দুর্ঘটনায় পা হারালেও থামেনি ক্রিকেট, বঙ্গসন্তানের নেতৃত্বেই বাইশ গজে লড়াই ভারতের

বাইশ গজের মাঠে নীল জার্সি মানেই রক্তের স্রোত বাড়তে থাকে ভারতীয় দর্শকের। গ্যালারি জুড়ে শুরু হয় হাততালি। “সমস্ত ভারতীয় ক্রিকেটারের জীবনেই স্বপ্ন থাকে, একদিন এই নীল জার্সি গায়ে উঠবে।” একটি নিজস্ব ভিডিওতে এমনটাই বলেছেন শুভ্র জোয়ারদার। তাঁর জীবনেও স্বপ্ন ছিল। আর সেই স্বপ্ন সফলও হয়েছে। তবে এই সাফল্যের পথটা খুব সহজ ছিল না।

শুভ্র জোয়ারদারের নাম হয়তো অনেকের কাছেই অচেনা ঠেকতে পারে। তবে বিগত ৪ বছর ধরে ভারতের জাতীয় দলকে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তবে সেই দলের প্রত্যেকেই শারীরিক প্রতিবন্ধী। অবশ্য তাঁদের কেউই শুভ্র জোয়ারদারের মতো নন। কারোর প্রতিবন্ধকতা ৩০ শতাংশ, কারোর ৪০ শতাংশ। শুভ্র জোয়ারদারের প্রতিবন্ধকতা ৯০ শতাংশ। তবে জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী নন তিনি। ক্রিকেট শিক্ষা যখন প্রায় শেষ হয়ে এসেছে, তখন একটি গাড়ি দুর্ঘটনায় হারালেন ডানদিকের পা।

তখন থেকেই ক্রিকেট খেলার স্বপ্ন বেঙে যেতে বসেছিল। কেউ বিশ্বাস করতেন না যে শুভ্র জোয়ারদার আবার বাইশ গজে ফিরে আসতে পারবেন। “কিন্তু জীবনে স্বপ্ন থাকলে সেটা ভেঙে ফেলা সহজ নয়।” বলছেন তিনি। অতএব কৃত্রিম পা নিয়েই আবার ফিরে আসা। প্রথমে যোগ দিলেন বাংলার ক্রিকেট বোর্ডে। তারপর ডাক এল জাতীয় দল থেকেও। প্রথম টুর্নামেন্ট বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তাতেই ম্যান অফ দ্য সিরিজ হলেন শুভ্র জোয়ারদার। আর তার কিছুদিনের মধ্যেই দলের অধিনায়কের দায়িত্বও পেলেন তিনি।

শুধুই বাইস গজের মধ্যে নয়, আর বাইরেও একজন প্রতীক হয়ে উঠেছেন শুভ্র জোয়ারদার। বছরখানেক আগে ‘হ্যালো কলকাতা’ স্টাইল আইকন হয়েছেন তিনিই। দাদাগিরির মঞ্চেও নজর কেড়েছেন তিনি। যে মানুষটা একদিন সভ্য সমাজ থেকে নিজেকে লুকিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন, তিনিই আবার ফিরে এলেন মাথা উঁচু করে। বাংলার এই ক্রিকেটারের জীবন সত্যিই অনন্য।

আরও পড়ুন
ক্রিকেটের বিতর্কিত ‘মানকাডিং’ তাঁর নামেই; সাদা চামড়ার রাজনীতির শিকার বিনু মানকড়?

Powered by Froala Editor

আরও পড়ুন
এদেশের প্রথম দলিত ক্রিকেটার তিনি, ‘লগান’ সিনেমার কাছরা চরিত্রটির অনুপ্রেরণা