তারায়-তারায় লুকোচুরি, ‘থুবান’ দেখেই দিক নির্ণয় করত প্রাচীন মিশরীয়রা

পৃথিবীর সপ্তম আশ্চর্যের অন্যতম একটি পিরামিড, এ-কথা সকলেই জানেন। প্রাচীন যুগে মিশরের মানুষ কীভাবে পিরামিড বানিয়েছিল, তা নিয়ে বিস্তর গবেষণা চলছে আজও। কিন্তু কেমন ছিল তাদের দিক নির্ণয়ের পদ্ধতি? দীর্ঘ গবেষণার পর মিলল সেই উত্তর। প্রাচীন যুগে মিশরীয়রা থুবান নামের একটি নক্ষত্রকে উত্তরের তারা (নর্থ স্টার) নামে জানত বলে ধারণা বিজ্ঞানীদের। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয়, এটি একটিমাত্র তারা নয়, দুটি তারার সমন্বয়ে গঠিত।

নাসার বিজ্ঞানীদের ধারণা, থুবানের দিক লক্ষ্য করেই ৪৭০০ বছর আগে মিশরীয়রা পিরামিড বানাত। আর সেই তারা এখন পোলারিস নামেই পরিচিত বিজ্ঞানমহলে। ট্রান্সিটিং এক্সোপ্ল্যানেট সার্ভে স্যাটেলাইট টেলিস্কোপের সাহায্যে, বিজ্ঞানীরা দীর্ঘদিন ধরে এই তারাটি নিয়ে গবেষণা করছেন। আর তাতেই উঠে এসেছে এমন চমকপ্রদ বিষয়।

তাঁদের ধারণা, থুবানের দুটো তারার মধ্যে বড় তারাটি সূর্যের চেয়ে চার গুণ বড় এবং সত্তর শতাংশ গরম। অথচ এর অন্য তারাটি আকারে বড় তারাটির অর্ধেক এবং পাঁচগুণ দুর্বল। দুটো তারা একে অপরকে কেন্দ্র করে ৩৮ মিলিয়ন মাইল দূরত্বে পরস্পর ঘুরে চলে। অপরটিকে পাক খেয়ে ঘুরে আসতে একটি তারার সময় লাগে ৫১ দিন। এর ফলে একটি তারার ছায়ায় অপরটি ঢেকে যায়, যা বিজ্ঞানীদের অবাক করেছে। সূর্য যেমন ঢাকা পড়ে যায় গ্রহণে, তেমনই থুবানের একটি তারা অপরটিকে অদৃশ্য করে দেয়।

অত্যন্ত উজ্জ্বল হওয়া সত্ত্বেও, এই তারাটির সম্পর্কে এর আগে বিশেষ কিছু তথ্য আবিষ্কার করা সম্ভব হয়নি। তা নিয়ে কেউ কেউ বিস্ময়ও প্রকাশ করেছেন। তবে কি এই আবিষ্কার ইতিহাসকে আরও কিছুটা উসকে দেবে নতুন করে ভাবার জন্য? উত্তর অবশ্য সময়ের হাতে।