বড়োদিনের সকাল থেকেই ঘরে ঘরে ব্যস্ততা। বিশেষ করে ইউরোপের দেশগুলিতে তো বটেই। তবে অ্যান্ডি পার্কের (Andy Park) কাছে এই ব্যস্ততা আলাদা কিছু নয়। এমন তো হয়েই আসছে গত ২৮ বছর ধর। না না, বছরে একটা দিন নয়। বরং প্রতিটা দিনই তাঁর কাছে বড়োদিন। বড়োদিনের গ্রিটিংস কার্ড থেকে শুরু করে ব্রেকফাস্ট বা ডিনার, সারা বছরই এইসব নিয়ে থাকেন অ্যান্ডি, থুরি, মিস্টার ক্রিসমাস (Mr. Christmas)। এই নামটা তিনি নিজেই নিজেকে দিয়েছেন।
ইংল্যান্ডের উইল্টশায়ারের মেলকশাম অঞ্চলে বাস মিস্টার ক্রিসমাসের। পেশায় তিনি একজন ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। প্রথমদিকে বাকিদের মতোই তিনিও বছরের একটি দিনে বড়োদিনের উৎসবে মেতে উঠতেন। তবে ১৯৯৩ সালের জুলাই মাসে হঠাৎই একদিন কাজে বেরনোর আগে ইচ্ছা হয়, সান্তাক্লজের পোশাকটা পরেই বেরোবেন তিনি। জুলাই মাসে তাঁকে সান্তা সেজে ঘুরতে দেখে অনেকেই অবাক হয়েছিলেন। কচিকাঁচারা মজাও পেয়েছিলেন। আর সেই থেকেই শুরু। এখন তিনি শুধুই সান্তাক্লজের পোশাকই পরেন।
শুধুই পোশাক নয়, প্রতিদিন সকালে উঠে তিনি বড়োদিনের চিঠিও লেখেন। অবশ্য অন্য কাউকে চিঠি পাঠানোর নেই। তাই নিজেই নিজের ডাকবাক্সে রেখে আসেন চিঠি। কিছুক্ষণ পরে নিজেই সেই চিঠি খুলে পড়তে থাকেন। সঙ্গে প্লেট সাজিয়ে টার্কি স্যান্ডউইচ বা মাইন্স পাই নিয়ে বসেন। ব্রেকফাস্ট শেষ হলে কাজে বেরিয়ে যান। ফিরে এসে শুরু হয় ডিনারের প্রস্তুতি। গোটা ঘর তখন ক্রিসমাসের আলোয় সাজিয়ে রাখেন। আর মিউজিক সিস্টেমে বাজে ক্রিসমাস ক্যারোল।
২০০৬ সালে মিস্টার ক্রিসমাসের কথা প্রথম জানাজানি হয়। তারপর থেকেই তাঁকে নিয়ে নানা সময়ে আলোচনা হয়েছে। তাঁকে নিয়ে তৈরি হয়েছে একাধিক তথ্যচিত্রও। প্রচারের আলোয় থাকার জন্য যে তিনি এমনটা করছেন না, সে-কথা নানা সময়ে বলেছেন অ্যান্ডি পার্ক। আসলে ক্রিসমাসের আয়োজন না থাকলে তাঁর কোনোকিছুই ভালো লাগে না। তবে কতদিন এই আয়োজন চালিয়ে যেতে পারবেন, জানেন না তিনি। বছর পাঁচেক আগে ইঞ্জিনিয়ারিং-এর পেশা থেকে অবসর নিয়েছেন। রোজগারও এখন বেশ কম। এদিকে সারা বছর উৎসবের আয়োজন তো কম খরচের বিষয় নয়। তবে এখনও পর্যন্ত নিজের শখ বাঁচিয়ে রেখেছেন মিস্টার ক্রিসমাস।
আরও পড়ুন
বরফ দিয়েই তৈরি দুর্গ, রেস্টুরেন্ট – বিচিত্র বড়োদিন পালন চিনের হার্বিন শহরে
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
নতুন বই পড়েই কাটে ক্রিসমাস, আইসল্যান্ডের বইপ্রেমীদের বৃহত্তম উৎসব বড়োদিনেই