আগস্ট মাস থেকেই অবিরাম জ্বলে চলেছে ক্যালিফোর্নিয়া উপকূলের দাবানল। ক্রমশ তার পরিধিও বেড়ে চলেছে। ক্যালিফোর্নিয়া থেকে সেই আগুন ছড়িয়ে পড়েছে ওরেগন এবং ওয়াশিংটন স্টেটেও। আর যেখানে আগুন এখনও পৌঁছয়নি, সেখানেও মানুষ সন্ত্রস্ত অবস্থায় বসে আছেন, যেকোনো মুহূর্তে সরকারের নির্দেশ আসতে পারে এলাকা ফাঁকা করে দেওয়ার।
এইদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে অদ্ভুত এক দৃশ্য দেখলাম আমরা। ধীরে ধীরে যেন সারা আকাশটা কমলা রং হয়ে গেল। আমি থাকি ইস্ট বে এরিয়ার ডাবলিন শহরে। এখানে প্রায় বছর ১৫-১৬ আছি। যাঁরা ৩০-৩৫ বছর আছেন তাঁরাও কেউ এমন দৃশ্য কোনোদিন দেখেননি।
আরও পড়ুন
দাবানলের ছাই ঢেকেছে চারদিক, ক্যালিফোর্নিয়ার আকাশের রং এখন লাল
ওয়াইল্ড ফায়ারের ফলে ছাইগুলো আকাশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। একে বলা হচ্ছে অ্যাশ রেইন। এর ফলে বাতাসে একটা স্তর তৈরি হয়ে গিয়েছে। তাতে সূর্যালোক প্রতিসরিত হয়ে এমন হচ্ছে। স্বাভাবিক সূর্যালোক এসে পৌঁছতে পারছে না।
আরও পড়ুন
মাত্র ১ বছরেই ভস্মীভূত ক্যালিফোর্নিয়ার ২ মিলিয়ন একর বনভূমি
আরও পড়ুন
দাবানলের গ্রাসে ক্যালিফোর্নিয়ার বিস্তীর্ণ বনভূমি, ছবি প্রকাশ নাসার
কয়েক মাস আগেও যেখানে অসংখ্য মানুষ বাস করতেন, সেখানে এখন শুধু কালো ছাই আর ধোঁয়া। শুধু ক্যালিফোর্নিয়াতেই ৬৮ হাজার মানুষকে বাসস্থান ছেড়ে যেতে হয়েছে। ওরেগন স্টেটে সংখ্যাটা ৫০ হাজার। দুটি স্টেটেই এখনও অন্তত ৫ লক্ষ মানুষ ঘর ছাড়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে বসে আছেন।
সব মিলিয়ে পরিবেশ যে বদলাচ্ছে সেটা বোঝাই যাচ্ছে। একদিকে ভূমিকম্পের ঘটনা ক্রমশ বেড়ে চলেছে। তার উপর এই দাবানল। শোনা যাচ্ছে নাকি প্রায় দেড়শ বছর আগে সান ফ্রান্সিসকো শহরের আকাশে এমন দৃশ্য দেখা গিয়েছিল। তবে ক্যালিফোর্নিয়ার আকাশে এমন দৃশ্য দেশে সকলেই স্তম্ভিত। ভয়ও পেয়ে গিয়েছিলেন অনেকে। আর এই ঘটনা ক্রমশ বাড়তেও থাকবে। কারণ দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসার কোনো সম্ভবনাই এখনও দেখা যাচ্ছে না।
এই আগুনও ঠিকই নিভবে একদিন। আর তখন পরিবেশ দূষণের বিরুদ্ধে হাতে হাত লাগিয়ে কাজ করতে হবে সবাইকে। যে দুর্দশার মধ্যে দিয়ে আমাদের যেতে হচ্ছে, পরবর্তী প্রজন্মকে যেন এর ফল ভোগ করতে না হয়।
Powered by Froala Editor