে কাজ করতে এক অদ্ভুত রকমের আনন্দ পান তাঁরা। টুরিংয়ের সমকামিতার কথা জেনেও জোয়ান তাঁর প্রেমে পড়ে যান, স্বপ্ন দেখেন দুজনে মিলে একটা আলাদা জগৎ গড়ে তুলবেন নিজেদের। তবে তাদের এই সম্পর্ক বাগদান অবধি এগোলেও, পরে টুরিং নিজেই সেখান থেকে সরে আসেন। যুদ্ধ শেষের পরবর্তী পর্যায়ে টুরিং যোগ দেন লন্ডনের ন্যাশানাল ল্যাবে এবং একটি ইলেকট্রনিক কম্পিউটিং মেশিন বানানোর ব্লু-প্রিন্ট তৈরি করেন। যাকে আজকের ডিজিটাল কম্পিউটারের প্রথম রূপ বলা যেতে পারে, মেশিনটি এখনকার মতোই মেমোরিতে তথ্য ও প্রোগ্রাম জমা রাখতে পারত এবং নির্দেশমতো কাজ করতে পারত। এরপর তিনি চলে যান ম্যানচেস্টার ইউনিভার্সিটিতে। যন্ত্রের চিন্তাশক্তি নিয়ে কাজ শুরু করেন সেখানে এবং ১৯৫০ সালে ‘Computing Machinery & Intelligence’ নামে একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। যেটিকে আধুনিক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বিষয়ক আলোচনার মূল ভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। এই প্রসঙ্গেই তিনি প্রথম টুরিং টেস্টের কথাও উল্লেখ করেন।

আরও পড়ুন
আগ্নেয়াস্ত্রের সঙ্গে জড়িয়ে প্রেয়সীও, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী এই ‘সুইটহার্ট গ্রিপস’

গবেষণার কাজ তখন চলছে পুরোদস্তুর, হঠাৎ সমস্যা তৈরি হয় ইউনিভার্সিটির টেকনিশিয়ান আর্নল্ড ম্যুরের সঙ্গে টুরিংয়ের সমকামী সম্পর্ক নিয়ে। বিষয়টি ১৯৫২ সালে প্রকাশ্যে এলে তিনি সেই অভিযোগ স্বীকার করে নেন, এমনকি আত্মপক্ষ সমর্থনে কোনো বিবৃতিও দেন না। ১৯৬৭ পর্যন্ত ব্রিটেনে সমকামিতা ছিল অবৈধ, ফলে তখনকার আইন অনুযায়ী টুরিংকে গ্রেফতার করা হয়। তবে জেলে থাকা নিয়ে প্রচণ্ড আপত্তি ছিল তাঁর, কারণ বাইরে থেকে নিজের অসমাপ্ত কাজগুলি দ্রুত শেষ করতে চাইছিলেন তিনি। বিচারে জেলের বদলে নিয়মিত ইস্ট্রোজেন হরমোন সেবন করাকেই বেছে নেন টুরিং। এই হরমোনাল থেরাপি চলার ফলে ক্রমশ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়তে থাকেন তিনি, সরকারের কাজ থেকেও বাদ দেওয়া হয় তাঁকে, একা সারাদিন নিজের অ্যাপার্টমেন্টে গবেষণার কাজ নিয়েই সময় কাটাতে শুরু করেন। ধীরে ধীরে হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ছিলেন তিনি। শেষে ১৯৫৪ সালের ৮ জুন বিছানায় তাঁকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ময়নাতদন্তে জানা যায় তীব্রমাত্রায় পটাশিয়াম সায়ানাইড সেবনের ফলেই মৃত্যু হয়েছে টুরিংয়ের। তিনি মারা যাওয়ার বহুদিন পরেও সাধারণ জনগণের কোনো ধারণাই ছিলনা যুদ্ধের ধ্বংসলীলা থামাতে কী অসামান্য ভূমিকা নিয়েছিলেন মহান এই বিজ্ঞানসাধক।

টুরিংয়ের জীবন ও তাঁর সাফল্যের কথা ‘টপ সিক্রেট’ হিসাবেই সরকারি ফাইলবন্দি ছিল দীর্ঘ দিন। কেবলমাত্র সমকামী হওয়ার অপরাধে যে প্রাপ্য সম্মান থেকে তাঁকে বঞ্চিত হতে হয়েছিল, তা ফিরিয়ে দেওয়া হয় মৃত্যুর পঞ্চাশ বছর পর। ২০০৯ সালে ব্রিটিশ সরকারের পক্ষে প্রধানমন্ত্রী গর্ডন ব্রাউন টুরিংকে ক্ষতিকর চিকিৎসায় বাধ্য করার জন্য সরকারিভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করেন এবং ২০১৩ সালে ব্রিটেনের রানি নিজে মরণোত্তর ক্ষমার দলিলে স্বাক্ষর করেন, সঙ্গেই মুক্ত করা হয় সমস্ত গোপন নথিও। ফলে তথ্য প্রযুক্তির জগৎে টুরিংয়ের অনস্বীকার্য অবদান সকলের সামনে আসে। প্রমাণিত হয় তাঁর সময়ের মানুষদের থেকে তিনি ছিলেন অনেক ধাপ এগিয়ে। কম্পিউটার সায়েন্সের নোবেল পুরস্কারটিও টুরিংয়ের নামেই রাখা হয়েছে ‘দ্য টুরিং অ্যাওয়ার্ড’। শুধু তাই-ই নয়, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সর্বোত্তম পরীক্ষাটির নামকরণও তাঁর নামেই, 'টুরিং টেস্ট'। তবে তাঁর কর্মকাণ্ড এবং অকালমৃত্যু আমাদের আজও একটাই প্রশ্নের সামনে দাঁড় করায়, এক্স-ওয়াই ক্রোমোজমের এই বিন্যাসের বাইরে গিয়ে কবে আমরা চিনতে শিখব আমাদের চারপাশকে!

আরও পড়ুন
জাপানি বোমা থেকে আমেরিকান সেনার দখলদারি – দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সাক্ষী কলকাতা বন্দরও

তথ্যঋণ -
১। অ্যালান টুরিং: দ্য এনিগমা - অ্যান্ড্রু হজস্‌
২। দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমস অবিচুয়ারিস্,
৩। রোর মিডিয়া

Powered by Froala Editor

Latest News See More