বাংলাদেশের বরিশালের কাছে বাবুগঞ্জ উপজেলার মিরগঞ্জ নদী। তার বুকের উপর ভেসে বেড়াচ্ছে নীল রঙের একটি ছোটো জাহাজ। দেখতে আর পাঁচটা যাত্রী পরিবাহী জাহাজের মতোই। কিন্তু তার ডেকে পা রাখলেই অবাক হতে হয়। জাহাজের প্রতিটা কেবিন জুড়ে সাজানো আছে সাদা চাদর পাতা বিছানা। ঠিক হাসপাতালে যেমন থাকে। আসলে এটি সত্যিই একটি হাসপাতাল। নদীর বুকে ভাসমান একটি হাসপাতাল।
১৯৯৩ সালে পথচলা শুরু করে ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন। উদ্দেশ্য শহর এবং গ্রামাঞ্চলের দুঃস্থ মানুষদের কাছে সহজে চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। সেই সূত্রেই এই অভিনব পরিকল্পনা মাথায় আসে উদ্যোক্তাদের। ১৯৯৯ সালে এই ভাসমান হাসপাতাল তৈরি হয়। নাম, ‘ইম্প্যাক্ট জীবনতরী হাসপাতাল’। পরিকাঠামো খুবই দুর্বল। সাধারণ জ্বর-সর্দি এবং চোখ কানের চিকিৎসা ছাড়া বিশেষ কিছুই হয় না। কিছু ক্ষেত্রে রেটিনা বা কর্নিয়ার সহজ অস্ত্রপ্রচার হয়। কিন্তু সেটুকু সামর্থ্যও নেই অনেকের। তাঁদের কাছেই পৌঁছে যায় ইম্প্যাক্ট জীবনোত্রী।
প্রতিদিন ১০০-১৫০ রোগী ভিড় করেন এই ভাসমান হাসপাতালে। চিকিৎসার খরচ একেবারেই সামান্য। কিন্তু সেটুকুও দেওয়ার ক্ষমতা থাকে না অনেকের। তবে এখান থেকে চিকিৎসা না পেয়ে ফিরে যান না কেউই। চারজন মাত্র চিকিৎসক। কিন্তু তাঁরাই সারাদিন পরিশ্রম করেন দুঃস্থ মানুষদের উপযুক্ত পরিষেবা পৌঁছে দিতে। আছে চারটি স্পিডবোটও। এগুলি রোগীদের পরিবহণের কাজ করে। আর প্রায় প্রতি বছর বন্যায় যখন বাংলাদেশ ভেসে যায়, তখন সত্যিই ব্যস্ততার অন্ত থাকে না। চিকিৎসাক্ষেত্রে বিরাট বিপ্লব না হোক, মানুষের জীবনে সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে চলেছে ‘ইম্প্যাক্ট ফাউন্ডেশন’।
তথ্যসূত্র - A floating hospital impacting lives, Sushanta Ghosh, The Daily Star
আরও পড়ুন
ধর্ষণের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড, নতুন আইন জারি বাংলাদেশে
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
সংবিধান থেকে বাদ পড়ুক ‘রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম’, ধর্মনিরপেক্ষ বাংলাদেশ গঠনের উদ্যোগ