ছিলেন হাসপাতালের এক সামান্য সুরক্ষাকর্মী। ব্যাটল রজ জেনারেল হাসপাতালের গেটেই তাঁর দাঁড়িয়ে কেটে গেছে দীর্ঘ পাঁচ বছর। প্রবেশ ও প্রস্থানকারীদের সমস্ত তথ্য নথিভুক্ত করা এবং একজন দক্ষ সিকিওরিটি গার্ডের দায়িত্ব পালনই ছিল তাঁর কাজ। আজ করোনাভাইরাসের এই মহামারীতে প্রথম শ্রেণীর যোদ্ধা তিনি। লড়াই যাচ্ছেন সাদা অ্যাপ্রন পরে সেই একই হাসপাতাল থেকে। ডাঃ রাসেল লেডেটের অভিযান এমনই অকল্পনীয়।
আমেরিকার নেভিতে কর্মরত লেডেটের সারাদিন হাসপাতালের গেটে কাটলেও মন পড়ে থাকত হাসপাতালের অন্দরমহলে। বিভিন্ন চিকিৎসকদের কাছে বার বার অনুরোধও করেছিলেন চিকিৎসা বিজ্ঞানের বিষয়ে, ওষুধের বিষয়ে সামান্যতম ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে। তবে সাড়া দেননি কেউই। এই কথা কানাঘুষো শুনে শেষ অবধি এগিয়ে এসেছিলেন ওই হাসপাতালেরই প্রধান সার্জেন্ট প্যাট্রিক গ্রিফেনস্টাইন। তাঁর হাত ধরেই শুরু হয় অসম্ভবের দিকে লেডেটের যাত্রা।
লেডেট প্রাথমিকভাবে তাঁর থেকেই শিখেছিলেন চিকিৎসাবিদ্যার বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক নাম। তারপর শুরু হল নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ে অঙ্কোলজি নিয়ে পড়াশোনা। হল পিএইচডিও। সাংসারিক অবস্থা থেকেও বেরিয়ে চাকরি ছেড়ে পড়াশোনায় ফেরার যে সাহস তিনি দেখিয়েছেন তা সত্যিই ক’জন দেখাতে পারেন? অনুপ্রেরণার এক জীবন্ত উদাহরণই এখন লেডেট। বর্তমানে লেডেট ফিরেছেন তাঁর পুরনো হাসপাতালেই। তবে আর গেটে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় না তাঁকে। বরং সামনে থেকেই লড়াই করে যেতে হয় মারণ ভাইরাসের সঙ্গে। সঙ্গ দেয় সাদা অ্যাপ্রন, স্টেথোস্কোপ।
মহামারীর বিরুদ্ধে একশো শতাংশ দিয়েই কাজ করে চলেছেন লেডেট। জয় যে মিলবেই তাতে নিশ্চিত তিনি। এতটুকুও চিন্তিত নন বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে। তবে তাঁর আশঙ্কার বিষয়ই হল বর্ণবৈষম্যতা। কৃষ্ণাঙ্গ হওয়ার দরুন বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন যে হতেই হয়েছিল তাঁকে। পরবর্তী প্রজন্মের ছাত্ররা যাতে বৈষম্যমুক্ত সমাজব্যবস্থা পেতে পারে, সেটাই লক্ষ্য নিয়েই এখন টিউলিন মেডিক্যাল স্কুলে পড়িয়ে চলেছেন লেডেট। তবে শুনলেই অবাক লাগবে, এর পাশাপাশি সমানভাবেই তিনি চালিয়ে যাচ্ছেন এমবিএ-র পাঠক্রমও। প্রকৃত অর্থেই একজন বিস্ময় পুরুষ এই ব্যক্তি...
আরও পড়ুন
দার্জিলিং-এ শিক্ষকতা করতেন বেনেডিক্ট কাম্বারব্যাচ; পাহাড়ের বুকেই নতুন করে চেনা জীবনকে?
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
ভগৎ সিং-এর সঙ্গী হয়ে পার্লামেন্ট হাউসে বোমাবর্ষণ, বটুকেশ্বর দত্ত-র শেষ জীবন কেটেছে চরম অর্থকষ্টে