এই পৃথিবীতে আছে কত দেশ। কেউ নতুন, কেউ পুরনো। কেউ ছোটো, কেউ বড়ো। কিন্তু যদি প্রশ্ন ওঠে, সবথেকে কম সময়ের জন্য টিকে ছিল কোন দেশ? এমন প্রশ্ন শুনতে একটু অবাক লাগতে পারে। কিন্তু সত্যিই এই পৃথিবীতে এমন দেশ ছিল, যার অস্তিত্ব ছিল মাত্র ৬ ঘণ্টা।
তবে দেশ না বলে এখানে রাষ্ট্র বলাই ভালো। কারণ দেশের মানুষ, দেশের মাটি সবই টিকে ছিল। ৬ ঘণ্টার মধ্যে শেষ হল শুধু নবগঠিত রাষ্ট্র ব্যবস্থা। এই কাহিনী আজ থেকে ১০০ বছরেরও বেশি পুরনো। রাশিয়ায় তখন বিপ্লবী জনতা স্বৈরাচারী জারের হাত থেকে ক্ষমতা দখল করেছে। কিন্তু দেশের ভবিষ্যত কী হবে? এটাই তখন প্রত্যেকের চিন্তার বিষয়। ঠিক এমন পরিস্থিতিতে রাশিয়ার সাধারণ মানুষের ভোটের ভিত্তিতেই তৈরি হয়েছিল একটি কমিটি। আর সেই কমিটির সিদ্ধান্ত মেনেই ১৯১৮ সালের ১৯ জানুয়ারি তৈরি হল, রাশিয়ান স্যোসালিস্ট ফেডারেটিভ সোভিয়েত রিপাবলিক। নতুন রাষ্ট্রের সংবিধানে স্থির করা হয় রাশিয়াকে একটি গণতান্ত্রিক যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র হিসাবে গড়ে তোলা হবে।
তবে এই রাষ্ট্র বিখ্যাত সোভিয়েত রাশিয়া নয়। বরং বিপ্লবের মূল শক্তি রুশ বলশেভিক পার্টি এই সরকারে যোগ দেয়নি। এবং সেই কিংবদন্তি নেতা লেনিনের হস্তক্ষেপেই সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ এই সরকারের পতন ঘটে। দুপুর নাগাদ তৈরি সরকার সেদিনই সন্ধ্যা ৬টায় শেষ হয়ে গেল। বলা হয়, পৃথিবীর ইতিহাসে সবথেকে ক্ষণস্থায়ী রাষ্ট্র এই রুশ স্যোসালিস্ট ফেডারেটিভ সোভিয়েত রিপাবলিক।
তবে স্বীকৃত রাষ্ট্রব্যবস্থার নিরিখে এর স্থায়িত্ব সবথেকে কম হলেও, এর থেকেও ক্ষণস্থায়ী রাষ্ট্রের উদাহরণ আছে বৈকি। এই তো বছর তিনেক আগে, ২০১৭ সালে কাতালুনিয়ার মানুষ গণভোটের ভিত্তিতে স্পেন থেকে স্বাধীনতার সিদ্ধান্ত নেয়। আর সেই আন্দোলনের নেতা কার্লেস পিগডেমন্ট যখন এই স্বাধীনতার কথা ঘোষণা করলেন, তখন সমবেত জনতা উত্তেজনায় ফেটে পড়েছিল। কিন্তু ঠিক তার ৮ সেকেন্ডের মাথায় কার্লেস জানালেন, স্পেন সরকারের সঙ্গে মধ্যস্থতার রাস্তা খোলা রাখতে হবে। অর্থাৎ এই স্বাধীন দেশের অস্তিত্ব থাকল মাত্র ৮ সেকেন্ড। এমন সব দেশের কাহিনি কি কোথাও রেকর্ড বুকে নাম তুলতে পারে?
আরও পড়ুন
দেশের মোড়ল-কে দেখতে আসা, ‘সাধারণ’ লেনিনকে চিনতে পারল না চাষিরা
Powered by Froala Editor