মার্চের মাঝামাঝি ইতালির অবস্থা হয়ে উঠেছিল ভয়ঙ্কর। ইতালিতে প্রতিদিন গড় মৃত্যুর সংখ্যা তখন প্রায় ৭০০-৮০০। চারিদিকে শ্মশানের স্তব্ধতা। আক্রান্তের সংখ্যা পৌঁছে ছিল ২ লক্ষ ৩৮ হাজারে। তবে সেই কঠিন মহামারীর পরিস্থিতিকে কাটিয়ে উঠতে চিকিৎসকদের লড়াই সফল হয়েছিল সেখানে। এমনই এক করোনাযোদ্ধা ও গবেষক সম্প্রতি জানালেন চাঞ্চল্যকর এক তথ্য। তাঁর মতে করোনা প্রতিরোধে টিকার আর প্রয়োজন নেই কোনো।
ইতালির সান্তা মারিয়া মিসারিকোর্ডিয়া মেডিক্যাল কলেজের সংক্রমণ বিভাগের চিকিৎসক এবং গবেষক মাত্তের বাসিত্তিও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছিলেন করোনার আবহে। সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই চিকিৎসার পাশাপাশি বিভিন্ন গবেষণায় নিযুক্ত হয়েছিলেন তিনি। সংগ্রহ করেছিলেন আক্রান্তদের তথ্য। সংগৃহীত সেই তথ্যের ভিত্তিতেই তিনি সম্প্রতি জানালেন, ধীরে ধীরে ক্ষমতা হারাচ্ছে করোনাভাইরাস। কমছে তার তীব্রতা। ফলে এখন কোনো টিকা আবিষ্কার না হলেও, করোনাভাইরাসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে অসুবিধা হবে না।
ক্রিটিকাল কেয়ার বিভাগের এই বিশেষজ্ঞের দাবি, সংক্রমণের শুরুর দিকে মৃত্যুর হার ছিল অনেক বেশি। যারা ইন্টেনসিভ কেয়ার ভর্তি হচ্ছিলেন তাঁদের অনেকেরই প্রয়োজন পড়ছিল ভেন্টিলেশনের। অনেকে তার পরেও জারি রাখতে পারছিলেন না জীবনের লড়াই। সবথেকে বেশি সংকটজনক পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছিলেন প্রবীণরা। তবে এখন তার পরিবর্তে মানুষ সেরে উঠছেন অনেক বেশি। প্রাণ ফিরে পাচ্ছেন ৮০-৯০ বছরের বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও। মৃত্যুর হার কমার পাশাপাশি, শ্বাসতন্ত্রের ওপর ভাইরাসের প্রভাব অনেকটাই কমে এসেছে বলেই তাঁর দাবি। তাঁর মতে মিউটেশনের কারণে পরিবর্তন হয়েছে ভাইরাসের জিনগত চরিত্র, কমেছে ভাইরাসের ক্ষমতা। ফলে মানুষের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা এখন লড়াই করতে পারছে করোনার সঙ্গে।
তবে বাসিত্তি’র এই তত্ত্বের সঙ্গে একমত হতে পারছেন না অনেকেই। ইতালি এখন সম্পূর্ণরূপে করোনামুক্ত। তা সত্ত্বেও সতর্কতা নিতে পিছপা হচ্ছে না সরকার। মাস্ক, সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং এবং ঘন ঘন হাত ধোয়ার জন্য বার বার সচেতন করা হচ্ছে নাগরিকদের। বন্ধ করা হয়েছে বড় জনসমাবেশও। তার কারণেই করোনা একেবারে বিদায় নিয়েছে ইতালি থেকে, হানা দেয়নি দ্বিতীয় তরঙ্গের আঘাত। এমনটাই মনে করছেন অনেকে। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর তত্ত্ব সত্যি হলে ব্রাজিল, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বা ভারতের মত দেশগুলিতে পরিস্থিতি আয়ত্তে আসছে না কেন, তার দিকেই। তাঁর বিরোধিতা করে অনেকেই বলছেন এত সহজে পৃথিবী থেকে বিদায় নেবে না করোনা...
আরও পড়ুন
গ্রামের ৮০ শতাংশ মানুষ আক্রান্ত করোনায়, একক লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন নার্স
Powered by Froala Editor
আরও পড়ুন
করোনায় আক্রান্ত বিশ্বের এক নম্বর টেনিস খেলোয়াড় নোভাক জকোভিচ