শরীর ভেঙেছে, তবু হাজিরা দিতেই হচ্ছে উৎসবে

বয়স সত্তর বছর। কিন্তু রেহাই নেই তাতেও। শ্রীলঙ্কার ক্যান্ডিতে চলতি আগস্টে পেরাহেরা উৎসবের জন্য যে ৬০টি হাতি নির্বাচিত করা হয়েছে, তাদেরই একজন বৃদ্ধা টিক্কিরি। টানা দশদিন ধরে, রোজ কিলোমিটারের পর কিলোমিটার হাঁটতে হচ্ছে তাকে, সন্ধে থেকে গভীর রাত পর্যন্ত।

হাঁটার উদ্দেশ্য অবশ্য ধর্মীয় কারণে। পেরাহেরা উৎসবে যাঁরা অংশগ্রহণ করেন, সেই বৌদ্ধদের বিশ্বাস অনুযায়ী, হাতির দর্শন পাওয়া তাঁদের কাছে পুণ্যের। সে-কারণে ষাটটি হাতিকে সার বেঁধে হাঁটানো হচ্ছে উৎসবে। সেই দলেরই রুগ্ন হাতি টিক্কিরির প্রতি আলাদা নজর নেই কারও। তার অশক্ত পদক্ষেপ, থমকে যাওয়া, পাঁজর বের-করা শরীর চোখেই পড়ছে না কারোর। কারণ, ঝলমলে পোশাকে ঢাকা তার শরীর।

এভাবে দশদিন ধরে হেঁটে যাওয়াই টিক্কিরির রুটিন। চিৎকার, বাজি, ধোঁয়া সবকিছুর মধ্যে দিয়েই চলতে হচ্ছে। বাইরের লোক প্রণাম করছেন তাকে দেখে। ‘পুণ্য অর্জন’ করছেন। কিন্তু উৎসবের পরিবেশে টিক্কিরির দিকে আলাদা নজর নেই কারোর। ধর্মীয় বিশ্বাস যার যার নিজের। কিন্তু, ধর্মের থেকেও বড় একটা প্রাণ। অশক্ত টিক্কিরি-র প্রতি কি একটু সহানুভূতি দেখানো যেত না? ধর্মীয় আচার কি মানবিকতার থেকেও বড়? প্রশ্ন রইলই।

ছবিঋণ - ফেসবুক